চিনি নিয়ে বিপাকে রংপুর চিনিকল

গাইবান্ধার রংপুর চিনিকলে তিন হাজার ২৪৬ মেট্রিক টন চিনি অবিক্রীত রয়ে গেছে। এসব চিনি বস্তাবন্দী অবস্থায় দুই বছর ধরে গুদামে পড়ে থেকে গলে যাচ্ছে।
এদিকে আগামী নভেম্বরে ২০১৩-১৪ মৌসুমের আখ মাড়াই শুরু হবে। উৎপাদিত এ চিনি কোথায় রাখা হবে, তা নিয়েও কর্তৃপক্ষ চিন্তিত। পাশাপাশি চিনি বিক্রি না হওয়ায় শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়া যাচ্ছে না।
চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল খালেক বলেন, দেশের বেসরকারি চিনিকলে উৎপাদিত প্রতি কেজি চিনি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প সংস্থা নিয়ন্ত্রিত চিনিকলে উৎপাদিত প্রতি কেজির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা। ফলে সরকারি চিনিকলে গত দুই মৌসুমে উৎপাদিত অধিকাংশ চিনি অবিক্রীত থেকে গেছে। এই চিনির মূল্য ১৬ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
তিনি আরও জানান, গত দুই বছরে এখান থেকে মাত্র এক হাজার মেট্রিক টন চিনি বিক্রি হয়েছে। এর অর্ধেক রেশন প্রদানের জন্য পুলিশ বিভাগ কিনেছে। বাকিটা রপ্তানি করেছে সরকার।
চিনি গলে যাওয়ার কথা স্বীকার করে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরও বলেন, দ্রুত এ চিনি বিক্রি করা না গেলে এর গুণগতমান খারাপ হবে। তখন বিক্রিতে আরও সমস্যা হবে।
চিনিকল সূত্র জানায়, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নে অবস্থিত এ মিলে গত দুই মৌসুমে তিন হাজার ২৪৬ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন হয়। মিলের তালিকাভুক্ত ডিলারদের চিনি তুলে বিক্রি করার কথা। কিন্তু মিলের ১৫ জন ডিলার গত দুই মৌসুমে এক বস্তা চিনিও তোলেননি।
মিলের মহিমাগঞ্জ এলাকার ডিলার আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে খোলাবাজারে চিনির দাম কম। এখান থেকে চিনি তুললে লোকসান গুনতে হবে। তাই তুলিনি।’
রংপুর চিনিকল আখচাষি কল্যাণ গ্রুপের সভাপতি জিন্নাত আলী প্রধান অভিযোগ করেন, চিনিশিল্প সংস্থার ভুল নীতির কারণে এ মিলে এত চিনি অবিক্রীত রয়েছে। সংস্থাটি বেসরকারি চিনিকলগুলোর সঙ্গে বাজারে চিনির মূল্য কী হবে, তা নির্ধারণ করেনি। তাই চিনিকলকে বিপাকে পড়তে হয়েছে।