দেশজুড়ে একই আওয়াজ 'চলো বাংলাদেশ'

ঢাকার মিরপুরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে ‘চলো বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে (বাঁ থেকে) তামিম ইকবালের মা নুসরাত ইকবাল খান, নাসির হোসেনের বাবা গোলাম হোসেন ও মা আমিরা খাতুন, মুশফিকুর রহিমের বাবা মাহবুব হামিদ, এনামুল হকের বাবা জামির মিয়া, আরাফাত সানির মা নার্গিস আক্তার, তাসকিন আহমেদের বাবা আবদুর রশিদ ও মা সাবিনা ইয়াসমিন। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলকে শুভেচ্ছা জানাতে গ্রামীণফোন ও প্রথম আলো গতকাল দেশের সব জেলায় একযোগে এই আয়োজন করে l ছবি: প্রথম আলো
ঢাকার মিরপুরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে ‘চলো বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে (বাঁ থেকে) তামিম ইকবালের মা নুসরাত ইকবাল খান, নাসির হোসেনের বাবা গোলাম হোসেন ও মা আমিরা খাতুন, মুশফিকুর রহিমের বাবা মাহবুব হামিদ, এনামুল হকের বাবা জামির মিয়া, আরাফাত সানির মা নার্গিস আক্তার, তাসকিন আহমেদের বাবা আবদুর রশিদ ও মা সাবিনা ইয়াসমিন। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলকে শুভেচ্ছা জানাতে গ্রামীণফোন ও প্রথম আলো গতকাল দেশের সব জেলায় একযোগে এই আয়োজন করে l ছবি: প্রথম আলো

শুক্রবার বিকেল। ঢাকার মিরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামের গ্যালারি কানায় কানায় ভরা। যাঁরা এসেছেন, তাঁরা বেশির ভাগই বয়সে তরুণ। দেশের ক্রিকেটের প্রতি এই তরুণদের ভালোবাসা কতটা তীব্র, তা বোঝা গেল ‘চলো বাংলাদেশ’ চিৎকারে। গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে তাঁরা যেন শুভেচ্ছাবার্তা পৌঁছে দেবেন অস্ট্রেলিয়ায় থাকা টাইগারদের কাছে।
শুধু ঢাকা নয়, ফাগুনের প্রথম দিনে গতকাল শুক্রবার দেশের ৬৪ জেলাতেই একযোগে অনুষ্ঠিত হয় ‘চলো বাংলাদেশ’। ক্রিকেট বিশ্বকাপে টাইগারদের শুভেচ্ছা জানাতে গ্রামীণফোন ও প্রথম আলো এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ঢাকার অনুষ্ঠান শুরু হয় বেলা তিনটায়। তবে অনুষ্ঠান শুরুর অনেক আগেই দর্শকদের বিশাল সারি ছাড়িয়ে যায় স্টেডিয়ামের চারপাশ। দর্শক মাতিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করে ব্যান্ডদল শূন্য। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, খুলনাসহ বিভিন্ন স্থানে চলছিল অনুষ্ঠান। পর্দায় সরাসরি সেসব অনুষ্ঠানও দেখানো হয়। 
বিকেল সাড়ে চারটায় দেশের গান নিয়ে একে একে মঞ্চে আসেন শিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদী, আবিদা সুলতানা, পার্থ বড়ুয়া ও আইয়ুব বাচ্চু। তাঁদের গানে লাল-সবুজ পতাকা হাতে মঞ্চে নৃত্য পরিবেশিত হয়। আইয়ুব বাচ্চু এ সময় বলেন, ‘আমরা সারা বাংলাদেশ টাইগারদের দিকে তাকিয়ে আছি। তাদের শুভেচ্ছা জানাতেই আজকের অনুষ্ঠান।’ 
গানের পর একে একে মঞ্চে আসেন সেই সব তারকা, যাঁরা পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে উজ্জ্বল করেছেন। এঁদের মধ্যে ছিলেন ১৬ বার জাতীয় টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়ন ও গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম ওঠানো জোবেরা রহমান লিনু, এভারস্টেজয়ী পর্বতারোহী এম এ মুহিত, জাতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের অধিনায়ক সালমা খাতুন, ফুটবলার বিপ্লব ভট্টাচার্য, কমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী শ্যুটার আসিফ হোসেন খান ও জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম। তাঁরাও বাংলাদেশ দলকে শুভেচ্ছা জানান।
এরপর মঞ্চে আসেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক তারকারা, যাঁদের হাত ধরে এগিয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। এঁদের মধ্যে ছিলেন সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদ, আকরাম খান, হাবিবুল বাশার, খালেদ মাসুদ, ক্রিকেটার আতহার আলী খান ও জাভেদ ওমর।
এরপর মঞ্চে আসেন ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিমের বাবা মাহবুব হামিদ, আনামুল হকের বাবা জামির মিয়া, নাসির হোসেনের বাবা গোলাম হোসেন, তামিম ইকবালের মা নুসরাত ইকবাল খান, তাসকিনের বাবা আবদুর রশিদ ও মা সাবিনা ইয়াসমিন। এ সময় স্টেডিয়ামের সব দর্শক তাঁদের শুভেচ্ছা জানান। পরে তাঁদের হাতে শুভেচ্ছা স্মারক তুলে দেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান এবং গ্রামীণফোনের প্রধান করপোরেট কমিউনিকেশন কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান। 
এ সময় মুশফিকের বাবা মাহবুব হামিদ বলেন, ‘আপনারা সবাই আমাদের সন্তানদের জন্য দোয়া করবেন। বাংলাদেশের জন্য দোয়া করবেন।’ এরপর তিনিও দর্শকদের সঙ্গে চিৎকার করে বলেন, চলো বাংলাদেশ। 
অনুষ্ঠানে এর পরের পর্বে ছিল চলো বাংলাদেশ গানটি। শিল্পীদের সঙ্গে পুরো স্টেডিয়াম একসঙ্গে গেয়ে ওঠে চলো বাংলাদেশ, চলো বিশ্ব উঠোনে। চলো বাংলাদেশ, চলো বিজয়ের টানে। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে গান পরিবেশন করে ব্যান্ড দল নেমেসিস।
পুরো অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করে ১৩টি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল। এগুলো হলো চ্যানেল আই, এনটিভি, মাছরাঙা, বাংলাভিশন, বৈশাখী টিভি, চ্যানেল নাইন, এশিয়ান টিভি, মাই টিভি, ইটিভি, আরটিভি, এটিএন নিউজ, যমুনা টিভি ও জিটিভি।