বরখাস্ত শ্রমিকদের ছবি পাঠানো হচ্ছে অন্য কারখানায়

আশুলিয়ার রপ্তানিমুখী বিভিন্ন পোশাক কারখানা থেকে বরখাস্ত হওয়া শ্রমিকদের নামের তালিকা ও ছবি আশপাশের অন্যান্য কারখানায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন মালিকেরা। এতে চাকরি হারানো শ্রমিকেরা এখন অন্য কারখানায়ও কাজের সুযোগ পাচ্ছেন না। মজুরি বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনের কারণে সম্প্রতি এসব পোশাকশ্রমিককে বরখাস্ত করা হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গার্মেন্ট শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের দেওয়া এক স্মারকলিপিতে এ কথা বলা হয়েছে। সংগঠনটির নেতারা গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপিটি দেন। এতে শ্রমিক ও শ্রমিকনেতাদের হয়রানি বন্ধের দাবি করা হয়।
ঢাকার আশুলিয়া এলাকার শ্রমিকেরা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত মাসে আন্দোলন শুরু করলে ৫৯টি কারখানা ৪ দিন বন্ধ রাখা হয়। ২৬ ডিসেম্বর কারখানাগুলো খুলে দেওয়া হয়। এরপর ১ হাজার ৬০০ শ্রমিককে বরখাস্ত ও ১ হাজার ৫০০ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে বলে গার্মেন্ট শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের স্মারকলিপিতে জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, বহু সংখ্যক শ্রমিককে অজ্ঞাত হিসেবে উল্লেখ করে হয়রানি ও নির্যাতনের পথ তৈরি করা হয়েছে। যে কারণে শ্রমিকেরা ঘরে থাকতে পারছেন না। প্রতিদিন পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ ও স্থানীয় মাস্তানেরা শ্রমিকদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে।
মামলার ভয় দেখিয়ে শ্রমিকদের কারখানার কাছে পৌঁছাতে দেওয়া হচ্ছে না উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, বরখাস্ত করার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কারণ দর্শানো চিঠি শ্রমিকদের কাছে পৌঁছানো হয়নি। কাজ হারানোয় তাঁরা বাসাভাড়া, দোকানের বকেয়া টাকা দিতে পারছেন না। এ ছাড়া অনেক বছর কাজ করলেও তাঁদের যথাযথ আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়নি।
সংগঠনটির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে শ্রমিকনেতারা মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টিকে সময়ের দাবি বলে উল্লেখ করে বলেন, সেটিকে উপেক্ষা করে মালিকপক্ষ দমনের পথ বেছে নেওয়ায় তা শিল্প বিকাশের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। শিল্পের স্বার্থেই এ ব্যাপারে সরকার ও মালিকপক্ষকে উদ্যোগী হতে হবে। এ সময় শ্রমিকনেতারা মূল মজুরি ১০ হাজার টাকা ও মোট মজুরি ১৬ হাজার টাকা করার দাবি জানান।
শ্রমিকনেতা ও শ্রমিকদের যাতে হয়রানি না করা হয়, সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। এ সময় শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের পক্ষে স্মারকলিপি পেশ কর্মসূচির সমন্বয়ক রফিকুল ইসলাম, শ্রমিকনেতা মোশরেফা মিশু, মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, তাসলিমা আখতার, জহিরুল ইসলাম, শবনম হাফিজ, মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক, মো. ইয়াসিন ও শামসুল আলম উপস্থিত ছিলেন।