অবশেষে ধান চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু

অবশেষে জামালপুরে সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার কেবল জেলা সদরের একটি খাদ্য সংরক্ষণাগার এই কার্যক্রম শুরু করেছে। সদরের সবচেয়ে বড় খাদ্য সংরক্ষণাগারে এবং বাকি ছয়টি উপজেলায় কবে শুরু হবে, তা সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না কর্মকর্তারা।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলায় এবার ৩৩ হাজার ১০৪ মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল, ৩ হাজার ৪৫১ মেট্রিক টন আতপ চাল ও ৩ হাজার ৮৮৭ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের কথা রয়েছে।

গত ২৫ এপ্রিল থেকে এই অভিযান শুরুর কথা ছিল। কিন্তু জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় এই অভিযান যথা সময়ে শুরু করতে ব্যর্থ হয়েছে। এতে চরম বিপদে আছেন চালকলের মালিক ও কৃষকেরা। ঘোষিত সময়ের ২২ দিন পর গতকাল সদর উপজেলার পিয়ারপুর খাদ্য সংরক্ষণাগার থেকে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু করা হয়। তবে জেলা শহরের সিংহজানী খাদ্য সংরক্ষণাগারে এখনো সংগ্রহ অভিযান শুরু করা যায়নি। অথচ এটি জেলার সবচেয়ে বড় খাদ্য সংরক্ষণাগার।

চালকল মালিককদের অভিযোগ, খাদ্য বিভাগ কখন কীভাবে ধান সংগ্রহ করে, তার কিছুই আসলে কৃষকেরা জানেন না। এ নিয়ে কোনো প্রচার-প্রচারণাও নেই। খাদ্য বিভাগের লোকজনের সঙ্গে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী লোকজন মিলেমিশে নিজেরাই ধান সংগ্রহের কাজটি করেন। এখানে কার্যত কৃষকের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ধান সংগ্রহের নামে আসলে যা হয়, তা কিছু লোকের ভাগ-বাঁটোয়ারা ছাড়া আর কিছু নয়।

কয়েকজন চালকলের মালিক বলেন, বলা হচ্ছে সিংহজানী খাদ্য সংরক্ষণাগার কর্মকর্তার বদলির কারণে সেখানে অভিযান শুরু করা যাচ্ছে না। তবে আসল কারণটি কী, তা তাঁদের জানা নেই। কারণটা যা–ই হোক, এই সংরক্ষণাগারে সংগ্রহ শুরু না হওয়ায়, চালকলের মালিকেরা বড় বিপাকে পড়েছেন। কারণ, বেশির ভাগ চালকলের মালিক সেখানে সরবরাহের জন্য চাল প্রস্তুত করে রেখেছেন। সেই চাল এখন নিজেদের গুদামে ভর্তি করে রাখতে হচ্ছে। দ্রুত চালগুলো দিয়ে দিতে পারলে, টাকা যেমন পাবেন, তেমনি গুদাম খালি হলে অন্য চাল রাখতে পারবেন।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় বলছে, এবার জামালপুর সদর উপজেলায় প্রায় ১৬ হাজার ৭৬৬ মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হবে। এই চাল সরবরাহের জন্য সদর উপজেলার ২৮৭টি চালকলের সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়েছে।

জামালপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মাহবুবুর রহমান খান প্রথম আলোকে বলেন, সদর উপজেলার পিয়ারপুর খাদ্য সংরক্ষণাগার থেকে অভিযান শুরু হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই প্রায় সব উপজেলায় এই কার্যক্রম শুরু হবে। সিংহজানী খাদ্য সংরক্ষণাগারের বিষয়ে তিনি বলেন, একজন কর্মকর্তার বদলিজনিত কারণে সেখানে অভিযান শুরু করা যাচ্ছে না। তবে আগামী রবি অথবা সোমবার থেকে শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।