যুবলীগ নামধারী সন্ত্রাসী টিনুর সহযোগীদের খুঁজছে র‍্যাব-পুলিশ

নুর মোস্তফা
নুর মোস্তফা

চট্টগ্রামে যুবলীগ নামধারী সন্ত্রাসী নুর মোস্তফা ওরফে টিনু র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের পর তাঁর সহযোগীরা গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁদের খুঁজছে র‍্যাব-পুলিশ। টিনু বাহিনী এলাকাছাড়া হওয়ায় স্বস্তিতে রয়েছে নগরের চকবাজার, বাকলিয়া ও কালুরঘাট এলাকার বাসিন্দারা। 

গত রোববার রাতে নগরের কাপাসগোলার বাসায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র, গুলিসহ মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। অভিযানে একটি পিস্তল ও শটগান এবং ৭২টি গুলি উদ্ধার হয়। গ্রেপ্তার করা হয় তাঁর সহযোগী জসিম উদ্দিনকে। এ ঘটনায় র‍্যাব মামলা করেছে। ওই মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠান আদালত। টিনুর গ্রেপ্তারে চকবাজার, বাকলিয়া এলাকায় স্বস্তি ফিরে আসে। র‍্যাবের দাবি, তাঁর ‘নিয়ন্ত্রণাধীন’এলাকার ফুটপাত, কোচিং সেন্টার, শপিং মল ও টমটম (গাড়ি) থেকে সহযোগীদের মাধ্যমে মাসে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়।

র‍্যাব ও পুলিশ সূত্র জানায়, মোস্তফা তাঁর বাহিনী দিয়ে চকবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় আধিপত্য বজায় রাখতেন। র‍্যাবের অভিযানে তাঁর সহযোগীরা আত্মগোপনে চলে যান। তাঁদের মাধ্যমে ফুটপাত, কাঁচাবাজার, টমটম গাড়ি, জুয়ার আসর, নির্মাণাধীন ভবন, কোচিং সেন্টার, শপিং মল থেকে চাঁদা তুলতেন তিনি। গত সোমবার থেকে তাঁদের কাউকে এলাকায় দেখছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা। এতে স্বস্তিতে রয়েছেন তাঁরা। চকবাজার এলাকার ফুটপাতে এক তরকারি বিক্রেতা প্রথম আলোকে বলেন, পাপ বাপরেও ছাড়ে না। কত দিন তাঁদের কবজা থেকে তাঁরা মুক্ত থাকতে পারেন সেটি দেখার বিষয়। 

র‍্যাব-৭ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) মিমতানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মোস্তফা সহযোগীদের মাধ্যমে এলাকায় আধিপত্য বজায় রাখতেন। এ কারণে তাঁর সহযোগীদের গ্রেপ্তারে র‍্যাবের অভিযান চলছে। 

চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন জানান, মোস্তফার সহযোগীরা গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁদের খুঁজছে পুলিশ। 

যাঁদের খুঁজছে র‍্যাব ও পুলিশ
সাদ্দাম হোসেন ওরফে ইভান, কায়সার হামিদ, শাহাদাত হোসেন ওরফে লেংড়া রিফাত, মোহাম্মদ নাছির ওরফে লম্বা নাছির, সৌরভ ওরফে বাপ্পা, রবিউল ইসলাম, জসিম উদ্দিন, অনিন্দ্য বৈদ্য ওরফে সানি, আমির হোসেন, অভিক দাশ, নাহিদুল ইসলাম, জুলকাস, ইমন রশীদ, বিপ্লব দে, নিজাম উদ্দিন, মো. আরমান। র‍্যাবের তালিকা অনুযায়ী তাঁরা সবাই অস্ত্রধারী, ছিনতাইকারী ও চাঁদাবাজিতে সক্রিয়। তালিকার বাইরেও মোস্তফার দলে অনেক কিশোর রয়েছে। যারা ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়িত। তালিকায় তাদের নাম না থাকলেও সন্দেহভাজনদের শনাক্তের কাজ করছে র‍্যাব ও পুলিশ। 

মোস্তফার রিমান্ড শুনানি কাল
অস্ত্র–গুলি উদ্ধারের মামলায় মোস্তফা ও তাঁর সহযোগী জসিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পাঁচলাইশ থানা-পুলিশ সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে গত সোমবার। আদালত আগামীকাল বৃহস্পতিবার শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন। আবেদনে বলা হয়, উদ্ধার অস্ত্রের রহস্য উদ্‌ঘাটনে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।