'ব্যাংকগুলো মুদির দোকান হয়ে যাবে'

বেসরকারি ব্যাংকগুলোয় এক পরিবার থেকে চার পরিচালক থাকার বিষয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সাংসদেরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে প্রস্তাবিত দায়যুক্ত ব্যয় ছাড়া অন্যান্য ব্যয় সম্পর্কিত মঞ্জুরি দাবির ওপর ভোট গ্রহণ চলছে। সেখানে বক্তব্যে সমালোচনা করেন তাঁরা।

সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থ বিভাগ খাতে ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের অনুন্নয়ন ও উন্নয়ন ব্যয় নির্বাহে রাষ্ট্রপতিকে অনধিক ৫৩ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা মঞ্জুরের প্রস্তাব করেন। এর ওপর শুরুতেই বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির সাংসদ নুরুল ইসলাম মিলন। তিনি বলেন, ব্যাংক খাতে এক লাখ কোটি টাকার বেশি খেলাপি ঋণ। বেশির ভাগ পরিচালক তা ভাগাভাগি করে নিয়ে গেছেন। পুরো ব্যাংক খাত জিম্মি হয়ে আছে ব্যাংকের মালিক-পরিচালকদের কাছে।

এ সময় স্বতন্ত্র সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, ‘সরকারি ব্যাংকের পরিচালকেরা বিদেশে টাকা পাচার করছেন। এখন বেসরকারি ব্যাংকেও নিয়ম করা হচ্ছে যে এক পরিবার থেকে চারজন পরিচালক হবেন। কাজ শেষ।’ ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে শিগগির ব্যাংক কমিশন গঠন করার প্রস্তাব করেন তিনি।

জাতীয় পার্টির সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘ব্যাংক খাতে লুটপাটের রাজস্ব কায়েম হয়েছে। বেসরকারি ব্যাংকে এক পরিবার থেকে চার পরিচালক দেওয়ার নিয়ম হচ্ছে, ব্যাংকগুলোতে স্বতন্ত্র পরিচালকও নেই। এইভাবে চললে ব্যাংকগুলো মুদির দোকান হয়ে যাবে।’

সাংসদ ফখরুল ইমাম বলেন, ‘ডোরাকাটা দাগ দেখে বাঘ চেনা যায়, বাতাসের বেগ দেখে মেঘ চেনা যায়। আর যারা ব্যাংক লুট করেছে, অর্থমন্ত্রী তাদের চিনবেন না, এটা হয় না।’ রাজধানীর ইসলামপুরে এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করলে মাসে কীভাবে পাঁচ হাজার টাকা পাওয়া যায়, তা তদন্ত করে দেখতে তিনি অর্থমন্ত্রীকে আহ্বান জানান।

সবার আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, দাবিটি হচ্ছে অর্থ বিভাগের। কিন্তু সবাই কথা বলেছেন ব্যাংক খাত নিয়ে। বেসরকারি ব্যাংকে পারিবারিক সদস্য বৃদ্ধির আইনটি সংসদের বিবেচনায় আছে, সংসদীয় কমিটি বিবেচনা করছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলতে পারেন না। সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। চারজনকে এক পরিবার থেকে নেওয়ার বিষয়ে আমরা সংসদীয় কমিটির অভিমত দেখব।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেকেই হয়তো বলবেন যে দেশে ৫৮টি ব্যাংক হয়ে গেছে, যা সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ নয়। অনেক দেশে এভাবেই হয়েছে। আশায় আছি, ভবিষ্যতে এগুলো সংহত করা হবে।’