ওমরাহ করতে যাবেন বলে দুদকে সময় চাইলেন হাওলাদার

রুহুল আমিন হাওলাদার
রুহুল আমিন হাওলাদার

ওমরাহ করতে সৌদি আরব যাচ্ছেন জানিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তলবে হাজির হতে ঈদের পর পর্যন্ত সময় চেয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) সাবেক মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। আজ সোমবার দুদকে চিঠি দিয়ে সময় চান তিনি।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। গত মঙ্গলবার চিঠি দিয়ে রুহুল আমিন হাওলাদারকে আজ দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছিল। সকালে দুদকে চিঠি পাঠিয়ে হাওলাদার জানান, আজ ওমরাহ পালনের জন্য তিনি সৌদি আরব যাচ্ছেন। ঈদের পর অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য দিতে তিনি দুদকে হাজির হবেন।

দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এর আগে এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে একাধিকবার তলব করা হলেও তিনি হাজির হননি। গত ২৮ এপ্রিল পাঠানো এক নোটিশে ৪ এপ্রিল দুদকে হাজির হওয়ার জন্য হাওলাদারকে তলব করা হয়। ওই নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে তিনি আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ দুদকের দেওয়া নোটিশের কার্যকারিতা চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। সে কারণে ৪ এপ্রিল দুদকে হাজির হননি হাওলাদার।

পরে হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যায় দুদক। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। ফলে, রুহুল আমিন হাওলাদারের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে বাধা উঠে যায়। সেই ধারাবাহিকতায় নতুন করে তলব করা হলো তাঁকে।

দুদকের তলবি চিঠিতে বলা হয়, রুহুল আমিন হওলাদারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির যেসব অভিযোগ রয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে সরকারি আমলা ও আদালতে ঘুষ দেওয়া এবং সরকারি সম্পদ আত্মসাতের মাধ্যমে শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন।

এর আগে গত বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর হাওলাদারকে চিঠি পাঠিয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর দুদকে হাজির হতে চিঠি পাঠিয়েছিলেন দুদকের একই কর্মকর্তা। কিন্তু ‘রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ততা’ ও ‘অসুস্থতার’ কারণে তলবে হাজির হননি রুহুল আমিন হাওলাদার। একই সঙ্গে ‘স্বাস্থ্যঝুঁকি’ ও ‘পারিপার্শ্বিক অবস্থা’ বিবেচনা করে ব্যক্তিগত উপস্থিতি ও অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে দুদকে চিঠি পাঠান তিনি। ওই চিঠিতে তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি কার্যক্রম হিসেবে কর্মী সংগ্রহ, প্রার্থী বাছাইসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দলীয় কাজে অত্যন্ত ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। সংসদ অধিবেশনেও প্রতিদিন অংশ নিতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

২০১৪ সালের নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধির বিষয়টি আমলে নিয়ে রুহুল আমিন হাওলাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হলেও পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২০১৭ সালে নতুন করে অনুসন্ধান শুরু হয়।