লোকবলের অভাবে জামালপুরের চারটি রেলস্টেশন বন্ধ, দুর্ভোগ

পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে জামালপুরের চারটি স্টেশন বন্ধ আছে। আরও তিনটি স্টেশন প্রতিদিন অর্ধেক সময় বন্ধ থাকে। এতে ট্রেনে যাতায়াত ও টিকিট কাটা নিয়ে যাত্রীরা পড়েছেন দুর্ভোগে। যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনার শঙ্কা করছেন অনেকে।
জামালপুর রেলস্টেশন সূত্রে জানা যায়, জামালপুরে ১০৮ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে ১৯টি স্টেশন আছে। এর মধ্যে ইসলামপুরের মোশারফগঞ্জ স্টেশন দুই বছর, জামালপুর কোর্ট স্টেশন চার মাস, কেন্দুয়া বাজার স্টেশন ছয় মাস ও সরিষাবাড়ীর বাউশি স্টেশন দুই বছর ধরে বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়াও পিয়ারপুর স্টেশন, নান্দিনা স্টেশন ও দুরমুঠ স্টেশন সকাল ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত খোলা থাকে। বাকি সময় ওই স্টেশনগুলো বন্ধ থাকে। এদিকে প্রত্যেক স্টেশনে একজন স্টেশন মাস্টার ও সহকারী মাস্টার এবং চারজন করে পয়েন্টম্যান থাকার কথা। অথচ তিনটি স্টেশনে শুধু একজন করে মাস্টার রয়েছে।
কয়েকজন ট্রেনযাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্টেশনগুলো বন্ধ থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগের সীমা নেই। কারণ একটি ট্রেন যদি ইসলামপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে আসে, তখন অন্য আরেকটি ট্রেন জামালপুর বা মেলান্দহ স্টেশনে না আসা পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় এ অঞ্চলের মানুষ রেলপথের ওপর নির্ভরশীল।
জুবাইদুর রহমান নামের এক যাত্রী বলেন, তিনি জামালপুর স্টেশন থেকে ইসলামপুরে যাবেন একটি লোকাল ট্রেনে। ট্রেনটি স্টেশনে প্রায় ৩০ মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে আছে। কারণ স্টেশন বন্ধ থাকায় মেলান্দহ স্টেশন থেকে ছেড়ে আসা অন্য একটি ট্রেন জামালপুর না পৌঁছা পর্যন্ত এ ট্রেনটি যাবে না। তাই সময় নষ্ট হলেও ট্রেনেই যেতে হবে।
এদিকে স্টেশন বন্ধ থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন অনেকে। দুরমুঠ স্টেশন বন্ধ থাকায় ফেব্রুয়ারির মাসে জামালপুর থেকে দেওয়ানগঞ্জগামী একটি লোকাল ট্রেন রাতে এক লাইন থেকে অন্য লাইনে চলে যায়। সে সময় ট্রেনের চালক বিষয়টি টের পেয়ে ট্রেনটি থামিয়ে দিয়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ান।
যাত্রীসেবা নিশ্চিত করার দাবিতে আন্দোলন করা জামালপুর রেল জংশন কমিটির উপদেষ্টা সদস্য এম এ জলিল বলেন, ‘রেল যোগাযোগের ভোগান্তি রোধ, আধুনিকায়ন, অতিরিক্ত ট্রেন ও লোকবল সংকটের বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় আমরা বলে আসছি। কিন্তু কাজই করা হচ্ছে না।’
জামালপুরের স্টেশনমাস্টার জহুরুল ইসলাম বলেন, ওই সব স্টেশনে লোকবল না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে সেগুলো বন্ধ রয়েছে। এতে ট্রেনের সময়সূচি বিপর্যয়ে পড়েছে। আর জামালপুর স্টেশনে বেশির ভাগ ট্রেনের ক্রসিং দেওয়া হচ্ছে। ফলে ট্রেনগুলোকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে।