উখিয়ায় বিজিবির সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' তিন রোহিঙ্গা ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের উখিয়ার মিয়ানমার সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবির) সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনায় তিন ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বিজিবির দাবি, তিনজনই ইয়াবা ব্যবসায়ী। তাঁরা মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক।

আজ বৃহস্পতিবার ভোর চারটার দিকে উখিয়ার ৪ নম্বর রাজাপালং ইউনিয়নের তুলাতুলি জলিলের গোদা সেতুর কাছে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত তিন ব্যক্তি হলেন—নাইক্ষ্যংছড়ির তমব্রু কোনাপাড়ার রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের বাসিন্দা মৃত জবর মুল্লুকের ছেলে নুর আলম (৪৫), উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের জি ব্লকের ২৯ নম্বর বাসিন্দা হামিদ হোসেন ও উখিয়ার কুতুপালং-২ রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরের ডি-৪ ব্লকের বাসিন্দা সৈয়দ হোসেনের ছেলে নাজির হোসেন (২৫)।

বিজিবির ভাষ্য, নিহত তিনজনই ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে তিন লাখ ইয়াবা বড়ি, দেশীয় তৈরি দুটি পাইপগান ও ৫টি কার্তুজ জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিজিবির দুজন সদস্য আহত হয়েছেন।

উখিয়া সীমান্তের দায়িত্বে থাকা কক্সবাজার ৩৪ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ বলেন, মিয়ানমার থেকে ইয়াবার একটি বড় চালান বাংলাদেশে ঢুকবে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে তার নেতৃত্বে তমব্রু সীমান্ত চৌকির ১০ সদস্যের একটি বিজিবির টহল দল উখিয়ার ৪ নম্বর রাজাপালং ইউনিয়নের তুলাতুলি জলিলের গোদা সেতু থেকে আনুমানিক ৫০ গজ পশ্চিম দিকে রাস্তার ধারে ঢালুতে অবস্থান নেয়। ভোররাতে ১০-১২ জনের একটি দলকে পাহাড়ি এলাকা দিয়ে বাংলাদেশের দিকে আসতে দেখে তাদের চ্যালেঞ্জ করা হয়। এ সময় তারা বিজিবির সদস্যদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। জানমাল রক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায় বিজিবি। একপর্যায়ে পাহাড়ের জঙ্গলের ভেতর দিয়ে পালিয়ে যায় দলটি। পরে ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালালে তিন ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাদের উদ্ধার করে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অধিনায়ক আরও বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য তিনজনের লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিজিবির আহত দুই সদস্যকে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।

চলতি বছরে এ পর্যন্ত বিজিবির ৩৪ ব্যাটালিয়ন অভিযান চালিয়ে ১১ লাখ ৪১ হাজার ২৯৭টি ইয়াবা বড়ি জব্দ ও ৮৯ জনকে আটক করেছে। তাদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন ৯ জন।

২০১৮ সালের ৪ মে থেকে সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর মাদক ব্যবসায়ীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ছাড়াও র‍্যাব, বিজিবি ও পুলিশের সঙ্গে মানব পাচারকারী দালাল চক্র ও ডাকাত দলের গোলাগুলির ঘটনায় চারজন নারীসহ শুধু কক্সবাজার জেলায় ২৫৮ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৯৮ জন রোহিঙ্গা নাগরিক।