ডট বাংলা ডোমেইন হারাল বাংলাদেশ

ইন্টারনেট জগতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ডোমেইন (ইন্টারন্যাশনালাইজড ডোমেইন নেম-আইডিএন) ডট বাংলা (.বাংলা) ব্যবহারের অধিকার হারিয়েছে বাংলাদেশ। ২০১২ সালে ব্যবহারের অনুমতি পেলেও গত তিন বছরে তা কার্যকর করতে না পারায় বাংলাদেশ ডোমেইনটি ব্যবহারের অধিকার হারায়।
ডোমেইন ব্যবহারের স্বীকৃতি দেওয়া আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেট করপোরেশন অব অ্যাসাইনড নেমস অ্যান্ড নাম্বারস (আইসিএএনএন)-এর তালিকায় বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের জন্য আইসিএএনএনের স্বীকৃত দুটি ডোমেইনের একটি হলো ডট বাংলা ও আরেকটি হলো ডট বিডি (. বিডি)। তবে ডট বাংলা হারিয়ে গেলেও ডট বিডি এখনো চালু আছে।
ইন্টারনেটে একটি রাষ্ট্রের জাতীয় পরিচয়ের স্বীকৃতি হিসেবে কাজ করে এই ডোমেইন। যেমন ডট ইউএস ডোমেইন নামের কোনো ওয়েবসাইেট ঢুকলে বোঝা যায় সেটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েবসাইট। ডট বাংলা তেমনি ইউনিকোড দিয়ে স্বীকৃত বাংলাদেশি ডোমেইন।
এই ডোমেইনটির ব্যাখ্যায় উইকিপিডিয়া বলছে, ডট বাংলা হচ্ছে বাংলাদেশের জন্য একটি দ্বিতীয় ইন্টারনেট কান্ট্রি কোড টপ-লেভেল ডোমেইন (সিসিটিএলডি)। এই ডোমেইন বাংলা ভাষায় ওয়েব ঠিকানার জন্য বোঝানো হয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এ দুটি ডোমেইনের মালিক। মন্ত্রণালয়ের পক্ষে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) ডট বিডি ডোমেইন ব্যবহারের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে।
এ বিষেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হলে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কেউ-ই মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ডোমেইন উদ্ধারে এখন তারা তৎপর হয়েছে।
জানা গেছে, ২০১২ সালে বাংলাদেশের পাশাপাশি এ ডোমেইনটির অধিকার পেতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পক্ষে ভারত সরকারও আবেদন করে। সব দিক বিবেচনা করে আইসিএএনএন তখন ডোমেইনটি বাংলাদেশকে বরাদ্দ দেয়।
বরাদ্দ পাওয়ার তিন বছরেও কেন ডোমেইনটি কাজে লাগানো গেল না—নানা মহলে এ বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা ডোমেইন হারানোয় ক্ষোভ ও বিস্ময় প্রকাশ করেন।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তফা জব্বার বলেন, ‘ইন্টারনেটে আমার জাতীয় পরিচয় “ডোমেইন”। এটি হারানো লজ্জাজনক একটি ব্যাপার। কার অবহেলায় বাংলাদেশ এটি হারাল—তা খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।’
ডোমেইনের অধিকার ফিরে পেতে সরকারকে তৎপর হওয়ার পরামর্শ দেন মোস্তফা জব্বার।
টেলিযোগাযোগ গবেষণা প্রতিষ্ঠান লার্ন এশিয়ার সিনিয়র পলিসি ফেলো আবু সাঈদ খান বলেন, ‘সরকারি ওয়েবসাইটগুলোতে খুব সহজেই এই ডোমেইন ব্যবহার করা যেত। সরকার তিন বছরেও কেন তা করতে পারল না—এটা বিস্ময়কর।’
http://www.iana.org/domains এই ওয়েবসাইটে ওয়েব ডোমেইনের তালিকাটি দেখতে পাওয়া যাবে।