পরিবার জানে না, 'অপহৃত' ব্যক্তি ভারতে

বছর তিনেক ধরে ভারতে আছেন খুলনার দাকোপ উপজেলার কৈলাশগঞ্জ গ্রামের সুভাষ গাইন (৪৫)। অথচ তাঁকে অপহরণ করে গুম করা হয়েছে উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন কৈলাশগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল।
গত ১৯ মার্চ করা ওই মামলায় খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ ননী গোপাল মণ্ডলসহ ৩২ জনকে আসামি করা হয়েছে। ৬ এপ্রিল আদালতে সুভাষ গাইন গুম হননি এবং ভারতে আছেন বলে সাক্ষ্য দেন তাঁর ছোট বোন কাজল লতা গাইন। এ সময় সুভাষের বড় ভাই কৃষ্ণপদ গাইনের নোটারি করা একটি লিখিত হলফনামাও আদালতে দাখিল করা হয়। ওই দিন খুলনা বিচারিক হাকিমের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আসামিদের জামিন মঞ্জুর করা হয়।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, কৈলাশগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের আগে গত ১৮ মার্চ রাতে ননী গোপালসহ ৪০০-৫০০ ব্যক্তি আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী মিহির মণ্ডলকে হত্যার উদ্দেশ্যে নির্বাচনী অফিস ও অফিস-সংলগ্ন রবীন্দ্রনাথের বাড়িতে হামলা করেন। হামলায় রবীন্দ্রনাথসহ কয়েকজন আহত হন। আসামিরা চলে যাওয়ার সময় মিহির মণ্ডলের নির্বাচনী কর্মী সুভাষ গাইনকে অপহরণ করে নিয়ে যান। বাদী ধারণা করছেন, সুভাষকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়েছে।
কাজল লতা গাইন বলেন, ‘সুভাষ ভারতে আছেন। প্রায় তিন বছর আগে বাবার মৃত্যুর সময় একবার এসেছিলেন। নির্বাচনের সময় আসার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। যে মামলা করেছে আমরা তাকে চিনি না। আমাদের সঙ্গেও তার কোনো কথা হয়নি।’
মামলার বাদী রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, ‘ঘটনার দিন সুভাষ আমাদের সঙ্গেই ছিলেন। ঘটনার পর থেকে তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলিনি। সুভাষ যদি ভারতেই থাকেন এবং ওঁরা (পরিবারের সদস্যরা) জানে তাহলে তাঁরা তাঁকে এনে দিক।’
এলাকাবাসী জানান, ১৮ মার্চ রাতে ননী গোপালকে মিহির মণ্ডলের নির্বাচনী অফিসে থাকা সমর্থকেরা লাঞ্ছিত করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে রবীন্দ্রনাথের বাড়িতে হামলা করেন। এ সময় কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন তাঁরা। এ ঘটনার পর রবীন্দ্রনাথ মামলা করেন। এতে সুভাষকে অপহরণ ও গুমের অভিযোগ করা হয়।
দাকোপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন বলেন, ‘মামলাটির তদন্ত চলছে। সুভাষ কোথায় আছেন জানি না। তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’