চালের দাম বেড়েছে

রাজধানীর বাজারে প্রায় সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। সরু ও মাঝারি চালের তুলনায় বেশি বেড়েছে মোটা চালের দাম। রাজধানীর বাজারে এক বস্তা (৫০ কেজি) মোটা চাল কিনতে গেলে এখন গ্রাহকদের ১০০ টাকা বেশি দিতে হবে। অন্যদিকে সরু চাল কিনলে বাড়তি গুনতে হবে বস্তায় ৬০ থেকে ৭০ টাকা।
এদিকে বাজারে বাড়তি দাম লিখে প্যাকেটজাত চিনি ছেড়েছে এক কোম্পানি। তারা মোড়কে নতুন খুচরা সর্বোচ্চ মূল্য লিখেছে কেজিপ্রতি ৭৫ টাকা।
চাল ও চিনি ছাড়া গত এক সপ্তাহে কাঁচাবাজারে সবজির মধ্যে বেগুনের দর কিছুটা বেড়েছে। স্থিতিশীল আছে ভোজ্যতেল, আটা, ময়দা, ডাল, ব্রয়লার মুরগি, ডিম, গরুর মাংসসহ অন্যান্য পণ্যের দাম।
রাজধানীর মহাখালী সিটি করপোরেশনের বাজারে গতকাল শনিবার প্রতি কেজি গুটি জাতের মোটা চাল প্রতি বস্তা ১ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। কেজিপ্রতি দর দাঁড়াচ্ছে ২৮ থেকে ২৯ টাকা। অন্যদিকে বিআর-২৮ জাতের মাঝারি সরু আকারের চাল মিলছে মানভেদে ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা দরে। এতে কেজি পড়ছে ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা।
সরু আকারের দুটি জনপ্রিয় জাতের চাল; মিনিকেট মিলছে মানভেদে কেজিপ্রতি ৪৪ থেকে ৪৮ টাকা দরে এবং কেজিপ্রতি ৪৬ থেকে ৫০ টাকা দরে কেনা যাচ্ছে নাজিরশাইল চাল।
জানতে চাইলে বাজারের মৌসুমি ট্রেডার্সের বিক্রেতা মোজাম্মেল হক প্রথম আলোকে বলেন, মোটা চালের দাম কেজিতে ২ টাকার মতো বেড়েছে। অন্যান্য চালের দাম বেড়েছে দেড় টাকার কাছাকাছি।
কারওয়ান বাজারের চাটখিল ট্রেডার্সের একজন বিক্রেতাও মোটা চালের দাম বেশি হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন, সরকার ৩২ টাকা দরে মোটা চাল কিনছে। এ কারণে এই চালের দাম বেশি হারে বেড়েছে।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে চাল আমদানির ওপর শুল্কহার ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করেছে সরকার। এতে চাল আমদানি বন্ধ হয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশ অটো-মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, চালের দাম এখন স্বাভাবিকই আছে। এ বছর ধানের দাম ভালো পেয়েছেন কৃষকেরা। এ ছাড়া এখন মৌসুমের শেষ দিক হওয়ায় চালের দাম কিছুটা বৃদ্ধি অস্বাভাবিক নয়। পাশাপাশি বৃষ্টির কারণে চালের উৎপাদনও কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে।
ঈদের পরে বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭২ থেকে ৭৫ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে নতুন করে দাম বাড়েনি। তবে প্যাকেটজাত চিনির সর্বোচ্চ খুচরা দাম ৭৫ টাকা নির্ধারণ করে বাজারে ছেড়েছে সিটি গ্রুপ। যদিও আগে থেকেই এ চিনি ৭৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছিল বলে জানান বিক্রেতারা।
মহাখালী বাজারের খুচরা বিক্রেতা গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, এর আগে মোড়কে উল্লিখিত দর ছিল ৬৫ টাকা। কিন্তু কেনা বেশি পড়ত। এখন কেনা পড়ছে ৭২ টাকা, বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা দরে। তবে তিনি জানান, অন্য কোনো কোম্পানির প্যাকেটজাত চিনি মিলছে না।
কারওয়ান বাজারে বিভিন্ন ধরনের সবজি ৩৫ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে মিলছে। তবে বেড়েছে বেগুনের দর। ভালো মানের লম্বা ও গোল লাল বেগুন কেজিপ্রতি ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা।
বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১৪০ থেকে ১৫৫ টাকা, গরুর মাংস ৪২০ থেকে ৪৩০ টাকা ও ডিম হালিপ্রতি ৩২ থেকে ৩৩ টাকা দরে মিলছে। মাছবাজারে চাষের কই আকারভেদে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, পাঙাশ ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে।
মহাখালী বাজারের ইলিশ মাছ বিক্রেতা মো. কাওসার বলেন, এক সপ্তাহ আগের তুলনায় বাজারে ইলিশের সরবরাহ কিছুটা বেশি। তবে দাম আগের মতোই আছে। আধা কেজির কাছাকাছি ওজনের একেকটি ইলিশ ৫৫০ টাকা ও ৮০০ গ্রামের কাছাকাছি ওজনের একেকটি ইলিশ ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান তিনি।