সৈয়দ হাসান ইমামকে আজীবনের সম্মান

মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কার–২০১৬ অনুষ্ঠানে হাসান ইমামের হাতে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার তুলে দেন কবরী l ছবি: প্রথম আলো
মেরিল–প্রথম আলো পুরস্কার–২০১৬ অনুষ্ঠানে হাসান ইমামের হাতে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার তুলে দেন কবরী l ছবি: প্রথম আলো

নীল পাঞ্জাবি ও সাদা পায়জামা পরা মানুষটি গতকালও ছিলেন সবচেয়ে উজ্জ্বল। সব সময়ের মতো মিষ্টি হেসে আলোকিত করে রেখেছিলেন নিজের আশপাশ। মিলনায়তন ভরা মানুষের শ্রদ্ধাসিক্ত হয়েছেন, আদর করেছেন বিনোদন অঙ্গনের প্রিয় অনুজদের। সংস্কৃতি ও বিনোদন জগতের এক জ্যেষ্ঠ গুণীজনকে সম্মান জানিয়ে শুরু করা হয় মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার প্রদান। দেশের সংস্কৃতি ও বিনোদনে অবদান রাখায় এ বছর আজীবন সম্মাননা জানানো হলো সংস্কৃতিজন সৈয়দ হাসান ইমামকে।
তিনি যখন মঞ্চে উঠলেন, তখন মিলনায়তনে উপস্থিত সবাই আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে সম্মান জানান।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের হল অব ফেমে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার আয়োজনে সৈয়দ হাসান ইমামের হাতে এ সম্মাননার ক্রেস্ট তুলে দেন গত বছর মেরিল-প্রথম আলোর আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত গুণীজন সারাহ বেগম কবরী, উত্তরীয় পরিয়ে দেন স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের বিপণন বিভাগের প্রধান মালিক মোহাম্মদ সাঈদ। সৈয়দ হাসান ইমামের হাতে এক লাখ টাকার চেক তুলে দেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান।
সম্মাননার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে হাসান ইমাম বলেন, ‘প্রথম আলো আজ আমাকে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার দেওয়ার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আসলে জীবন যখন শুরু করেছিলাম তখন সম্মানিত হব বা পুরস্কৃত হব এ কথা ভেবে সংস্কৃতিচর্চা, জাতীয় রাজনৈতিক আন্দোলন এসব শুরু করিনি। তবু পুরস্কার পেতে সবারই ভালো লাগে। জাতির জন্য কিছু করতে পেরেছি কি না জানি না। পেরে থাকলে খুবই ভালো। না পেরে থাকলেও আপনারা যে সেই না-পারাকে সম্মান জানাচ্ছেন, তাতে আমি আনন্দিত। আশা করব ভবিষ্যতে আরও অনেককে এভাবে সম্মানিত করে জাতির জন্য কিছু করতে উৎসাহিত করবেন।’
এই গুণী শিল্পীর সঙ্গে কাজ করার স্মৃতিচারণা করে কবরী বলেন, ‘হাসান ভাইয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় নায়ক-নায়িকা হিসেবে। তিনি সব সময় বলতেন, কিরে আমি বুড়ো হয়ে যাচ্ছি, তুই হচ্ছিস না কেন? এই কথাটা সব সময় আমার মনে পড়ে। আমার অনেক আগে তিনি চলচ্চিত্রে এসেছেন। খুব সুন্দর একটি ছবিতে আমি তাঁর সঙ্গে কাজ করেছিলাম। ছবিটি অনেক প্রশংসিত হয়েছিল। হাসান ভাইয়ের একটি ছবিতে আমি কাজ করেছি, তিনি সেটির পরিচালক ছিলেন। দেশের অনেক কাজে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে, মুক্তিযুদ্ধে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছি। অনেক স্মৃতি তাঁর সঙ্গে আমার। যদিও দেখা-সাক্ষাৎ কম হয়। তবে এটা ভেবে আনন্দিত হচ্ছি যে, আমি যখন আজীবন সম্মাননা পেলাম, তখন আমার চিরকালের চেনা হিরো রাজ্জাককে পাইনি। পেয়েছি হাসান ভাইকে। হাসান ভাইয়ের সঙ্গে অল্প ছবিতে কাজ করলেও তাঁর হাতে এই পুরস্কার তুলে দিতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত কৃতজ্ঞ এবং ধন্যবাদ জানাই।’
উল্লেখ্য, এর আগে লাল-সবুজের পালা ছবির জন্য বাচসাস-এর শ্রেষ্ঠ পরিচালকের পুরস্কার পান সৈয়দ হাসান ইমাম। বসুন্ধরা ছবির জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে পান জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ২০১৫ সালে পান আজীবন সম্মাননা, একুশে পদক, স্বাধীনতা পদকসহ বহু পুরস্কার।