জয়নাল হাজারী তিন আসনে প্রার্থী

জয়নাল হাজারী
জয়নাল হাজারী

আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত সাবেক সাংসদ জয়নাল হাজারী আজ সোমবার ফেনীর তিনটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বিকেল পাঁচটার দিকে তাঁর পক্ষে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে এসব মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়।
আজ সকালে নিজাম উদ্দিন হাজারী ফেনী-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। বিকেলে ওই আসনেই জয়নাল হাজারীর পক্ষে মাজাহারুল ইসলাম ও মো. ইউছুফ মনোনয়নপত্র জমা দেন।
ফেনী-২ আসনে জয়নাল হাজারী ও নিজাম হাজারী ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দেননি।
জয়নাল হাজারী একসময় ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ফেনী-২ (ফেনী সদর) আসন থেকে ১৯৮৬, ’৯১ ও ’৯৬ সালে সাংসদ নির্বাচিত হন দোর্দণ্ড প্রতাপশালী ও বিতর্কিত এই নেতা। মূলত ১৯৯৬ সালের পর তিনি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। সে সময় ফেনী পরিণত হয় সন্ত্রাসের জনপদে। ১৯৯৬-২০০১ সালেই ফেনীতে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের শিকার হয়ে প্রায় ১২০ জন রাজনৈতিক নেতা-কর্মী মারা যান।
২০০১ সালের তত্ত্ব্বাবধায়ক সরকারের সময় ১৬ আগস্ট রাতে যৌথ বাহিনী তাঁর বাড়িতে অভিযান চালায়। তিনি তখন পালিয়ে আত্মগোপনে ভারতে চলে যান। ২০০৪ সালের এপ্রিলে জয়নাল হাজারীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে তিনি ভারত থেকে দেশে ফিরে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। জামিন পেয়ে তিনি আবারও পুরোনো কায়দায় তত্পরতা শুরু করেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে তাঁরই অতি ঘনিষ্ঠ শিষ্য নিজাম উদ্দিন হাজারী চট্টগ্রাম থেকে ফেনী এসে প্রথমে যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ২০১০ সালের পর তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হয়ে ধীরে ধীরে এই আসনে তাঁর অবস্থান সৃদৃঢ় করেন। এ নিয়ে জয়নাল হাজারীর সঙ্গে নিজাম হাজারীর ক্ষমতার দ্বন্দ্ব শুরু হয়। জয়নাল হাজারীর সন্ত্রাসী বাহিনী ‘ক্লাস কমিটির’ বেশির ভাগ ক্যাডার নিজাম হাজারীর সঙ্গে যোগ দেয়। এতে জয়নাল হাজারী অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েন। তিনি ফেনী ত্যাগ করে ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। মাঝেমধ্যে ফেনী এলেও অল্প সময় থেকে চলে যেতেন।

২০১২ সালের শুরুতে নিজাম উদ্দিন হাজারী ফেনী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন এবং একই বছরের ২৭ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে জেলা সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।