২৪৩ কোটি টাকার রপ্তানি আদেশ মিলেছে এবার

.
.

এবারের ২২তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় (ডিআইটিএফ) ২৪৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকার তাৎক্ষণিক রপ্তানি আদেশ পাওয়া গেছে। গতবার ২৩৫ কোটি ১৭ লাখ টাকার রপ্তানি আদেশ মিলেছিল। তার মানে, এবার ৮ কোটি ২৭ লাখ টাকার তাৎক্ষণিক রপ্তানি আদেশ বেড়েছে।
৩৫ দিনের বাণিজ্য মেলার শেষ দিনে গতকাল শনিবার বিকেলে সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। মেলা প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মাফরুহা সুলতানা, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ প্রমুখ।
এদিকে গতকাল শেষ দিনে মেলায় ছিল উপচে পড়া ভিড়। অনেক প্রতিষ্ঠান মূল্যছাড়ে পণ্য বিক্রি করেছে। গতবারের চেয়ে এবারের মেলায় বিক্রি ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। মেলা চার দিন বাড়ানোর কারণে ব্যবসায়ীদের হাসিও চওড়া হয়েছে। তবে পণ্য বিক্রির প্রাথমিক হিসাবে সেটির পুরোপুরি প্রতিফলন পাওয়া যায়নি। ইপিবি জানিয়েছে, প্রাথমিক হিসাবে এবার ১১৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকার পণ্য নগদে বিক্রি হয়েছে। তবে চূড়ান্ত হিসাবে এর পরিমাণ আরও বাড়বে। গত বছর বিক্রি ছিল ১২১ কোটি টাকা। তার আগের বছর ৫০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি হয়েছিল।
সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, উদ্ভাবনের দিক দিয়ে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। বাণিজ্য মেলা সেই উদ্ভাবনী শক্তিকে উৎসাহ জোগাচ্ছে। এ কারণে মেলায় ব্যবসায়ী ও দর্শনার্থীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। ভবিষ্যতে মেলাটি আরও বড় পরিসরে অনুষ্ঠিত হবে।
এবারের মেলায় অংশ নেওয়া ৪৬টি প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে। প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়নে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে ওয়ালটন হাইটেক, দ্বিতীয় পুরস্কার আকতার ফার্নিচার, হাতিল ও আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ এবং তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে নাদিয়া ফার্নিচার, অলিম্পিক ও কোকোলা ফুড। সাধারণ প্যাভিলিয়নে প্রথম হয়েছে কারুপণ্য রংপুর। এই ক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় আলীবাবা ডোর, তৃতীয় হয়েছে মৌসুমি ইন্ডাস্ট্রিজ। সাধারণ সংরক্ষিত প্যাভিলিয়নে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে জয়িতা ফাউন্ডেশন। এই ক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় পুরস্কার বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশন, তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার।
প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে রহিমআফরোজ। দ্বিতীয় পুরস্কার আবদুল মোনেম লিমিটেড এবং তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে গোল্ডেন হার্ভেস্ট আইসক্রিম ও বিআরবি কেব্লস। সাধারণ মিনি প্যাভিলিয়নে প্রথম হয়েছে রংপুর মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ। দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে যথাক্রমে আহমেদ ফুড প্রডাক্টস ও আফতাব বহুমুখী ফার্মস। সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়নে প্রথম ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, দ্বিতীয় ট্যুরিজম বোর্ড ও সোনালী ব্যাংক এবং তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে মিল্ক ভিটা ও এসএমই ফাউন্ডেশন। প্রিমিয়ার স্টলে প্রথম রানা টেক্সটাইল, দ্বিতীয় প্রাণ ফুড ও সিঙ্গার বাংলাদেশ এবং তৃতীয় হেলাল অ্যান্ড ব্রাদার্স ও রূপকথা বিডি। ফুড স্টলে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে নোয়া ফুড প্রডাক্টস। সাধারণ স্টল ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার অল ওয়েল মার্কেটিং, দ্বিতীয় স্মার্ট সক্স ও কাশ্মীরি ফুড প্রডাক্টস এবং তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে কুষ্টিয়া হস্তশিল্প ও তিশা জামদানি। নারী উদ্যোক্তা ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে মণিপুরি তাঁত এম্পোরিয়াম। এই ক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় টোটাল প্যাকেজিং, এ ওয়ান ট্রেড এবং তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে মা এন্টারপ্রাইজ।
এ ছাড়া সর্বোচ্চ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) প্রদানে ওয়ালটন হাইটেক পুরস্কার পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে যথাক্রমে র্যাংগস ইলেকট্রনিকস ও হাতিল। বিশেষ আয়োজনের জন্য পুরস্কার পেয়েছে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন। বিদেশি প্যাভিলিয়ন ক্যাটাগরিতে প্রথম রয়েল থাই অ্যাম্বাসি, দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছে তুরস্কের ইস্তাম্বুল ক্রিস্টাল।
জানতে চাইলে মেলার সদস্যসচিব রেজাউল করিম গত রাতে প্রথম আলোকে বলেন, গত ৩৫ দিনে কমপক্ষে ৫৫ লাখ ক্রেতা-দর্শনার্থী মেলা প্রাঙ্গণে এসেছে। তবে মেলার আয়োজক বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবির কাছে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই বলে জানালেন তিনি।