ছাত্রসমাজের প্রচারে বামপন্থীদের ধাওয়া

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে নিজেদের দলীয় প্যানেলের পক্ষে ক্যাম্পাসে প্রচারণা চালাতে গিয়ে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনের বাধার সম্মুখীন হয়েছে জাতীয় পার্টির ছাত্রসংগঠন ছাত্রসমাজ৷

আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ-সংলগ্ন প্রবেশ-ফটক থেকে নির্বাচনী প্রচারণার মিছিল বের করে ছাত্রসমাজ৷ পথচারীদের লিফলেট বিতরণ ও স্লোগান দিতে দিতে মধুর ক্যানটিনের সামনে দিয়ে এগোতে থাকেন সংগঠনটির অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী৷ ক্যাম্পাসের শ্যাডো এলাকায় যেতেই পেছন থেকে বাঁশ নিয়ে তাঁদের ধাওয়া দেন বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতারা৷

দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে দুই সদস্যের (সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক) দলীয় প্যানেল গঠন করেছে ছাত্রসমাজ৷ নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে ক্যাম্পাসের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি), বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার, মধুর ক্যানটিন ও হল এলাকায় দলীয় প্যানেলের পক্ষে ব্যানার সাঁটিয়েছে সংগঠনটি৷ আজ শনিবার প্রচারণার শেষ দিনে মিছিল করে লিফলেট বিতরণের পরিকল্পনা ছিল তাদের৷

মামুন ফকির প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করে বলেন,'আমরা আমাদের নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসে মিছিল নিয়ে লিফলেট বিতরণ করছিলাম৷ সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ারের নেতৃত্বে বামপন্থী নেতারা আমাদের ওপর বাঁশ নিয়ে হামলা চালিয়েছে৷ হামলায় আমাদের পাঁচজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন৷ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর স্যারকে আমরা ঘটনাটা জানিয়েছি৷ তিনি বলেছেন,তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন৷'

ছাত্রলীগের মদদে বামপন্থী নেতারা তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করে মামুন ফকির বলেন,'হামলা'র পর ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল শাখার নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে শোডাউন দিয়েছেন৷ ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনটির মদদ ছাড়া এই হামলা সম্ভব ছিল না বলে মত তাঁর৷

জানতে চাইলে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাশেদ শাহরিয়ার প্রথম আলোকে বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছাত্রসমাজ ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ৷ ফলে তাদের ক্যাম্পাসে ঢোকাটা অনৈতিক৷ আমরা তাদের ধাওয়া দিয়েছি, তবে আঘাত করিনি৷'

ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর কেন্দ্রীয় সংসদে সহসাধারণ সম্পাদক(এজিএস) প্রার্থী সাদ্দাম হোসেন বলেন,'আমরা আগে থেকেই সামরিক স্বৈরাচারের মদদপুষ্ট জাতীয় ছাত্রসমাজকে প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে আসছি৷ বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো কী করেছে, এটি তাদের নিজস্ব বিষয়৷'

এ বিষয়ে জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান, প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানী ও ডাকসু নির্বাচনের প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক এস এম মাহফুজুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি৷

প্রসঙ্গত, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে বিতর্কিত ভূমিকার জন্য ১৯৯০ সালে জাতীয় ছাত্রসমাজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ পরিষদ৷