ক্যাসিনোর জন্য ক্লাব ভাড়া দিলেও অর্থ পাচার করেননি, দাবি লোকমানের

লোকমান হোসেন ভূঁইয়া। ছবি: সংগৃহীত
লোকমান হোসেন ভূঁইয়া। ছবি: সংগৃহীত

ক্যাসিনো বসিয়ে জুয়া খেলার জন্য মোহামেডান ক্লাব ভাড়া দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ডাইরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূঁইয়া। তবে দেশের বাইরে অর্থ পাচারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাদের কাছে এসব কথা জানিয়েছেন লোকমান হোসেন। দুদকের একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রিমান্ডের নির্ধারিত সময়ের আগেই তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে দুদক। গত সোমবার সাত দিনের রিমান্ডে লোকমানকে দুদকে নেওয়া হয়। কিন্তু চার দিনের মধ্যেই প্রয়োজনীয় তথ্য পেয়ে যাওয়ায় তাঁকে কারাগারে পাঠানো হলো।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে লোকমান দুদকের দলকে পুরোপুরি সহযোগিতা করেছেন। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে লোকমান জানিয়েছেন, ক্যাসিনোর জন্য ভাড়া দেওয়ার পর তিনি ক্যাসিনো থেকে কোনো টাকা নিজে নেননি। ক্লাবের কর্মীরাই সে টাকা সংগ্রহ করে তা ক্লাবের ব্যাংক হিসাবে জমা রাখতেন। অস্ট্রেলিয়ায় ৪১ কোটি টাকা পাচারের যে তথ্য দুদকের হাতে আছে, সে সম্পর্কেও লোকমানের কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয় বলে সূত্র জানিয়েছে। তবে লোকমান জোরগলায় তা অস্বীকার করেছেন।

৪ কোটি ৩৪ লাখ ১৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে গত ২৭ অক্টোবর লোকমানের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩ নভেম্বর লোকমান ভূঁইয়ার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ ইমরুল কায়েস।

লোকমান হোসেন ভূঁইয়া ক্যাসিনো থেকে দিনে ৭০ হাজার করে মাসে ২১ লাখ টাকা নিতেন। মোহামেডান ক্লাবের ওই ক্যাসিনো চালাতেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ কে এম মমিনুল হক ওরফে সাইদ। ক্লাবটিতে ক্যাসিনো ব্যবসার ভাড়া বাবদ তিনি ওই টাকা নিতেন। দুদক অনুসন্ধানে এ তথ্যের সত্যতা মিলেছে। অনুসন্ধানের তথ্য বলছে, ক্যাসিনো ব্যবসা থেকে পাওয়া ৪১ কোটি টাকা অস্ট্রেলিয়ার এএনজেড এবং কমনওয়েলথ ব্যাংকে রাখতেন বলে দুদক জেনেছে।

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের শুরুর দিকে গত ২৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে লোকমানকে রাজধানীর মণিপুরিপাড়ার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

লোকমান বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সদস্য হওয়ায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

আরও পড়ুন...