মস্তিষ্কের সমস্যাই বিশ্বখ্যাত ব্যবসায়ী হওয়ার প্রেরণা

স্যার রিচার্ড চার্লস নিকোলাস ব্র্যানসন
স্যার রিচার্ড চার্লস নিকোলাস ব্র্যানসন

বিশ্বের বিলিয়ন ডলার ম্যান বা শত শত কোটি ডলারের মালিকদের একজন স্যার রিচার্ড চার্লস নিকোলাস ব্র্যানসন। এই ব্রিটিশ ব্যবসায়ী দুনিয়ার সবচেয়ে সফল কোম্পানিগুলোর একটি ভার্জিন গ্রুপের কর্ণধার। ব্যবসায়িক খ্যাতি ও সফলতা তাঁকে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক পরিচিতি এনে দিলেও তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের এক সংগ্রামী অধ্যায়ের গল্প খুব কম মানুষই জানেন। সেটি হলো, তিনি দীর্ঘদিন ধরে ‘ডাইস্লেক্সিয়া’ নামের একটি রোগের সঙ্গে লড়াই করে আসছেন এবং এ ক্ষেত্রেও তিনি সফল।

ডাইস্লেক্সিয়াকে বলা হয় লার্নিং ডিজঅর্ডার বা রিডিং ডিজঅ্যাবিলিটি অর্থাৎ কোনো কিছু শেখা বা পঠন-পাঠন ও আওয়াজ-উচ্চারণ বোঝা বা গুলিয়ে ফেলার সমস্যা। মস্তিষ্কের যে জায়গা ভাষাগত যোগাযোগের কাজটা করে, ঠিক সেখানেই ডাইস্লেক্সিয়া হয়ে থাকে। তবে এই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের বুদ্ধিবৃত্তি সুস্থ মানুষের মতোই হয়ে।

রিচার্ড ব্র্যানসন এবারে তাঁর ডাইস্লেক্সিয়া সমস্যা নিয়ে কথা বলেছেন। এই সমস্যায় পড়লে কীভাবে কোনো শব্দ বা চিঠি পড়া কিংবা ব্যাখ্যা করা হয়। এই সমস্যায় পড়েও তিনি কীভাবে তাঁর বিশাল ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন, সেটি তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, ‘ডাইস্লেক্সিয়ার বিরুদ্ধে আমার যে লড়াই, তা থেকে আমি ভার্জিনকে একটি সফল কোম্পানি হিসেবে গড়ে তোলার দীক্ষা পেয়েছি। আমি সুস্পষ্ট ও সরাসরি যোগাযোগই পছন্দ করি। বদৌলতে আমরা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সংস্কৃতি পেয়েছি। এর ফলে আমরা ব্যবসায়িক পরিবেশের চেয়ে পারিবারিক আবহেই কাজ করতে পেরেছি। এ ছাড়া আমার আর কোনো উপায় ছিল না।’ অনলাইন নিউজ পোর্টাল দ্যসিইওম্যাগাজিন ডট কমে নিজের কাহিনি লেখেন তিনি।

১৯৫০ সালে জন্ম নেওয়া ব্র্যানসন মাত্র ১৫ বছর বয়সে যুক্তরাজ্যের স্টোয়িই স্কুল ছেড়ে দিয়ে ভার্জিন রেকর্ডস প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। ব্যবসায়-বাণিজ্যে কোনো অভিজ্ঞতা না থাকলেও তিনি তরতর করে সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে থাকেন।

ব্র্যানসন অকপটে স্বীকার করেন, ব্যবসায়ে সাফল্য পেলেও মস্তিষ্কের সমস্যার কারণে তিনি বয়স ৫০ বছর হওয়ার আগে নিট ও মোট—এই দুটি টার্মের (লাভ বা ক্ষতি) মধ্যকার পার্থক্য বুঝতেন না। তবে তিনি ডাইস্লেক্সিয়াকে তাঁর সফলতার পথে বাধা হতে দেননি।

ব্র্যানসন ১৯৭০ সাল ভার্জিন গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে তাঁর কোম্পানিতে ৬৯ হাজার লোক কাজ করেন। তাঁর কোম্পানির বার্ষিক আয় ১ হাজার ৬৬০ কোটি মার্কিন ডলার।