সংস্কারে কোনো তৎপরতা নেই

ওয়াসার সংস্কারকাজের জন্য সড়কের অর্ধেক স্থানজুড়ে খোঁড়া হয়েছে গর্ত। এতে সৃষ্ট যানজটে ভোগান্তির শিকার হন যাত্রী সাধারণ। গতকাল বিকেল সাড়ে চারটায় গণি বেকারি এলাকায়।  সৌরভ দাশ
ওয়াসার সংস্কারকাজের জন্য সড়কের অর্ধেক স্থানজুড়ে খোঁড়া হয়েছে গর্ত। এতে সৃষ্ট যানজটে ভোগান্তির শিকার হন যাত্রী সাধারণ। গতকাল বিকেল সাড়ে চারটায় গণি বেকারি এলাকায়। সৌরভ দাশ

অলিগলি থেকে শুরু করে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে খোঁড়াখুঁড়ি নগরবাসী মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। শুষ্ক আবহাওয়ায় সড়কে উড়ছে ধুলাবালু, আবার সামান্য বৃষ্টিতে জলকাদায় একাকার হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। খননের পর সড়ক পুনর্নির্মাণ না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
ওয়াসাসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থা নগরজুড়ে সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করছে। সিটি করেপোরেশন এই খোঁড়াখুঁড়ির অনুমোদন দেয়। সংস্থারকাজ শেষ হলে গর্ত ভরাটের পর কার্পেটিং করার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। কিন্তু নগরের অনেক সড়কে কাটাকাটির এক মাস পরেও কার্পেটিং করছে না সিটি করপোরেশন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় এক মাস আগে নগরের তিনপুলের মাথা থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও লালদীঘি পাড় হয়ে আদালত ভবনের প্রবেশপথ পর্যন্ত রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি হয়েছে। কিন্তু সিটি করপোরেশন ভরাটের কাজে হাত দেয়নি। অথচ ঈদ উপলক্ষে নগরের জহুর হকার্স মার্কেট এবং রেয়াজউদ্দিন বাজারসংলগ্ন ফুটপাতে পসরা সাজিয়ে বসা হকারদের ব্যবসা জমজমাট হয়ে ওঠে। নগরের নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত ছাড়াও মধ্যবিত্ত শ্রেণির অনেকেই এসব মার্কেটের ক্রেতা। কিন্তু সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে সেখানে ক্রেতাদের ভিড় দেখা যায়নি।
হকার্স মার্কেটের দোকানি আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়ি ছাড়াও সিনেমা প্যালেস লাগোয়া নর্দমা নির্মাণের কাজে হাত দেওয়া হয় দুই–আড়াই মাস আগে। এ কারণে শুষ্ক মৌসুমে ধুলাবালু এবং বৃষ্টি হলে কাদায় একাকার হয়ে যায় সড়ক। ফলে ক্রেতার সংখ্যা কমে গেছে। সড়ক সংস্কার না হলে ঈদে ক্রেতা কম মিলবে।

আরিফুর রহমান নামের একজন হকার জানান, ওয়াসার কাজ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু সিটি করপোরেশন রাস্তা কার্পেটিং কাজ শুরু করছে না।

খোঁড়াখুঁড়ির পর আর কার্পেটিং হয়নি। বৃষ্টিতে কাদাপানি আর রোদের দিনে ধুলায় নাকাল নগরবাসী। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় নগরের সাগরিকা এলাকায়।  জুয়েল শীল
খোঁড়াখুঁড়ির পর আর কার্পেটিং হয়নি। বৃষ্টিতে কাদাপানি আর রোদের দিনে ধুলায় নাকাল নগরবাসী। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় নগরের সাগরিকা এলাকায়। জুয়েল শীল

সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান, নিয়ম মেনে সেবা সংস্থাগুলো কাজ না করায় প্রতিবছরই এমন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয় নগরবাসীকে। নগরে একাধিক সেবা সংস্থা কাজ করে থাকে। প্রতিটি সংস্থাই তার নিজের মতো করে কাজ করছে। একটির সঙ্গে অন্যটির সমন্বয় নেই। সমন্বিত কাজ না হলে জনগণের দুর্ভোগ বাড়বে বলে মনে তাঁরা।

বর্তমানে ওয়াসা ছাড়াও বিভিন্ন মুঠোফোন কোম্পানি সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করছে। গোটা নগরে চলছে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। এই মুহূর্তে নগরের বিপণিবিতানগুলোর সামনে সড়কগুলো কার্পেটিং করা জরুরি বলে মনে করেন ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা। নগরের মিমি সুপার মার্কেটের সামনেও একইভাবে সড়ক খুঁড়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু কার্পেটিং করার কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না সিটি করপোরেশনের।

সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিটুমিন সংকটের কারণে কার্পেটিং করা যায়নি। নগদ টাকা দিয়ে বিটুমিন কিনতে হয়। আমরা ইতিমধ্যে বিটুমিন সংগ্রহ করেছি।’

মহিউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, ‘আমরা কাজে হাত দিয়েছি। তবে বৃষ্টি আবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃষ্টি বন্ধ হলে দ্রুত সংস্কারকাজ শেষ করা হবে।’