চাষী নজরুল আর নেই

একুশে পদক পাওয়া প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। 
রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন চাষী নজরুল। তাঁর চিকিৎসক সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, আজ রোববার ভোর পাঁচটা ৫১ মিনিটে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই চলচ্চিত্র নির্মাতা। 

চাষী নজরুল ইসলাম
চাষী নজরুল ইসলাম

গতকাল শনিবার সকাল থেকে ‘লাইফ সাপোর্টে’ ছিলেন চাষী নজরুল। চিকিৎসক সৈয়দ আকরাম গতকাল জানিয়েছিলেন, সকাল ১০টার দিকে চাষী নজরুলের রক্তচাপ মারাত্মকভাবে কমে যায়। তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাস নিতেও খুব কষ্ট হচ্ছিল। এ অবস্থায় কৃত্রিমভাবেই তাঁর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যবস্থা করা হয়।

বেশ কিছুদিন ধরে এই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন চাষী নজরুল। গত বুধবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে সাধারণ কেবিন থেকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়।

গত বছরের মে মাস থেকে চিকিৎসক সৈয়দ আকরামের তত্ত্বাবধানে ছিলেন চাষী নজরুল। কয়েক মাস ধরে নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি। কয়েকবার তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পর অবস্থার উন্নতি হলে তিনি হাসপাতাল থেকে বাসায় চলে যান।

চাষী নজরুল ইসলাম ১৯৪১ সালের ২৩ অক্টোবর শ্রীনগর থানার সমষপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম মোসলেহ উদ্দিন খান। মা শায়েস্তা খানম। চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।

১৯৫৫ সালে টাটানগরে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্রে প্রথম অভিনয় করেন প্রখ্যাত এই নির্মাতা। ১৯৬০ সালে ফতেহ লোহানীর সঙ্গে ‘আসিয়া’ ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর কাজ করেন ওবায়েদ উল হকসহ আরও অনেকের সঙ্গে। অভিনয়ও করেন কিছু ছবিতে। ১৯৭২ সালে পরিচালনা করেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম পূর্ণাঙ্গ ছবি ‘ওরা ১১ জন’। ছবিটি দারুণ প্রশংসিত হয়। 

চাষী নজরুল ইসলাম সব মিলিয়ে ৩৫টির মতো ছবি নির্মাণ করেন। এর মধ্যে ছয়টি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক। তাঁর পরিচালিত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো—‘সংগ্রাম’, ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’, ‘মেঘের পরে মেঘ’, ‘ধ্রুবতারা’, ‘শহীদ ক্যাপ্টেন সালাউদ্দীন’, ‘দেবদাস’, ‘শুভদা’, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘হাছন রাজা’, ‘শাস্তি’, ‘সুভা’ ইত্যাদি।