বিভিন্ন দেশের মুদ্রার দরপতনের শঙ্কা 

মূল্যবৃদ্ধিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে আমেরিকার শীর্ষ ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ বৃহস্পতিবার নীতি সুদহার আরও ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি করেছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই খবর আসে, তিন দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ সুদ বৃদ্ধির পথে হেঁটেছে ব্রিটেনের ব্যাংক অব ইংল্যান্ড। তারাও ৭৫ ভিত্তি পয়েন্ট সুদ বাড়িয়ে তা নিয়ে গেছে ৩ শতাংশে। 

অর্থনীতিবিদদের বিশ্লেষণ, নীতি সুদহার বৃদ্ধির ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনে মন্দার আশঙ্কা গভীরতর হলো। এর জেরে বিশ্ব অর্থনীতি আরও ধাক্কা খেতে পারে। বিশেষ করে বিপাকে পড়বে উন্নয়নশীল দেশগুলো। তাদের মুদ্রা আরও দুর্বল হলে তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের আমদানি খরচ বাড়বে। চাপ বাড়বে অর্থনীতিতে। খবর সিএনএনের 

অর্থনীতিবিদেরা মনে করেন, নীতি সুদহার বৃদ্ধির ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঋণপত্রের বাজার বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় হবে। বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশ থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে তা দিয়ে ডলার কিনে ঋণপত্র কেনার প্রবণতা বাড়বে। তাতে ডলারের চাহিদা ও দাম বাড়বে। ডলারের নিরিখে কমবে বিভিন্ন দেশের স্থানীয় মুদ্রার মান। ইতিমধ্যে ফেডের নীতি সুদহার বৃদ্ধির ঘোষণায় ভারতীয় মুদ্রা রুপির দরপতন হয়েছে।

অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা এখন সারা বিশ্বকেই তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। আর সেই আশঙ্কায় মার্কিন ডলার আরও শক্তিশালী হচ্ছে। আবার একই সময়ে আর্থিক খাতে নিয়ন্ত্রণমূলক নানা পদক্ষেপ মন্দার আশঙ্কা আরও ত্বরান্বিত করছে। বহুজাতিক ব্যাংক এইচএসবিসির কৌশলবিদ জোয়ে চিউ এ কথা বলেছেন।

মার্কিন ডলার যে উত্তাপ ছড়াচ্ছে, সেটা পৃথিবীর নানা প্রান্তে, নানা পেশার, এমনকি সাধারণ মানুষ পর্যন্ত টের পাচ্ছে। মার্কিন ডলারের শক্তিটাই এমন যে তার যেকোনো নড়াচড়া নানা প্রান্তের সব স্তরের মানুষকেই স্পর্শ করে। বর্তমান বাস্তবতায় সেটি আরও বেশি করে অনুভূত হচ্ছে। 

আর মন্দা এড়াতে ফেডারেল রিজার্ভ যেভাবে নীতি সুদহার বৃদ্ধি করছে, তাতে ডলারে বন্ড কেনা আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। অর্থাৎ ডলারের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং পরিণামে অন্যান্য মুদ্রার দরপতন হচ্ছে।

বাজারব্যবস্থা যখন অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করে, অনিশ্চয়তায় ভোগে, বিনিয়োগকারীরা তখন নিরাপদ আশ্রয় খুঁজতে থাকে। অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা আর অস্থিরতা সারা বিশ্বের বিনিয়োগকারীদের মার্কিন ডলারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। 

নীতি সুদ বৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে এখন ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। বিশেষ করে যুক্তরাজ্যের অবস্থা খুবই নাজুক। জীবনযাপনের খরচ অনেকটাই বেড়েছে সেখানে। এ বাস্তবতায় নীতি সুদহার বৃদ্ধি অবশ্যম্ভাবী। আর তাতে মন্দার আশঙ্কাও বাড়ছে।