ইংরেজিতে ভর্তির যোগ্য মাত্র দুজন!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের অধীন ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন মাত্র দুজন। অথচ এই ইউনিট থেকে বিভাগটিতে ১২৫ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি হওয়ার কথা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে গত ১৪ আগস্ট প্রকাশিত ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি নির্দেশিকায় দেখা যায়, এ ইউনিট থেকে ইংরেজি বিভাগে ভর্তির জন্য পরীক্ষার্থীকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ২০০ নম্বরের ইংরেজি, ইংরেজিতে ন্যূনতম ‘এ’ গ্রেড (‘ও’ লেভেলের শিক্ষার্থীদের জন্য ‘সি’ গ্রেড) থাকতে হবে। ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজিতে ২০ ও ঐচ্ছিক ইংরেজিতে ১৫ নম্বর পাওয়ার শর্ত দেওয়া হয়।
পরে বিভাগীয় কর্তৃপক্ষের সুপারিশে ভর্তি পরীক্ষার মাত্র ১০ দিন আগে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ‘ঐচ্ছিক ইংরেজি’ (ইলেকটিভ ইংলিশ) উত্তর করা বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়। আর এই ঐচ্ছিক ইংরেজিতে ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম ১৫ পাওয়ার শর্ত দেওয়া হয়। আগে যাঁরা মাতৃভাষা হিসেবে বাংলা পড়েননি, তাঁদের জন্য এই অংশটির উত্তর দিতে হতো।
জানতে চাইলে ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তাহমিনা আহমেদ বলেন, ‘এটার প্রক্রিয়া অনেক আগে থেকেই চলছিল। বেশ কয়েক বছর ধরে বিভাগে আমরা ভালো শিক্ষার্থী আনার চেষ্টা করছি। কিন্তু ওই রকম যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষার্থী পাওয়া যাচ্ছে না।’
বিভাগে যাঁরা ভর্তি হন, তাঁরা পরে ভালো করতে পারেন না জানিয়ে তাহমিনা আহমেদ বলেন, এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে যে ভর্তি পরীক্ষায় একটা পরিবর্তন আনতে হবে। এক প্রশ্ন দিয়ে এতগুলো বিভাগের পরীক্ষা নেওয়ার সময় মনে হয় শেষ হয়েছে।
১৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত এ পরীক্ষার ফল গত মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত ফলে দেখা যায়, মোট ৪০ হাজার ৫৬৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯০ দশমিক ৫৫ শতাংশ শিক্ষার্থীই ফেল করেছেন। এর মধ্যে শুধু ইংরেজিতে ফেল করেছেন ২২ হাজার পরীক্ষার্থী।
অনুষদের নোটিশ বোর্ডে টাঙানো ফলে দেখা গেছে, যে তিন হাজার ৮৭৪ জন পাস করেছেন, তাঁদের মধ্যে মাত্র ১৭ জন ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হওয়ার আশায় পরীক্ষায় ‘ঐচ্ছিক ইংরেজি’ অংশের উত্তর দিয়েছিলেন। এঁদের মধ্যে পাস করেছেন ১৫ জন। কিন্তু মাত্র দুজন ১৫ নম্বরের বেশি পেয়েছেন। এই দুজন হলেন মেধাক্রম ৩-এ থাকা জান্নাতুল ফেরদৌস ও মেধাক্রম ১০৬-এ থাকা শাহবাজ আমিন।
বিভাগীয় কার্যালয় থেকে জানা গেছে, চলতি বছর এই বিভাগে ১৫০ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করার কথা। এর মধ্যে ১২৫ জনকে নেওয়ার কথা ছিল ‘খ’ ইউনিটের মাধ্যমে। অন্য ২৫ জনকে নেওয়ার কথা সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ‘ঘ’ ইউনিটের মাধ্যমে। এই ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আজ শুক্রবার।
‘খ’ ইউনিট ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়কারী ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক সদরুল আমিন বলেন, এবার আসন খালি রাখা হবে না। কিন্তু কীভাবে আসন পূরণ করা হবে, সে সম্পর্কে তিনি কিছু বলেননি। অবশ্য শর্ত শিথিলের জন্য গতকাল বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে তাঁর একটি বৈঠক হয়েছে বলে ডিন কার্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে।