অবশেষে ত্রাণ পেলেন দুর্গম খাসিয়াপুঞ্জির বাসিন্দারা

মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজার

করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ লকডাউন পরিস্থিতিতে অবশেষে ত্রাণ পৌঁছেছে মৌলভীবাজারের খাসিয়াপুঞ্জির মানুষের কাছে। গতকাল বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রথম বারের মতো 'প্রধানমন্ত্রীর উপহার' হিসেবে সেখানকার ১৫০ পরিবারের জন্য ত্রাণ নিয়ে যান।এর আগে সরকারি বা বেরসরকারি কোনো ত্রাণ জুটেনি ওই এলাকার বাসিন্দাদের।

মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নে অবস্থিত ওই তিনটি খাসিয়াপুঞ্জি। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে তিনটি পুঞ্জির অবস্থান।দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী খাসিয়াদের তিনটি পুঞ্জির (গ্রাম) বাসিন্দাদের পানচাষ প্রধান জীবিকা।করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে পানের বাজার মন্দা। ফলে আর্থিক কষ্টে তাঁদের দিন কাটছে।


করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে খাসিয়াপুঞ্জির মানুষের সচেতনতা নিয়ে প্রথম আলো অনলাইনে ৯ এপ্রিল একটি ভিডিও এবং ৪ এপ্রিল 'নিজেদের সুরক্ষায় লকডাউনে জুড়ীর খাসিয়াপুঞ্জি' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকশিত হয়।

উপজেলা প্রশাসন ও প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিদের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বেলা দুইটার দিকে ইউএনও অসীম চন্দ্র বণিকের নেতৃত্বে একটি দল এলবিনটিলা পুঞ্জিতে ত্রাণ নিয়ে পৌঁছায়। সেখানে গির্জার সামনে তিন পুঞ্জির ১৫০ জন নারী-পুরুষকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড় করিয়ে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। এ সময় সেখানে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. ওমর ফারুক, ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ, ফুলতলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম এবং ইউপির বিভিন্ন ওয়ার্ডের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ত্রাণবাহী পিকআপভ্যানের চাকা এলবিনটিলা পুঞ্জির কাছে কাঁচা সড়কের পাশে দেবে যায়। পরে স্থানীয় ফুলতলা চা-বাগানের একটি ট্রাক দিয়ে ওই গাড়িটিকে টেনে তোলা হয়।


এলবিনটিলার পুঞ্জিপ্রধান অ্যান্থনি পাটোয়াট বললেন,'পান বেচে আমাদের সংসার চলে। করোনায় স্থানীয় হাট-বাজারে পান তেমন বিক্রি হয় না। দূরের পাইকাররা আসেন না। খুব খারাপ অবস্থায় আছি। এই প্রথম আমরা ত্রাণ পেলাম। এর আগে কেউ ত্রাণ নিয়ে আসেনি। ইউএনও স্যার ত্রাণ নিয়ে আসায় আমরা খুশি।'


ইউপি চেয়ারম্যান মাসুক আহমদ বলেন, তাঁর এলাকায় দুস্থ মানুষের সংখ্যা বেশি। ইউনিয়নওয়ারী সরকারি ত্রাণের বরাদ্দ কম। এ কারণে কোনো কোনো স্থান বাদ পড়ে যাচ্ছে। তবে পর্যায়ক্রমে সবাই ত্রাণ পাবেন। খাসিয়াপুঞ্জিতে ত্রাণ বিতরণ করায় তিনি ইউএনওকে ধন্যবাদ জানান।


ইউএনও অসীম চন্দ্র বণিক বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে খাসিয়াপুঞ্জির মানুষের সচেতনতা নিয়ে সম্প্রতি প্রথম আলো অনলাইনে একটি প্রতিবেদন ও ভিডিও প্রকাশিত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সেখানকার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।