কারখানাগুলোর ৮৫ শতাংশ ত্রুটি সংস্কারকাজ শেষ

তৈরি পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশ উন্নয়নে কর্মরত উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের জোট অ্যালায়েন্স চতুর্থ বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ছবি: প্রথম আলো
তৈরি পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশ উন্নয়নে কর্মরত উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের জোট অ্যালায়েন্স চতুর্থ বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ছবি: প্রথম আলো

উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের জোটের সদস্য কারখানাগুলো ৮৫ শতাংশ ত্রুটি সংশোধন শেষ করেছে। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ ছিল উচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত মেরামতকাজ।

চতুর্থ বার্ষিক অগ্রগতি প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেফটি ইন বাংলাদেশ। আজ বুধবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে অ্যালায়েন্সের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অ্যালায়েন্সের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অ্যালায়েন্সের সদস্য পোশাক কারখানার সংখ্যা ৭৮৫টি। তার মধ্যে সচল আছে ৬৫৮টি। তাদের মধ্যে ২৩৪টি কারখানা অগ্নি, বৈদ্যুতিক ও ভবনের কাঠামোগত সব ধরনের ত্রুটি সংশোধন কর্মপরিকল্পনা (ক্যাপ) অনুযায়ী শেষ করেছে। তবে সংস্কারকাজে সন্তোষজনক অগ্রগতি না হওয়ায় ১৬২টি কারখানার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে অ্যালায়েন্স। এ জন্য পোশাক কারখানাগুলো জোটের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ওয়ালমার্ট, টার্গেট, গ্যাপ, জেসিপ্যানিসহ ২৯ ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের পোশাক তৈরির ক্রয়াদেশ পাচ্ছে না।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অ্যালায়েন্সের ৬৫৮টি সদস্য কারখানায় কাজ করেন ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ৫৬৬ পোশাকশ্রমিক। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশকেই প্রাথমিক অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রায় ২৭ হাজার নিরাপত্তাকর্মীকে অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে অ্যালায়েন্স। এ ছাড়া শ্রমিকদের জন্য হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সেই হেল্পলাইনে নিজেদের সমস্যা ও অভিযোগ জানাতে পারছেন।

জেমস এফ মরিয়ার্টি বলেন, ‘২০১৩ সালে অ্যালায়েন্স কাজ শুরু করে। সেই সময়ের তুলনায় পোশাক কারখানাগুলো আজ অনেক বেশি নিরাপদ। কারখানা মালিকেরা যে কঠোর পরিশ্রম করছেন, তার সুফল তারা এখন পাচ্ছেন।’ তিনি আরও বলেন, কারখানাগুলো যে আন্তর্জাতিক মান অর্জন করেছে, তা অব্যাহত রাখতে হবে। আগামী বছর অ্যালায়েন্সের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হবে। তখন স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করা হবে। তবে যে–ই দায়িত্ব নিক না কেন, তাকে অবশ্যই স্বাধীন ও গ্রহণযোগ্য হতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যালায়েন্সের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ স্কট লারসেল, ডেপুটি ডিরেক্টর পল রিগবি, ডিরেক্টর অব অপারেশনস কামরুন্নেসা বাবলি।

২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানার নিরাপত্তা ও কর্মপরিবেশ নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন ওঠে। তখন কর্মপরিবেশ উন্নয়নে পাঁচ বছরের জন্য ইউরোপীয় ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ড ও উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের জোট অ্যালায়েন্স গঠিত হয়। তাদের প্রকৌশলীরা প্রায় আড়াই হাজার পোশাক কারখানার অগ্নি, বৈদ্যুতিক ও ভবনের কাঠামোগত পরিদর্শন করে ত্রুটি চিহ্নিত করে দেন। তারপর তাঁদের অনুমোদিত সংশোধন কর্মপরিকল্পনা (ক্যাপ) অনুযায়ী কারখানাগুলো ত্রুটি সংশোধন করে।