লিবিয়ায় ড্রোন হামলায় ২৬ বাংলাদেশি হত্যার মূল হোতা নিহত

ড্রোন। প্রতীকী ছবি। ছবি: এএফপি
ড্রোন। প্রতীকী ছবি। ছবি: এএফপি

লিবিয়ার মিজদাহ শহরে ২৬ বাংলাদেশিসহ ৩০ জন অভিবাসীকে হত্যার মূল হোতা খালেদ আল মিশাই ঘারিয়ানে এক ড্রোন হামলায় নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার ত্রিপোলি থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরের ওই শহরে লিবিয়ার বিমানবাহিনীর ড্রোন হামলায় নিহত হন হাফতার মিলিশিয়া বাহিনীর অন্যতম সদস্য খালেদ মিশাই।

লিবিয়ার ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য লিবিয়া অবজারভার’ মঙ্গলবার রাতে টুইটে এ তথ্য জানিয়েছে।

গত বুধবার লিবিয়ার অপহরণকারীদের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে বাংলাদেশ ও সুদানের অভিবাসনপ্রত্যাশীরা স্থানীয় এক অপহরণকারীকে মেরে ফেলেন। এর জেরে পরদিন মিলিশিয়ারা নির্মমভাবে বাংলাদেশের ২৬ জন অভিবাসীকে হত্যা করেন। আহত হন আরও ১১ জন বাংলাদেশি। একই হামলায় লিবিয়ার মিলিশিয়াদের হাতে প্রাণ হারান সুদানের আরও চার নাগরিক।

লিবিয়ায় গত বৃহস্পতিবার নৃশংসভাবে নিহত ২৬ জন বাংলাদেশিই ছিলেন মানব পাচারের নির্মম শিকার। পাঁচ মাস আগে তাঁরা ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ছেড়েছিলেন। লিবিয়ার বেনগাজি থেকে ১৫ দিন আগে ত্রিপোলি হয়ে ইউরোপ যাত্রার পথে তাঁরা দুই দফা অপহরণকারীদের হাতে জিম্মি হয়েছিলেন। শেষ দফায় অপহরণকারীদের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে আফ্রিকার জিম্মিদের সঙ্গে মিলে অপহরণকারীদের হোতাকে হত্যা করলে এর জেরে তাঁদের বেঘোরে প্রাণ দিতে হয়।

আল জাজিরা ও মিডল ইস্ট আইয়ের খবরে জানানো হয়, ত্রিপোলি থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরের কৌশলগত পার্বত্য শহর ঘারিয়ানের দখল নিতে লিবিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার জিএনএর সঙ্গে ফিল্ড মার্শাল খলিফা বেলকাশিম হাফতারের মিলিশিয়া বাহিনীর তুমুল লড়াই চলছে। গত কয়েক দিনের ওই লড়াইয়ে হাফতার মিলিশিয়াদের ওপর ড্রোন হামলা চালাচ্ছে লিবিয়ার বিমান বাহিনী। গত কয়েক দিনের লড়াইয়ে দুই পক্ষের অনেক লোক হতাহত হয়েছেন।

ভূমধ্যসাগর হয়ে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করা বেশ কিছু বাংলাদেশি এখনো লিবিয়ার মানব পাচারকারীদের হাতে জিম্মি। তাঁরা লিবিয়ার দুর্গম মরু এলাকায় রয়েছেন বলে অসমর্থিত সূত্রগুলো জানিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার মিজদায় মিলিশিয়াদের হাত থেকে অক্ষত রক্ষা পাওয়া সাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, আরও বেশ কিছু বাংলাদেশি আটক রয়েছেন।

ত্রিপোলিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ সেকান্দার আলী এই প্রতিবেদককে বলেন, বিভিন্ন সময় এ ধরনের তথ্য আসে। এখনো কত বাংলাদেশি আটক, এটা নিশ্চিতভাবে জানা নেই। যেহেতু দুর্গম মরু এলাকা দিয়ে পাচারকারীরা লোকজনকে নিয়ে যায়, তাই এ নিয়ে নিশ্চিতভাবে তথ্য জানতে সময় লাগে। আরও বাংলাদেশি আটকে থাকার বিষয়ে দূতাবাস খোঁজ নেবে।