রপ্তানি আয়ে তিন হাজার কোটি ডলারের মাইলফলক

গত বছরের শেষ ছয় মাসের রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও রপ্তানি আয় বেড়েছে ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। রপ্তানি আয় ছাড়িয়ে গেছে তিন হাজার কোটি ডলারের মাইলফলক।

সদ্য বিদায়ী ২০১৩-১৪ অর্থবছরে (জুলাই-জুন) রপ্তানি আয় হয়েছে ৩ হাজার ১৭ কোটি মার্কিন ডলার। দেশীয় মুদ্রায় যা ২ লাখ ৪১ হাজার ৩৬০ কোটি টাকার সমান। এই আয় ২০১২-১৩ অর্থবছরের ২ হাজার ৭০২ কোটি ডলারের চেয়ে ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেশি, তবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ শতাংশ কম।

হরতাল, অবরোধ ও আতঙ্কের মধ্যেও ব্যবসায়ীরা উত্পাদন সচল রেখে সময়মতো ক্রেতাদের কাছে পণ্য পৌঁছে দিয়েছেন। তাই রপ্তানি আয়ে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ইতিবাচক ধারাতেই আছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

তাজরীনে অগ্নিকাণ্ড ও রানা প্লাজা ধসের পর দেশের পোশাকশিল্প নিয়ে বিশ্বব্যাপী আলোচনা-সমালোচনায় এ খাতের রপ্তানি কমে যাওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন পোশাক কারখানা মালিকেরা। সেটিও শেষ পর্যন্ত হয়নি। সবচেয়ে বড় রপ্তানি আয়ের এই খাত থেকে গত অর্থবছর এসেছে ২ হাজার ৪৪৯ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধি ১৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এই আয় মোট পণ্য রপ্তানি আয়ের ৮১ দশমিক ১৭ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে নিট পোশাকে ১ হাজার ২০৪ এবং ওভেন পোশাকে ১ হাজার ২৪৪ কোটি ডলার রপ্তানি আয় হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘গত বছর সত্যিই একটি কঠিন সময় গেছে। তবে উদ্যোক্তাদের সাহসী ভূমিকা, শ্রমজীবী মানুষের পরিশ্রম আর সরকারের নীতি সহায়তার কারণে রপ্তানি আয়ে সাফল্য অব্যাহত আছে।’ লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও যে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) আজ বৃহস্পতিবার পণ্য রপ্তানি আয়ের এই হালনাগাদ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, পোশাক ছাড়াও হিমায়িত খাদ্য, কৃষিজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল খাতের রপ্তানি আয় ভালো হওয়ায় সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক ধারায় আছে। তবে পাট ও পাটজাত পণ্যে বরাবরের মতো ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি রয়ে গেছে। এ খাতে ৮২ কোটি ডলার আয় হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৯ এবং গত অর্থবছরের চেয়ে ২০ শতাংশ কম।

ইপিবির তথ্যানুযায়ী, গত অর্থবছর হিমায়িত খাদ্যে ৬৩ কোটি ৮১ লাখ, কৃষিজাত পণ্যে সাড়ে ৬১ কোটি, চামড়ায় ৫০ কোটি, চামড়াজাত পণ্যে ২৪ কোটি, হোম টেক্সটাইলে ৭৯ কোটি, পাদুকায় ৫৫ কোটি, প্রকৌশল পণ্যে ৩৬ কোটি ৬৬ লাখ, কম্পিউটার সেবায় (জুলাই-মে) ১১ কোটি, প্লাস্টিকে ৮ কোটি ৫৭ লাখ, আসবাবে চার কোটি ২৫ লাখ, টেরি টাওয়েলে ছয় কোটি ৭১ লাখ ডলার রপ্তানি আয় হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে চামড়াজাত পণ্যে, ৪৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

এদিকে শুধু গত জুন মাসেই ২৮০ কোটি ডলারের রপ্তানি আয় হয়েছে। এই আয় আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ৩ দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি। গত জুনে ২৭২ কোটি ডলার আয় হয়।