পুলিশ ও সাংবাদিকের ওপর চড়াও হলেন এএসপি

রাজধানীর শাহবাগে তল্লাশিচৌকিতে মোটরসাইকেল থামানোয় পুলিশের ওপর চড়াও হয়েছেন এক শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি)। ওই মোটরসাইকেলে সঙ্গে ছিলেন তাঁর বন্ধু ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতা। এরপর তাঁরা দুজন মারধর করেন সেখানে থাকা একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের এক সাংবাদিক ও ক্যামেরাপারসনকে।
গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলেছে, শিক্ষানবিশ এএসপি ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মদ্যপ অবস্থায় এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। ঢাকা জেলায় কর্মরত ওই এএসপি মশিউর রহমানকে আটকের পর হাতকড়া পরিয়ে শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার সকালে তাঁকে ঢাকা জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাঁর বন্ধু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আতিকুল বাশারকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি একটি বেসরকারি রেডিওতে কর্মরত।
মারধরের শিকার এশিয়ান টিভির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক নুরে আলম ও ক্যামেরাপারসন দিদার হোসেন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ঘটনায় এশিয়ান টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক সেলিম খান শাহবাগ থানায় জিডি করেছেন। তবে তল্লাশিচৌকিতে হামলার শিকার পুলিশের উপপরিদর্শক তাঁর নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছেন।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহীদুল হক গতকাল বলেন, শাহবাগে সাংবাদিকদের ওপর হামলাকারী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনা তদন্তে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কমিটির প্রধান হলেন ডিএমপির ট্রাফিক (দক্ষিণ) যুগ্ম কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার ইব্রাহিম খান ও সহকারী কমিশনার (শৃঙ্খলা) হেলাল উদ্দীন।
মারধরের শিকার সাংবাদিক নুরে আলম জানান, তাঁরা ঢাকার নিরাপত্তা নিয়ে প্রতিবেদনের জন্য শাহবাগে পুলিশের তল্লাশিচৌকির ফুটেজ নিচ্ছিলেন। এ সময় একটি মোটরসাইকেলকে তল্লাশিচৌকিতে থামায় পুলিশ। এতে ওই মোটরসাইকেলের পেছনে বসা শিক্ষানবিশ এএসপি মশিউর রহমান সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের বকাঝকা শুরু করেন। চেঁচামেচি করেন চালকের আসনে থাকা আতিকুলও। একপর্যায়ে এশিয়ান টিভির ক্যামেরাপারসন দিদারকে ফুটেজ নিতে দেখে দুজনই দিদারের ওপর চড়াও হন। তিনি এগিয়ে গেলে তাঁকেও মারধর করেন ওই দুজন। তাঁদের রক্ষায় এগিয়ে আসা পুলিশ সদস্যকেও মারধর করা হয়। এরপর দুজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে চলে যান। কিন্তু কয়েক মিনিট পর ফিরে এসে আবারও তাঁদের মারধর করেন। তাঁরা দৌড়ে শাহবাগ থানায় ঢুকে পড়লে থানার ওসি এসে মশিউর ও আতিকুলকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন।
শাহবাগ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, মোটরসাইকেল আরোহী পুলিশ কর্মকর্তা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দুজনই মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। টেলিভিশনের সাংবাদিকেরা ছবি তোলায় একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁরা মারধর করেন। পুলিশ সদস্য এগিয়ে গেলে তাঁরা পুলিশের ওপরও চড়াও হন।