গ্রাহক সন্তুষ্টি অপোর কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ

বাংলাদেশের স্মার্টফোনের বাজারে যেসব চীনা ব্র্যান্ড খুব অল্প সময়ে ভালো করেছে তার একটি হলো অপো। ২০১৪ সালে যাত্রা শুরুর পর গত তিন বছরে বাজারে বেশ কয়েকটি উদ্ভাবনী প্রযুক্তির স্মার্টফোন বাজারে এনেছে ব্র্যান্ডটি। বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক কার্যক্রম নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন অপো বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড্যামন ইয়াং। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আশরাফুল ইসলাম
ড্যামন ইয়াং
ড্যামন ইয়াং

প্রথম আলো: অপো বাংলাদেশের কার্যক্রম কেমন চলছে?

ড্যামন ইয়াং: ২০০৮ সালে মোবাইল বাজারে প্রবেশ করার পর আন্তর্জাতিক বাজারে অপোর পরিসর বাড়তে শুরু করে। বর্তমানে বিশ্বের ৩০টি বাজারে অপো শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে। ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করেছে অপো মোবাইল। ২০১৬ সালে অপো বিশ্বের চতুর্থ বৃহৎ স্মার্টফোন ব্র্যান্ডের স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ মোবাইলে সেলফি (নিজস্বী) তুলতে পছন্দ করে। তারা একই সঙ্গে খুবই সৌন্দর্যসচেতন। এই দেশের মানুষকে ছবি তোলায় সেরা স্মার্টফোন ফটোগ্রাফির অভিজ্ঞতা দেওয়ার জন্য অপো চেষ্টা করে যাচ্ছে।

প্রথম আলো: ভালো ছবি বা সেলফি তোলার বাইরে অপো মোবাইলে আর কী সুবিধা আছে, যার জন্য গ্রাহকেরা অপো মোবাইল কিনতে আগ্রহী হবেন?

ড্যামন ইয়াং: কৌশলের কারণে একেকটি মোবাইল ফোন ব্র্যান্ডের শক্তির জায়গা আলাদা হয়। সেলফি তোলার বিষয়টিকে অপো বেশি গুরুত্ব দেয়। তবে এর মানে এই নয় যে অপো স্মার্টফোনের বিষয়ে গুরুত্ব দেয় না। অপোর সব ফোনে সবচেয়ে উন্নত মানের প্রসেসর ব্যবহার করা হয়। অপোর ফোন মাত্র এক ঘণ্টাতেই পরিপূর্ণ চার্জ দেওয়া যায়। অপোর ফোনে ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী, আবার একই সঙ্গে তা খুব ভারী নয়। এতে অপোর ফোনগুলোর সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। অপোর সাম্প্রতিক মডেলের ফোনগুলোতে ফেসিয়াল আনলক (ব্যবহারকারীর ছবি মিললে ফোন খোলার প্রযুক্তি) যুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ফোনের পর্দার পুরোটা ব্যবহারের সুবিধাও অপো ফোনে যোগ করা হয়েছে।

প্রথম আলো: অপো ফোনে আর কী প্রযুক্তি রয়েছে, যা অন্য ফোনে নেই?

ড্যামন ইয়াং: সেলফি এক্সপার্ট অপো এফ৩ সিরিজের সর্বশেষ সংস্করণ অপো এফ৫-এ সেলফির জন্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এ প্রযুক্তি একটি বৈশ্বিক তথ্যভান্ডারের ওপর ভিত্তি করে মুখের আকার ও গঠন চিহ্নিত করে। আবার একটি চেহারার গঠন ও আকার অন্যটি থেকে সহজেই আলাদা করতে পারে। ছবি তোলার সময় আলোর ব্যবস্থা না থাকলেও এটি চমৎকার সেলফি তুলতে পারে। সেলফিকে প্রাণবন্ত করে তুলতে এ বিষয়ে পেশাদার আলোকচিত্রী ও রূপসজ্জা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়।

প্রথম আলো: অনেক ক্রেতার অভিযোগ, ফোন কেনার পর কোনো সমস্যা দেখা দিলে ভালো বিক্রয়-পরবর্তী সেবা পওয়া যায় না। এ বিষয়ে আপনারা কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?

