অন্তত ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির আশ্বাস সাকিবের

নির্বাচন সামনে রেখে তরুণদের সঙ্গে কথা বলেন মাগুরা-১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাকিব আল হাসান। ৩১ ডিসেম্বর, নোমানী ময়দান, মাগুরাছবি: প্রথম আলো

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাগুরায় তরুণদের সঙ্গে কথা বললেন সাকিব আল হাসান। জেলার বেকার সমস্যা সমাধানে অন্ততপক্ষে ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ওয়ার্ল্ড ক্লাস ক্রিকেট একাডেমি গড়ে তোলা, ফ্রি ওয়াই–ফাই জোন তৈরি, কৃষি খাতের আধুনিকায়নসহ বিভিন্ন উন্নয়ন–পরিকল্পনার কথা জানালেন মাগুরা–১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় শহরের নোমানী ময়দানে ‘ইয়ুথ টক উইথ সাকিব মঞ্চ’ থেকে নতুন প্রজন্মের ভোটারদের নানা প্রশ্নের উত্তর পর্বে নিজের এসব পরিকল্পনার কথা জানান জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। সন্ধ্যা সাতটায় মঞ্চে ওঠেন সাকিব। আওয়ামী লীগের রোড টু স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচির ফোকাল পয়েন্ট সুফি ফারুক ইবনে আবুবকরের সঞ্চালনায় সেখানে উপস্থিত কয়েক শ তরুণ ভোটারের মধ্য থেকে ১১ জন জেলার স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ক্রীড়াঙ্গনের মানোন্নয়ন, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি নির্বাচনী এলাকার মানুষের কল্যাণে নিজস্ব পরিকল্পনার বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন ও সাকিবের পরিকল্পনা জানতে চান। নতুন প্রজন্মের কাছ থেকে পাওয়া এসব প্রশ্নের বিপরীতে একে একে জবাব দেন মাগুরা–১ আসনের নৌকার প্রার্থী।

অনুষ্ঠানে কাইয়ুম নামের এক তরুণ মাগুরার খেলাধুলার উন্নয়নে পরিকল্পনা কী, তা জানতে চান। প্রশ্নের জবাবে সাকিব বলেন, ‘আমি চাই খেলাধুলার প্রতিটি সেক্টরেই যেন উন্নয়ন হয়। আমি যত দূর জানি, মাগুরায় ভালো ফুটবলার তৈরি হচ্ছে। ক্রিকেটটা সামহাউ (যেকোনো কারণে) ওভাবে ডেভেলপ (উন্নতি) হয়নি, যেভাবে হওয়ার কথা ছিল। সেটা থেকে আসে আসলে মাঠের সংকট। আমাদের ওভাবে কোনো ডেজিগনেটেড (আলাদা) ক্রিকেট স্টেডিয়াম নেই, যেটা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। মাগুরার মতো এমন ছোট জেলায় এ রকম স্টেডিয়াম করা সম্ভব হবে কি না, আমি জানি না। তবে আমার একটা সুপ্ত ইচ্ছা আছে, যাতে আমরা (মাগুরায়) ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচের আয়োজন করতে পারি। আমাদের স্টেডিয়ামে আমার মনে হয় সে রকম জায়গা আছে, যেখানে আমরা ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ আয়োজন করতে পারি। আর অন্যান্য স্পোর্টস নিয়ে আমি এখন বলতে পারব না খুব বেশি।’

ক্রিকেট একাডেমির প্রশ্নে সাকিব বলেন, ‘অনেক দিনের শখ ছিল মাগুরায় একটা একাডেমি করব। সেটা করতে না পেরে আসলে ঢাকাতেই একটা করে ফেলেছি। তবে আমি আশাবাদী, এবার মাগুরায় ওই রকমই বিশ্বমানের একটা একাডেমি বা ওইটারই একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি এখানে তৈরি করা হবে, যেটার সব সুযোগ-সুবিধা খুলনা বিভাগের মানুষ বা বাংলাদেশের সব স্তরের মানুষই এখানে পাবে। মাগুরার মানুষের যে সুবিধাটা হবে, সেটা হচ্ছে তারা ঘর থেকে গিয়ে ট্রেনিংটা করতে পারবে।’

আগামী নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে মাগুরার শিল্পায়নে উদ্যোগ নেবেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিব বলেন, ‘মাগুরা কৃষিপ্রধান একটি ছোট জেলা। এখানে শিল্পের বিপ্লব ঘটেনি। প্রসার খুব কম। কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে পারি। যদিও সেটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ; কিন্তু নির্বাচিত হলে সেই চ্যালেঞ্জ নিতে পারব। যেহেতু কৃষিপ্রধান অঞ্চল, সেটিকে কীভাবে আরও ডেভেলপ করা যায়, সেটি নিয়ে কাজ করা যেতে পারে।’

বেকার সমস্যা সমাধানে পরিকল্পনা আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিব বলেন, ‘আমার অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল জেলার বেকার সমস্যা সমাধানে একটি ভূমিকা রাখা। অন্ততপক্ষে ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। রাজনীতির প্ল্যাটফর্মে থেকে এটি করা সম্ভব। আমি নিজেও আশাবাদী, সেটি করতে পারব।’

একইভাবে অন্য তরুণ ভোটারদের প্রশ্নের জবাবে সাকিব বলেন, ‘একটি নির্দিষ্ট দিক নয়, সমষ্টিগত উন্নয়নের জন্য কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এখানকার সাধারণ মানুষের প্রথম চাওয়া নিজেদের নিরাপত্তা। এরপর মূলত তাদের মৌলিক অধিকারগুলো যেন নিশ্চিত হয়, সেটি। এটি যে পাচ্ছে না, তা নয়। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সেই হিসেবে তারাও উপযুক্ত সময়ের মধ্যে নিজেদের অধিকার বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা চায়। অবশ্যই সেটি নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাব, যদি আমাকে নির্বাচিত করা হয়।’