শিশুদের টিকা দিচ্ছিলেন স্বাস্থ্যকর্মী, খবর এল তাঁর করোনা

শিশুদের টিকা দিতে যথারীতি একটি কমিউনিটি ক্লিনিকে যান স্বাস্থ্য সহকারী। তিনটি শিশুকে টিকাও দেন। এরপর তাঁর মুঠোফোনে খবর আসে তাঁর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন ওই তিন শিশুর বাড়ি লকডাউন করে দিয়েছে।

গতকাল বুধবার যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে। ওই স্বাস্থ্য সহকারী (৪০) মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, ১২ এপ্রিল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক স্বাস্থ্যকর্মীর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। তিনি যশোরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া প্রথম ব্যক্তি। বর্তমানে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন। ইতিমধ্যে তাঁর তিন দফা নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দুটি প্রতিবেদনে তাঁর করোনা পজেটিভ ছিল। তৃতীয় দফার পরীক্ষার প্রতিবেদন এখনো হাতে পায়নি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ।
সূত্র জানায়, প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করেছিলেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাতজন স্বাস্থ্যকর্মী। তাদের কোনো করোনা উপসর্গ ছিল না। এরপরও গত সোমবার তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টারে পাঠানো হয়। গতকাল তাঁদের নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পৌঁছায়।

প্রতিবেদনে জানা গেছে, তাঁদের মধ্যে চারজনের করোনা পজিটিভ। তাঁরা হলেন এক নারী উপসহকারী কমিউনিটি চিকিৎসা কর্মকর্তা, এক নারী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই), এক নারী অফিস সহকারী ও একজন পুরুষ স্বাস্থ্য সহকারী। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মুঠোফোনে তাঁদের বিষয়টি জানানো হয়।

এ সময় সুরক্ষা পোশাক (পিপিই) পরে স্বাস্থ্য সহকারী উপজেলার পাঁচাকড়ি কমিউনিটি ক্লিনিকে শিশুদের টিকা দিচ্ছিলেন। ততক্ষণে তিনি তিনটি শিশুকে টিকা দিয়েছেন। গতকাল বেলা পৌনে ১২টার দিকে মুঠোফোনে খবর পেয়ে তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফিরে যান। সেখানে আইসোলেশন ওয়ার্ডে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শুভ্রা রাণী দেবনাথ বলেন, নমুনা পরীক্ষায় চারজনের প্রতিবেদন পজিটিভ পাওয়ার পর তাঁদের বিষয়টি অবহিত করা হয়। এর মধ্যে একজন স্বাস্থ্য সহকারী তিনটি শিশুকে টিকা দিয়েছেন। ওই শিশুদের বাবা-মায়ের নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ করে যশোর সিভিল সার্জন এবং মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দেওয়া হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আহসান উল্লাহ শরিফী বলেন, গতকাল বিকেলে উপজেলার পাঁচাকড়ি গ্রামের ওই তিনটি শিশুর বাড়ি লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে।