সংগীতের ভাষা হৃদয় দিয়ে বুঝে নিতে হয়

তিন দিনব্যাপী তৃতীয় ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসবের দ্বিতীয় দিন ছিল গতকাল শুক্রবার। রাজধানীর বনানীর আর্মি স্টেডিয়ামে আয়োজিত এই উৎসব শেষ হবে আজ। গতকাল সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের লোকসংগীতশিল্পী আরিফ দেওয়ান পরিবেশনার আগে প্রথম আলোর মুখোমুখি হলেন তাঁরা।

আরিফ দেওয়ান
আরিফ দেওয়ান


আপনার গানগুলো কোন ধারার?

এগুলো সুফি ঘরানার গান। জাগতিক ও আত্মার পবিত্রতার জন্য এই গান। এই গান নিয়েই ৪৪ বছর ধরে কাজ করছি।

শুরু করেছিলেন কার হাত ধরে?

সংগীতে আমাদের পরিবারের ৩০০ বছরের ইতিহাস। দাদাগুরু মালেক দেওয়ানের হাত ধরে আট বছর বয়সে সংগীতজীবন শুরু করেছিলাম। তারপর শিখেছি ছোট দাদাগুরু খালেক দেওয়ান সাহেব, তারপর বাবা খবিরউদ্দিন দেওয়ানের কাছে। আমার দাদার বাবা আলফু দেওয়ান সাহেব এই আধ্যাত্মিক সংগীতের ফাউন্ডার। যাঁর কাছ থেকে আমরা এই ধারা পেয়েছি এবং এখন সারা পৃথিবীতেই এই সংগীত পরিচিতি ও গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।

এই গান নিয়ে আন্তর্জাতিক আসর হচ্ছে, কেমন লাগছে?

যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রায় ৪৩টি দেশে আমি গান করেছি। বাংলাদেশে যে এমন উৎসব শুরু হয়েছে, সেটা অত্যন্ত আনন্দের। যাত্রা শুরু হলো, এটা অনেক আনন্দের। তবে শিল্পী নির্বাচনে আরও দায়িত্ববান হতে হবে। গ্রামবাংলায় যে প্রতিভারা ছড়িয়ে আছে, তাদের নিয়ে আসতে হবে এই প্ল্যাটফর্মে।

আপনি বিদেশে বাংলার লোকগান করেন, বিদেশিরা সাড়া দেয় কীভাবে?

আমাদের দেশের বহু মানুষ হিন্দি গান শোনে, অনেকেই ভাষা বোঝে না, তাল ও সুর তাদের আকৃষ্ট করে। সুরের নম্রতা-কাঠিন্য মানুষ বোঝে এবং সেভাবেই সাড়া দেয়। বিদেশিরা বাংলা ভাষা বোঝে না, কিন্তু সুরের মাধ্যমে হৃদয় দিয়েই গানের বাণী তারা উপলব্ধি করে নেয়। সংগীতের একটি নিজস্ব ভাষা আছে, সেটা হৃদয় দিয়ে বুঝে নিতে হয়।

আপনার গ্রামের ওরসেও গান করেন?

হ্যাঁ, কেরানীগঞ্জের বামনসুর গ্রামে বছরে চারটি ওরস হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় আমাদের খানকা শরিফ আছে, সেখানেও মাহফিল হয়। সেখানে আধ্যাত্মিক গানের আয়োজন হয়, কেননা আমাদের হাজার হাজার ভক্ত থাকে। তাদের প্রত্যাশা থাকে।

সাক্ষাৎকার: রাসেল মাহ্‌মুদ