স্বর্ণভালুকের মায়ায়

দ্য লস্ট সিটি অব জেড-এর প্রদর্শনীর আগে লালগালিচায় ভক্তদের সঙ্গে সেলফি তুলছেন রবার্ট প্যাটিনসন l ছবি: এএফপি
দ্য লস্ট সিটি অব জেড-এর প্রদর্শনীর আগে লালগালিচায় ভক্তদের সঙ্গে সেলফি তুলছেন রবার্ট প্যাটিনসন l ছবি: এএফপি

কাল বৃষ্টি এসে আবারও বাগড়া দিয়েছে বার্লিনে। সঙ্গে হিমশীতল বাতাস। কিন্তু তাই বলে উত্তেজনা কমেনি বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ঘিরে। ‘তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার সোনার ভালুক চাই’, বার্লিনের আকাশে-বাতাসে এখন যেন কান পাতলে শোনা যাবে স্বর্ণভালুকের পদশব্দ। বিশ্বের অন্যতম সম্ভ্রান্ত চলচ্চিত্র উৎসবের একটি বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসব। আর সেই উৎসবের সবচেয়ে বড় পুরস্কার এই সোনার ভালুক। কার হাতে যাবে সেই পুরস্কার? শুরু থেকেই আলোচনায় থাকা ফ্যান্টাস্টিক ওম্যান, হ্যাভ এ নাইস ডে, দ্য ডিনার, জোয়াকিম অথবা মিস্টার লং কিংবা ফাইনাল পোর্ট্রেট? নাকি অন্য কোনো ছবি? কোন নির্মাতা বশে আনবেন সোনার ভালুককে? স্বর্ণভালুক হাতে নিয়ে কে ওড়াবেন সিনেমার দুনিয়ায় তাঁর আধিপত্যের নিশান? বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবের প্রাণকেন্দ্র বার্লিনাল পালাস্তে এখন সেই মুহূর্ত আসন্ন। আজ শনিবার স্বর্ণ ভালুক তাঁর বিজয়ীকে খুঁজে পাবে। আর আগামীকাল রোববার শেষ হবে ৬৭তম বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব।
আমাদের অনেকের কাছেই বার্লিনের সোনার ভালুককে সোনার হরিণের মতো দূরের ব্যাপার মনে হতে পারে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না, সেই ১৯৭৩ সালে এই সোনার ভালুক অধিকার করেছিলেন আমাদের বঙ্গদেশীয় একজন। তাঁর নাম সত্যজিৎ রায়। ছবির নাম অশনি সংকেত। (আমাদের ববিতা কি অসাধারণ অভিনয়ই না করেছিলেন সেই ছবিতে!) শুধু অশনি সংকেত নয়, সত্যজিৎ রায়ের আরও ছবি আলোড়ন ফেলেছিল এই উৎসবে। বিশ্বের সম্ভ্রান্ত এই উৎসবের সঙ্গে আমাদের পুরোনো সম্পর্কের এমন নজির মিলবে ঢের।

বার্লিনে বৃষ্টির হানা
লন্ডন থেকে সঙ্গী ছিল সাদা মেঘ আর রোদ। বার্লিনের আকাশে পৌঁছতে না পৌঁছতেই সেই মেঘের রং বদলে হয়ে গেছে কালচে। বোঝাই যাচ্ছিল, উৎসবের লালগালিচার ঔজ্জ্বল্যে খানিকটা হলেও বাগড়া দেবে এই বৃষ্টি। সেই অনুমান মিথ্যে হয়নি। কিন্তু তাই বলে বার্লিন উৎসব ম্লান হওয়ার নয়।
পৃথিবীজুড়ে হাজারো চলচ্চিত্র উৎসবের মধ্যে কান, ভেনিস, বার্লিন—এই তিন উৎসব উৎকৃষ্টতম। ১৯৫১ সালে যাত্রা শুরু হয়েছিল বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবের। ৬৭তম আসরে এসে এই উৎসব হয়ে উঠেছে সারা বিশ্বের সিনেমাপ্রেমী মানুষের অন্যতম এক তীর্থে।

নতুনরূপে রবার্ট প্যাটিনসন
বার্লিনের লালগালিচায় রবার্ট প্যাটিনসনকে দেখা গেল একদম ভিন্নরূপে। টোয়াইলাইট উন্মাদনার পর এই তারকাকে কি ভুলতে বসেছিলেন কেউ কেউ? সেই সুযোগ কম। প্যাটিনসন ফিরেছেন আবারও পুরোদমে। চলমান বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে প্যাটিনসন হাজির হয়েছেন তাঁর সাম্প্রতিক ছবি দ্য লস্ট সিটি অব জেড-এর প্রচারণায়। একজন ইংরেজ অভিযাত্রীর জীবনের সত্য কাহিনি অবলম্বনে তৈরি অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার ঘরানার ছবি দ্য লস্ট সিটি অব জেড।
বার্লিনের লালগালিচায় ব্যতিক্রমী বেশভূষায় ‘অন্য’ প্যাটিনসনকে ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই বাড়তি আগ্রহ প্রথম সারির ফ্যাশন সাময়িকীগুলোর। ভোগ সাময়িকীর অনলাইন সংস্করণে ছাপা প্রতিবেদনের শিরোনাম ‘ইজ দ্যাট ইউ রবার্ট প্যাটিনসন?’ যার বাংলা মোটামুটি এ রকম, ‘এটা কি তুমি, রবার্ট প্যাটিনসন?’
প্যাটিনসন এরই মধ্যে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন, এই ছবির চরিত্র নিয়ে দারুণ উচ্ছ্বসিত আর আশাবাদী তিনি।
দেখা যাক, জেমস গ্রে পরিচালিত এই ছবি টোয়াইলাইট-এর মতো আরেকটা ঝড় তুলতে পারে কি না।