দুই শ টাকা ধার না পেয়ে মধুপুরে একই পরিবারের চারজনকে হত্যা

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

টাঙ্গাইলের মধুপুরে একই পরিবারের চারজনকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আজ মঙ্গলবার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন সাগর আলী। দুপুরে টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিনি এ জবানবন্দি দেন। গ্রেপ্তার অপর আসামি জোয়াদ আলীও রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

মধুপুরের ব্রাহ্মণবাড়ি গ্রামের মৃত মকবর আলীর ছেলে সাগর আলীকে (২৮) গত রোববার গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। সোমবার তাঁকে মধুপুর থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সাগর পেশায় রিকশাচালক। নিহত আবদুল গনির বাসার কাছেই মাস্টারপাড়া এলাকায় তিনি ভাড়া বাসায় থাকেন।

টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানভীর আহমেদ জানান, পুলিশের কাছে সাগর আলী আদালতে জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ার পর আজ দুপুরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাঁকে আনা হয়। সাগর এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসুল আলম জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। পরে সাগরকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

পুলিশ সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে সাগর স্বীকার করেছেন যে ঘটনার দিন সকালে দুই শ টাকা ধার চাইলে সাগর আলীকে খুব অপমান করেন আবদুল গনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সাগর। পরে তাঁর এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে চেতনানাশক ওষুধ সংগ্রহ করেন। রাতে আবদুল গনির বাড়িতে গিয়ে চেতনানাশক ওষুধ দিয়ে তাঁকে, তাঁর স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে অচেতন করে হত্যা করেন। পরে বাড়ি থেকে কিছু মালামালও লুট করেন।

মধুপুর থানার পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে জোয়াদ আলীকেও (৩০) গ্রেপ্তার করে। তিনি মধুপুরের ব্রাহ্মণবাড়ি গ্রামের আজগর আলীর ছেলে। গ্রেপ্তার জোয়াদ আলীকে সোমবার টাঙ্গাইল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক। রিমান্ডে জোয়াদ আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিক কামাল বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে জোয়াদ আলীর কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তাঁর দেওয়া তথ্য যাচাই করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

গত শুক্রবার মধুপুর উপজেলা সদরের মাস্টারপাড়া এলাকায় নিজ বাসা থেকে ব্যবসায়ী আবদুল গনি (৫২), তাঁর স্ত্রী তাজিরন বেগম (৪২), তাঁদের ছেলে তরিকুল ওরফে তাজেল (১৮) ও মেয়ে সাদিয়ার (৭) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁদের প্রত্যেকের শরীরের ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। এ ঘটনায় আবদুল গনির বড় মেয়ে সোনিয়া বেগম বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।