ড্যামন ইয়াং: যেহেতু অপো সারা বিশ্বের মানুষের কাছে পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ করছে, তাই আমরা আমাদের পণ্যের মানে কোনো ছাড় দিচ্ছি না। ইতিমধ্যে বাংলাদেশে আমাদের ২ হাজার ৮০০ বিক্রয়কেন্দ্র , ৩০ পরিবেশক ও ২১টি বিক্রয়-পরবর্তী সেবাকেন্দ্র রয়েছে। সেবাকেন্দ্রগুলোতে বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীরা আছেন, যাঁরা আমাদের গ্রাহকদের সেরা মানের সেবা দিয়ে থাকেন। আশা করছি, আমাদের এ উদ্যোগগুলো গ্রাহক পর্যায়ে সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি নিশ্চিত করবে।

প্রথম আলো: বাংলাদেশের বাজারে অপোর কী কী স্মার্টফোন রয়েছে? এগুলোর দাম কত?

ড্যামন ইয়াং: উদ্ভাবনী মোবাইল ফটোগ্রাফি প্রযুক্তিতে সাফল্য অর্জনের পাশাপাশি অপো নিজস্ব ক্যামেরা ফোন তৈরিতে গুরুত্ব দিচ্ছে। ২০১৬ সালে অপো নিয়ে আসে ‘সেলফি বিউটিফিকেশন’ প্রযুক্তিসংবলিত এফ সিরিজের স্মার্টফোন, যা বাজারে দারুণ সফলতা অর্জন করেছে। এর মধ্যে অপো আর সেভেন লাইট, জয় প্লাস, মিরর ৫এস, আর৭, মিরর ৫, আর৭ প্লাস, নিও৭, এফ১, এফ১ প্লাস স্মার্টফোন মডেলগুলো সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়েছে। এসব ফোনের দাম ১৩ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ৩২ হাজার ৯৯০ টাকার মধ্যে।

প্রথম আলো: তরুণ প্রজন্মের স্মার্টফোন চাহিদা নিয়ে অপো কী ভাবছে?

ড্যামন ইয়াং: স্মার্টফোন তৈরির ক্ষেত্রে অপো সব সময় তরুণ প্রজন্মকে বিবেচনায় রেখেছে। বাংলাদেশের তরুণদের জন্য সম্প্রতি ‘অপো এফ৫ ইয়ুথ’ বাজারে এনেছে। এই ফোনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। সেলফি ফোনের জন্য তরুণদের প্রথম পছন্দ হলো অপো। এই ব্র্যান্ডের সব ধরনের মার্কেটিং পলিসি ও কার্যক্রম গ্রহণ করা হয় তরুণ প্রজন্মকে ঘিরে এবং তরুণ প্রজন্মের চাহিদা যেমন খেলাধুলা, ফ্যাশন এবং বিনোদন এসব বিবেচনায় রেখে। বাংলাদেশের বাজারে অপোর জনপ্রিয়তা এখন অনেক বেশি।

প্রথম আলো: অপো বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

ড্যামন ইয়াং: ২০১৮ সালে গ্রাহকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় হ্যান্ডসেট নিয়ে আসব। খুব শিগগির ঢাকার জনপ্রিয় শপিংমল বসুন্ধরা সিটিতে গ্রাহকদের জন্য অপোর সবচেয়ে বড় বিক্রয়কেন্দ্র (ফ্ল্যাগশিপ স্টোর) চালু করতে যাচ্ছে অপো। আগামী বছরজুড়েই গ্রাহকদের জন্য অনেক চমক আছে। এগুলো জানার জন্য একটু অপেক্ষা করতে হবে।