'অনন্তকাল নামমাত্র দামে দেওয়া অসম্ভব'

রঘুরাম রাজন
রঘুরাম রাজন

যে পণ্য বা পরিষেবা এখন কার্যত বিনা পয়সায় হাতের মুঠোয়, মানুষ কি তা সত্যিই বিনা মূল্যে পাচ্ছে, নাকি তার দাম মেটাচ্ছে অন্য কেউ। এখন যা কিছু নামমাত্র বা বিনা মূল্যে পাওয়া যায়, তা কি চিরদিন এমনই থাকবে? সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মঞ্চে এমন প্রশ্ন তুলেছেন ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর রঘুরাম রাজন।

রঘুরাম রাজনের মতে, কোনো কিছুই অনন্তকাল একেবারে নামমাত্র দামে কিংবা বিনা পয়সায় (ফ্রি) দিয়ে যাওয়া অসম্ভব। অথচ এ মুহূর্তে সারা বিশ্বে কার্যত বিনা পয়সায় অনেক পণ্য ও পরিষেবা মিলছে। অর্থনীতির তত্ত্ব বলে, কোনো সংস্থা একসঙ্গে বিপুল পরিমাণে পণ্য উৎপাদন করলে তার গড় খরচ কমে। গুগলের উদাহরণ টেনে রাজন বলেন, মূলত এই কৌশলে ভর করেই এখন ক্রেতা বা গ্রাহকদের অনেক সময়ে কার্যত বিনা পয়সায় পণ্য বা পরিষেবা দিতে পারছে বিভিন্ন সংস্থা।

রাজনের প্রশ্ন, কোনো সংস্থা কি গাঁটের টাকা খরচ করে ক্রেতাকে দিনের পর দিন বিনা পয়সায় পণ্য জোগাবে? সে জন্য জানা দরকার, যে পণ্য বা পরিষেবা আপাতদৃষ্টিতে বিনা মূল্যে পাওয়া যায় বলে মনে হয়, তার দাম মেটাচ্ছেন কে বা কারা? এতে অনেকে আবার ফুলেফেঁপে উঠছে। তাঁর প্রশ্ন, এসব ‘সুপারস্টার’ সংস্থার সঙ্গে অন্য সংস্থাগুলো দীর্ঘ মেয়াদে প্রতিযোগিতায় পেরে উঠবে তো?

সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, আজকের বাস্তবতায় রাজনের তোলা প্রশ্নগুলো অসম্ভব তাৎপর্যপূর্ণ। ভারতেই দেখা যাচ্ছে, মাশুলের গলাকাটা প্রতিযোগিতায় নাভিশ্বাস উঠেছে টেলিকম কোম্পানিগুলোর। টিকিটের দামে ছাড়ের প্রতিযোগিতায় নেমে সমস্যায় পড়ছে বিমান পরিবহন শিল্প। বিপুল বিক্রি সত্ত্বেও এখনো টানা লাভের মুখ দেখতে পারছে না অধিকাংশ ই-কমার্স সংস্থা। এতে বাজারে প্রতিযোগিতার ছন্দ কেটে যাচ্ছে। অনেকে বাজারে টিকতে পারছে না। সেই সুযোগে পণ্যের দাম বাড়ছে। অনেক সময় আবার প্রতিযোগিতায় টিকতে কর্মী ছাঁটাই করছে সংস্থাগুলো।