মন্দায় না পড়লেও ঝুঁকিতে বিশ্ব অর্থনীতি: আইএমএফ

বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতি ‘ভেঙে যাওয়ার মুহূর্তে’ আছে বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধান অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী মন্দার পূর্বাভাস না দিলেও অনেক নেতিবাচক ঝুঁকি রয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত হয় বৈশ্বিক অর্থনীতি নিয়ে আইএমএফের নিয়মিত প্রতিবেদন ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’। এতে পূর্বাভাস দেওয়া হয়, ২০১৯ সালে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় কম। তবে ২০২০ সালে প্রবৃদ্ধি আবার ৩ দশমিক ৬ শতাংশে পৌঁছাবে। ২০১৮ সালে বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয় ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।

শ্লথ প্রবৃদ্ধির কবলে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোজোনের মতো অঞ্চলগুলো। গত জানুয়ারিতে আইএমএফ পূর্বাভাসে বলা হয়, চলতি বছর যুক্তরাজ্যের প্রবৃদ্ধি হবে ১ দশমিক ২ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ কম। ২০২০ সালে যে প্রবৃদ্ধি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল, তা আরও কমবে। সেই সঙ্গে আগামী বছর জার্মানি ও ইতালির প্রবৃদ্ধি কমবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

আইএমএফের আশঙ্কা, উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে সঙ্গে লাতিন আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর প্রবৃদ্ধিও কমবে। চলতি বছর চীনের প্রবৃদ্ধি সামান্য বাড়লেও আগামী বছর কমবে বলে আশঙ্কা করছে সংস্থাটি।

এ ছাড়া এশিয়ার উদীয়মান ও উন্নয়শীল দেশগুলোর প্রবৃদ্ধি ২০১৯ সালে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমএফ। আগামী বছর তা কিছুটা কমে হবে ৬ দশমিক ২ শতাংশ। এই উদীয়মান ও উন্নয়শীল দেশগুলোর মধ্যে আছে বাংলাদেশ, ভুটান, ব্রুনেই, দারুসসালাম, কম্বোডিয়া, ফিজি, কিরিবাতি, মালদ্বীপ, মিয়ানমার ও নেপালের মতো দেশগুলো।

ঝুঁকির বিষয়গুলো তুলে ধরে গীতা গোপীনাথ বলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা আবারও বাড়তে পারে এবং নতুন নতুন অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। তিনি গাড়ির বাণিজ্যের কথা উল্লেখ করেছেন বিশেষভাবে। কারণ, আমদানি করা পণ্যের ওপর নতুন করে কর আরোপের কথা ভাবছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গীতা গোপীনাথ মনে করেন, গত বছরে প্রবৃদ্ধি কমার পেছনে অন্যতম ভূমিকা রেখেছিল যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্যযুদ্ধ।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ (ব্রেক্সিট) নিয়েও ঝুঁকি আছে বলে জানান গীতা গোপীনাথ। যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এখন ব্রেক্সিটের ওপরই নির্ভর করছে। তিনি মনে করেন, কোনো চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিট হলে তা যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন দুই পক্ষের জন্যই ব্যয়বহুল হবে।