'আমাকে ক্লাসে যেতে দিন'

প্ল্যাকার্ড হাতে শিক্ষক রুশাদ ফরিদী। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।  ছবি: প্রথম আলো
প্ল্যাকার্ড হাতে শিক্ষক রুশাদ ফরিদী। গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছবি: প্রথম আলো

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সহকর্মীদের সম্পর্কে ‘বাজে মন্তব্য’ করার অভিযোগে ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী 

অধ্যাপক রুশাদ ফরিদীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট৷ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তাঁর করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের আগস্টে সিন্ডিকেটের সেই সিদ্ধান্তকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছেন উচ্চ আদালত৷ এরপরও ক্লাসে ফিরতে বাধার শিকার হয়ে বিভাগের চেয়ারম্যানের কক্ষের বাইরে প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন রুশাদ ফরিদী৷ 

এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, আদালতের রয়ের কপি পেলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷

রুশাদ ফরিদীর অভিযোগ, মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল৷ অর্থনীতি বিভাগের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারণে কয়েকজন সহকর্মী প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ করেন৷ উচ্চ আদালতের রায়ে তিনি ক্লাসে ফেরার সুযোগ পেলেও এ বিষয়ে অর্থনীতি বিভাগ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন না৷ বিভাগের পক্ষ থেকে তাঁর কাগজপত্র গ্রহণ করা হচ্ছে না৷ আদালতের রায়ের কপি না পেলেও নিজের আইনজীবীর স্বাক্ষর করা রায়সংক্রান্ত কাগজপত্র বিভাগে জমা দিয়েছেন বলে জানান তিনি৷

ক্লাসে ফেরার সুযোগ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে গত মঙ্গল ও বুধবার অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিক উজ জামানের কক্ষের বাইরে একাই একটি প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান কর্মসূচি করেছেন রুশাদ ফরিদী৷ প্ল্যাকার্ডটিতে লেখা, ‘আমি শিক্ষক, আমাকে ক্লাসে ফিরে যেতে দিন’৷ ক্লাসে ফেরার সুযোগ না পাওয়া পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন বলে জানান তিনি৷ 

অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শফিক উজ জামান মুঠোফোনে বলেন, রুশাদ ফরিদীর বিষয়টি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার বিভাগের একাডেমিক কমিটির সভায় আলোচনা হবে৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেছেন, উচ্চ আদালতের এ–সংক্রান্ত রায়ের কপিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো পায়নি৷ তিনি বলেন, ‘উচ্চ আদালতের আদেশটির কপি পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সহকর্মীদের সম্পর্কে ‘বাজে মন্তব্য’ করার অভিযোগে ২০১৭ সালের ১২ জুলাই রুশাদ ফরিদীকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেটের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১৩ জুলাই উচ্চ আদালতে রিট করেন তিনি৷ সেই বছরের ২৪ জুলাই সিদ্ধান্তের বৈধতা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন উচ্চ আদালত৷ এরপর চলতি বছরের ২৫ আগস্ট রুশাদ ফরিদীর বিরুদ্ধে সিন্ডিকেটের সেই সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন আদালত৷