শরবত বিক্রেতার কাঠের আঘাতে ছিনতাইকারী নিহত, জবানবন্দির বরাতে বলছে পুলিশ

বাবু বাজার সেতু। ফাইল ছবি
বাবু বাজার সেতু। ফাইল ছবি

রাজধানীতে শরবত বিক্রেতার কাঠের আঘাতে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় শুক্রবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন শরবত বিক্রেতা আইয়ুব সরদার (২৫)। এরপর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার এজাহার ও পুলিশ বলছে, নিহত যুবক ছিনতাইকারী।

অভিযুক্ত আইয়ুবের বাড়ি রাজবাড়ীর সাভার গ্রামে। তাঁর বাবার নাম যাদু সরকার। ঢাকা কোতোয়ালি থানা-পুলিশ বলছে, নিহত যুবকের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।

পুলিশ, মামলা ও আদালত সূত্র বলছে, আইয়ুব সরদার বসবাস করেন কেরানীগঞ্জে। পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার মোড়ে শরবত বিক্রি করে সংসার চালান আইয়ুব। দিনভর শরবত বিক্রি কর গত মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে বাবুবাজার সেতু হয়ে কেরানীগঞ্জে নিজ বাসায় ফিরছিলেন। সেতুর ওপরে আসার পর এক যুবক আইয়ুবকে চাকু দেখান ও হুমকি দেন। যা আছে সব তাঁকে (ছিনতাইকারীকে) দিয়ে দিতে বলেন। তখন আইয়ুব অজ্ঞাত ওই যুবকটির চাকু কেড়ে নেন। পরক্ষণে ওই যুবকও আইয়ুবের কাছে থাকা একটি কাচের বোতল কেড়ে নেন এবং তাঁকে হত্যার চেষ্টা করেন। নিজেকে রক্ষার জন্য একপর্যায়ে আইয়ুব তাঁর হাতের একটি কাঠের খণ্ড দিয়ে ওই ছিনতাইকারীর মাথায় আঘাত করেন। এতে ওই ছিনতাইকারী সেতুর ওপর পড়ে যান এবং সেখান থেকে চলে যান আইয়ুব। খবর পেয়ে বাবুবাজার সেতুর নিচে দায়িত্ব পালন করা কোতোয়ালি থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। স্থানীয় দুজন রিকশাচালকের সহায়তায় অজ্ঞাত ওই যুবককে নিয়ে যাওয়া হয় পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তবে ওই যুবকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেকে) হাসপাতালে। ওই দিন রাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক অজ্ঞাতপরিচয় যুবককে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানা-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) শাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে গত বৃহস্পতিবার মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সেদিন শরবত বিক্রেতা আইয়ুব সরদারকে গ্রেপ্তার করে। পরে শুক্রবার আদালতে তাঁকে হাজির করা হয়। সেদিনই আইয়ুব সরদার ঢাকার আদালতে অজ্ঞাত ওই যুবককে হত্যার কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

রোববার কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাহিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আসামি আইয়ুব সরদার অজ্ঞাত ওই যুবককে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। অজ্ঞাত ওই যুবকের পরিচয় উদ্ধারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে।

পুলিশ ও আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত কাঠের টুকরা জব্দ করা হয়েছে। একটি চাকু, কাচের ভাঙা টুকরা, প্লাস্টিকের জুতা উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত অজ্ঞাত যুবকের প্যান্টের পকেট থেকে একটি ইনজেকশন পাওয়া গেছে। পুলিশের ধারণা, ইনজেকশনের ভেতর নেশাজাতীয় তরল পদার্থ রয়েছে। এ ছাড়া যুবকের প্যান্টের পকেট থেকে একটি গ্যাস লাইটও উদ্ধার করা হয়।