মেট্রোরেলের নিরাপত্তায় বিশেষ পুলিশ ইউনিট গঠনে প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বারোপ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে মেট্রোরেল প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতির চিত্র পর্যবেক্ষণ করেন। ঢাকা, ১৬ সেপ্টেম্বর। ছবি: পিআইডি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে মেট্রোরেল প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতির চিত্র পর্যবেক্ষণ করেন। ঢাকা, ১৬ সেপ্টেম্বর। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সোমবার মেট্রোরেলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পৃথক বিশেষ পুলিশ ইউনিট গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। সকালে গণভবনে ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিটের (এমআরটি) অগ্রগতির ওপর একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের সময় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ঢাকা ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানির (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে ‘ঢাকা মহানগরী ও এর আশপাশের এলাকায় এমআরটি লাইন নির্মাণের জন্য টাইম বাউন্ড অ্যাকশন প্ল্যান ২০৩০’-এর বাস্তবায়নের সার্বিক অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তিনি ৬ লাইন এমআরটির পাশাপাশি ১, ২, ৩, ৪, ৫ লাইন এমআরটির অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন।

দেশে এই প্রথমবারের মতো মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) সহযোগিতায় রাষ্ট্রমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ডিএমটিসিএল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই মেগা প্রকল্পের দ্রুত ও যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কিছু নির্দেশনা দেন।

সভায় জানানো হয়, আগস্ট নাগাদ ৬ লাইন প্রকল্পটির (উত্তরা-আগারগাঁও-মতিঝিল) ৩০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এ ছাড়া সভায় আরও জানানো হয়, এখন পর্যন্ত ৬ লাইনের এমআরটির উত্তরা আগারগাঁও অংশের প্রায় ৪৬ শতাংশ কাজ এবং আগারগাঁও-মতিঝিলের ২৪ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

সাবেক নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান (এমপি), প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান, পিএমও সচিব সাজ্জাদুল হাসান, প্রতিরক্ষাসচিব আখতার হোসেন ভূঁইয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক সেলের সিইও ও সাবেক ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামন মিয়া এবং জাইকার প্রতিনিধিরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার এমআরটি লাইন-৬ উত্তরা থার্ড ফেস থেকে শুরু হয়ে পল্লবীর মধ্য দিয়ে রোকেয়া সরণির পশ্চিম পাশ এবং ফার্মগেট, হোটেল সোনারগাঁও, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, দোয়েল চত্বর, তোপখানা রোড ও বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত বিস্তৃত।

সরকারি সূত্রে বলা হয়েছে, প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এমআরটি-৬ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। এতে জাইকা ১৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দিচ্ছে। প্রকল্পের বাকি টাকা বাংলাদেশে সরকার জোগান দেবে।

দ্রুতগামী মেট্রোরেলটি উত্তরা থেকে মিরপুর ও ফার্মগেট হয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যাতায়াত করবে। এতে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী ভ্রমণ করতে পারবে। প্রতি চার মিনিট পরপর এক এক করে প্রতিটি স্টেশনে ট্রেন থামবে। এই প্রকল্পের ১৬টি স্টেশন হলো উত্তর উত্তরা, মধ্য ও দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, সোনারগাঁও, জাতীয় জাদুঘর, দোয়েল চত্বর, বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম ও বাংলাদেশ ব্যাংক।

এমআরটি-৬ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে নগরবাসী তাঁদের অতি কাঙ্ক্ষিত আরামদায়ক পরিবহনে ভ্রমণের আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন। তাঁরা বর্ধিত রাজধানীর যানজটের সড়কগুলোর পরিবহনে দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর যাত্রা থেকে নিষ্কৃতি পাবেন। প্রকল্পটি শুরু হলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মাত্র ৩৮ মিনিটে একজন যাত্রী উত্তরা পৌঁছতে পারবেন।