এক থানার জনবল দিয়ে চলছে চার থানা

চার থানা নিয়ে গঠিত বরিশাল মহানগর (বিএমপি) পুলিশের নেই পর্যাপ্ত জনবল। মেট্রোপলিটন এলাকার প্রায় ১২ লাখ মানুষের জন্য পুলিশ আছে মাত্র ১ হাজার ১৯১ জন। এতগুলো মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন।
মেট্রোপলিটন পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ড, সদর উপজেলাসহ আশপাশের দুই উপজেলার ১০ ইউনিয়ন নিয়ে বর্তমান আয়তন ৩৭০ বর্গকিলোমিটার। ২০০৬ সালে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের যাত্রা শুরু। সে সময় ১ হাজার ২৮৯ জন সদস্য নিয়ে গঠিত মহানগর পুলিশের চার থানার কাজ চালাত কোতোয়ালি থানা। বর্তমানে কোতোয়ালি মডেল থানা, কাউনিয়া থানা, নৌবন্দর ও বিমানবন্দর চার থানা নিয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কাজ করছে। কিন্তু জনবল বাড়েনি। বর্তমানে চার থানার জন্য বরাদ্দ আছেন ১ হাজার ৩০৬ জন। তার মধ্যে পদ শূন্য রয়েছে ১১৬টি। বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন ১ হাজার ১৯১ জন পুলিশ সদস্য।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারের পদ দীর্ঘদিন শূন্য। অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারের দুটি পদই শূন্য। সহকারী পুলিশ কমিশনারের ২০ পদের ১৩টি শূন্য। পুলিশ পরিদর্শকের ৩৩ পদের দুটি শূন্য। উপপরিদর্শকসহ (ট্রাফিক সার্জেন্ট, টিএসআই) ১৪৫ পদের ৩৫টি শূন্য। কনস্টেবল ১০টি পদ এবং বেসরকারি (সিভিল) প্রশাসনের ৫১ পদের ৪১টি শূন্য। এ ছাড়া সহকারী পুলিশ উপপরিদর্শকের ছয়টি ও নায়েক পদের ছয়টি শূন্য আছে।
কয়েক বছর আগে প্রতি থানার জন্য ২ হাজার ৭০০ জনবল বাড়ানোর একটি প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু সেখানে মাত্র ২৭টি ট্রাফিক পুলিশের পদ বৃদ্ধি করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালের ৩ মার্চ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের জন্য ৫ হাজার ৯০ জনের নতুন পদ সৃষ্টির একটি প্রস্তাব পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানো হয়। একই বছরের ১৩ মে ওই প্রস্তাব পুলিশের সদর দপ্তর থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
মেট্রোপলিটন পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার আজাদ রহমান বলেন, ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, চার থানার লোকসংখ্যা ছিল ৭ লাখ ৯২ হাজার ১১৯ জন। বর্তমানে ওই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৭৪ হাজার ৫০০-এ।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (সদর) শোয়েব আহমেদ বলেন, ২ হাজার ৬৯৬ জন মানুষের নিরাপত্তার জন্য একজন পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন। এর সঙ্গে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে একটা অংশ বিভিন্ন দপ্তরের নিরাপত্তা, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা, বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার দায়িত্ব, দরপত্র আহ্বান-প্রক্রিয়াসহ বিভিন্ন কাজে পাঠাতে হয়। সে কারণে সার্বিক নিরাপত্তায় (অপারেশনাল) জনবল আরও কমে যায়।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শৈবাল কান্তি চৌধুরী বলেন, এক থানার জনবল দিয়ে চার থানার সার্বিক নিরাপত্তা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। জনবল বরাদ্দ হলে আর সমস্যা থাকবে না।