ভারতে ১১ হাজার কোটি রুপি সাদা করা হয়েছে

গত বছরে ভারতে ১০০০ ও ৫০০ রুপির নোট বাতিলের পর বড় অঙ্কের কালোটাকা সাদা করা হয়েছে, যা পরিমাণে মোট ১১ হাজার কোটি রুপি।

ভারতের কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত শ্বেতপত্রে এই তথ্য উঠে এসেছে। যাঁরা এই বিপুল পরিমাণ কালোটাকা সাদা করেছেন, তাঁদের একটি তালিকাও প্রকাশ করেছে ইডি। সেই তালিকায় উত্তর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) নেত্রী মায়াবতী, বিহারের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী, সাবেক কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা লালুপ্রসাদ যাদবের জ্যেষ্ঠ কন্যা মিসা ভারতীসহ বেশ কিছু রাজনীতিকের নাম রয়েছে। এতে অনেক আমলা, ব্যবসায়ী, চার্টার্ড অ্যাকাউনট্যান্ট, আইনজীবী ও ব্যাংক কর্মকর্তার নাম আছে।

নোট বাতিলের পর সব মিলিয়ে ৪ হাজার জন কালোটাকা সাদা করেছেন। ইডি এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে নজরদারি রাখা এবং বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনা আইন ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়েরের কথা জানিয়েছে।

শ্বেতপত্রে বলা হয়েছে, কালোটাকা সাদা করা হয়েছে শেয়ারবাজার, বিভিন্ন সমবায় ঋণদান সমিতি, ভুঁইফোড় কোম্পানি, বেআইনি খনি ব্যবসা ও ব্যাংকে জালিয়াতি করার মাধ্যমে।

তবে ভারতীয় লোকদের কালোটাকার একটি বিরাট অংশ সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), দুবাই, মালয়েশিয়া ও হংকংয়ে পাচার করা হয়েছে বলেও শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

সংস্থাটি জানায়, নোট বাতিলের পর কালোটাকা ধরতে তারা দেশব্যাপী মোট ৮০০টি অভিযান চালিয়েছে এবং ৬০০টি শোকজ নোটিশ জারি করেছে।

শ্বেতপত্রে ইডি বলেছে, বাতিল হওয়া নোটের পাশাপাশি কোটি কোটি রুপির নতুন নোটও উদ্ধার করা হয়, যা অবৈধভাবে রাখা হয়েছিল।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত বছরের ৮ নভেম্বর হঠাৎ করে ১০০০ ও ৫০০ রুপির নোট বাতিলের ঘোষণা দেন। এর প্রতিবাদে গর্জে ওঠে ভারতের বিভিন্ন বিরোধী দল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মায়াবতী, কেজরিওয়াল ও লালুপ্রসাদের মতো বিভিন্ন দলের নেতারা কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনায় সোচ্চার হন। বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ ও প্রতিবাদ মিছিলও অনুষ্ঠিত হয়।

কেন্দ্রীয় সরকার কালোটাকা উদ্ধারের জন্য নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত জানিয়ে জনগণকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে। ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের এক বছর পূর্তি উৎসবও পালন করেছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকার। অন্যদিকে বিরোধীরাও দিনটিকে কালো দিবস হিসেবে পালন করে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস, জাতীয় কংগ্রেস, বাম দলও দিনটি পালন করেছে প্রতিবাদ সভা-সমাবেশ করে। পুড়িয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কুশপুত্তলিকা।