উত্তরে আ.লীগ দুটিতে, বিএনপি একটিতে বিদ্রোহী-সংকটে

ফোরকান হোসেন, আফতাব উদ্দিন, নুরুল ইসলাম, লিটন মাহমুদ, এম নুরুল ইসলাম
ফোরকান হোসেন, আফতাব উদ্দিন, নুরুল ইসলাম, লিটন মাহমুদ, এম নুরুল ইসলাম

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ২৮, ২৯ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ১৬ জন। এর মধ্যে ২৯ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীই ৬ জন। তাঁরা এলাকায় নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর বিএনপিতে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমস্যা একটি ওয়ার্ডে।

২৮ নম্বর ওয়ার্ড
আগারগাঁও স্টাফ কোয়ার্টার, পশ্চিম আগারগাঁও, কাফরুল, তালতলা স্টাফ কোয়ার্টার, শ্যামলী রোড-১, মহাকাশ বিজ্ঞান ভবন, জি টাইপ কোয়ার্টার নিয়ে এই ওয়ার্ড। এখানে আওয়ামী লীগ থেকে ফোরকান হোসেনকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে। তাঁর নির্বাচনী প্রতীক ঘুড়ি। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর। ফোরকান হোসেন বলেন, ‘অনেক উন্নয়নকাজ করেছি। কিছু উন্নয়নকাজ চলমান।’ আবার নির্বাচিত হলে সরকারি কমিউনিটি সেন্টার ও খেলার মাঠ করতে চান তিনি।

ওয়ার্ডে বিএনপি–সমর্থিত প্রার্থী আফতাব উদ্দিন। তাঁর প্রতীক কাঁটাচামচ। ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচিত হলে ভাঙা রাস্তাঘাট সংস্কার, মশক নিধনসহ যাবতীয় নাগরিক সেবা দ্রুত দেওয়ার চেষ্টা করব। পাশাপাশি ঈদগাহের আধুনিকায়ন, সরকারি কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ ও ফুটপাত দখলমুক্ত করে মানুষের চলাচল নিশ্চিত করা হবে।’

২৯ নম্বর ওয়ার্ড
মোহাম্মদপুর এফ ও সি ব্লক এবং জহুরী মহল্লা নিয়ে এই ওয়ার্ড। ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম ওরফে রতনকে এবারও আওয়ামী লীগ থেকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে। ঠেলাগাড়ি প্রতীকের এই প্রার্থী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য। দল–সমর্থিত প্রার্থী ছাড়াও আওয়ামী লীগের চার নেতা নির্বাচনের মাঠে সক্রিয় আছেন। এর মধ্যে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সলিম উল্লাহ্ ওরফে সলু ঘুড়ি প্রতীকে, মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক সামিউল আলিম চৌধুরী ঝুড়ি প্রতীকে, থানা শ্রমিক লীগের নেতা নুর মোহাম্মদ লাটিম প্রতীকে ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা এম নুরুল ইসলাম ওরফে শাহেদ রেডিও প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।

নুরুল ইসলাম বলেন, ওয়ার্ডে উন্নয়ন করার মতো বড় কোনো কাজ বাকি নেই। তবে দুটি বিষয় নিয়ে তাঁর কাজ করার পরিকল্পনা আছে। একটি হলো পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা ও কৃষি মার্কেট ভেঙে কৃষিপণ্যের পাইকারি বহুতল বাজার নির্মাণ।

সলিম উল্লাহ বলেন, রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার সুবাদে অনেক আগে থেকেই ওয়ার্ডবাসীর বিভিন্ন সমস্যায় পাশে থেকেছেন। তাই নির্বাচিত হলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে জনগণের সেবা করতে চান তিনি।

>

২৯ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীই ৬ জন
বিএনপিতে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমস্যা একটি ওয়ার্ডে

এম নুরুল ইসলাম বলেন, ‘মাদকের কারণে পরবর্তী প্রজন্ম নিয়ে আমরা আতঙ্কিত। তাই মাদকের বিরুদ্ধে থাকবে আমার প্রথম যুদ্ধ। জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দিতে অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করতে চাই। অল্প খরচে ওয়ার্ডবাসী এই সেবা নিতে পারবে।’

এখানে বিএনপি সমর্থন দিয়েছে লিটন মাহমুদকে। তিনি মোহাম্মদপুর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। টিফিন ক্যারিয়ার প্রতীকের এই প্রার্থী বলেন, ‘মাদকই এলাকার মূল সমস্যা। জনগণ যদি আমাকে নির্বাচিত করে তাহলে ওয়ার্ডকে মাদকমুক্ত করার চেষ্টা করব। এ ছাড়া ওয়ার্ডের কিছু এলাকায় গুরুতর জলাবদ্ধতা হয়। এই সমস্যার সমাধান করতে চাই।’

৩০ নম্বর ওয়ার্ড
শ্যামলী রিং রোড, আদাবর, নজরুলবাগ, পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি, বায়তুল আমান ও শেখেরটেক নিয়ে এই ওয়ার্ড।

ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর আবুল হাসেমকে প্রথমে দলীয় সমর্থন দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু হলফনামায় তথ্য গোপন করায় তাঁর প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যায়। পরে কাউন্সিলরের বড় ভাই আবুল কাশেমকে দলীয় সমর্থন দেওয়া হয়। তিনি আদাবর থানা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি। তাঁর নির্বাচনী প্রতীক টিফিন ক্যারিয়ার। দলের সমর্থন ছাড়াই নির্বাচনী মাঠে আছেন আদাবর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইয়াছিন মোল্লা ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা মাসুদ রানা।

নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আবুল কাশেমের বক্তব্য জানা যায়নি।

বিএনপি থেকে এখানে হাজি নাছির উদ্দিনকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে। তিনি আদাবর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তাঁর নির্বাচনী প্রতীক ঝুড়ি। এ ছাড়া দলের আরেক জ্যেষ্ঠ নেতা নির্বাচনের মাঠে আছেন। তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সহসভাপতি আবুল হাসেম। তিনি লড়ছেন ঠেলাগাড়ি প্রতীক নিয়ে।

মুঠোফোন নম্বর বন্ধ থাকায় বিএনপি–সমর্থিত প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী আবুল হাসেম বলেন, ‘অতীতে জনপ্রতিনিধি না হয়েও এলাকাবাসীর পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। নির্বাচিত হলে তাদের সেবা করতে চাই।’