নতুন পূজা চেরি

পূজা চেরি
পূজা চেরি

কলকাতা থেকে নূর জাহান ছবির নায়ক আদৃত ও কলকাতা অংশের প্রযোজক ও পরিচালক রাজ চক্রবর্তী বাংলাদেশে এসেছেন। মুক্তির কয়েক দিন আগে থেকেই তাঁদের সঙ্গে নিয়ে ছবির প্রচারে নেমেছেন ছবির নায়িকা। সন্ধ্যায় ঢাকার একটি অভিজাত ক্লাবে ‘মিট দ্য প্রেস’-এ অংশ নিতে হবে তাঁকে। তাই অনেকটাই তাড়া ছিল তাঁর। বলছি পূজা চেরির কথা। নূর জাহান ছবির নায়িকা।

আগামীকাল দুই বাংলায় একসঙ্গে মুক্তি পাচ্ছে যৌথ প্রযোজনার এই ছবিটি। সেই ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে প্রথম নায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ হচ্ছে এই বাংলাদেশি মেয়ের।

সন্ধ্যায় সংবাদকর্মীদের মুখোমুখি বসার আগেই ছবির বাংলাদেশ অংশের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়ার কার্যালয়ে প্রথম আলোর মুখোমুখি হলেন এই নবাগত।

আড্ডায় বসতে বসতে নিজ থেকেই পূজা বললেন, ‘দলবল মিলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের অফিসে অফিসে হাজির হচ্ছি। নতুন অভিজ্ঞতা। তবে নায়িকা হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় সাক্ষাৎকার দেওয়া মন্দ লাগছে না! এ এক অন্য রকম অনুভূতি!’

শিশুশিল্পী হিসেবে ভালোবাসার রং, তবুও ভালোবাসি, অগ্নিসহ বেশ কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছেন পূজা। নায়িকা হয়েছেন এবারই।

শুরুতেই জানতে চাইলাম, প্রথম ছবি নিয়ে তাঁর প্রত্যাশা কেমন? পূজা বলেন, ‘এটি একটি পুরোপুরি মৌলিক গল্পের ছবি, নিটোল প্রেমের ছবি। এ ধরনের ছবি অনেক দিনই দুই বাংলা দেখেনি বলে আমার বিশ্বাস। এ কারণে প্রত্যাশার মাত্রা অনেক বেশি।’

তাঁর মতে, প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দর্শকদের দেখার মতো অনেক উপাদানই আছে এই ছবিতে। এই অভিনেত্রী বলেন, ‘ছবিতে নায়ক নূর ও নায়িকা জাহানের চমৎকার রসায়ন আছে। গল্পের সঙ্গে তাঁদের দুজনের উপস্থাপনও দারুণ! স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, পরিবারসহ সব শ্রেণির দশর্কেরই ছবি এটি।’

শিশুশিল্পী হিসেবে ছোট চরিত্রে এত দিন অভিনয় করেছেন। এবার নায়িকা হিসেবে ছবির অন্যতম প্রধান চরিত্রে অভিনয়। শুটিংয়ে ভয়ভীতি কাজ করেছে কি না, এ প্রসঙ্গে পূজা বলেন, ‘তা তো ছিলই। তবে শুটিংয়ের আগে কর্মশালা করে সেই ভয় দূর করেছি। এক সপ্তাহ কর্মশালায় শিশুশিল্পী থেকে বের হতে পেরেছি।’

ছবিটিতে কাজের প্রস্তুতি নিতেও বেশ বেগ পেতে হয়েছে তাঁর। পূজার কথা, চরিত্রের প্রয়োজনে সাঁতার কাটা, স্কুটি চালানো শিখতে হয়েছে। ১৪০ কেজি ওজনের স্কুটি চালানো শিখতে গিয়ে কয়েকবার পড়ে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

কলকাতার অভিনেতা আদৃতেরও প্রথম ছবি এটি। তাঁর বিপরীতে কাজের অভিজ্ঞতা শুরুতে সহজ ছিল না পূজার। তিনি বলেন, ‘দুজনই নতুন। কেউ কাউকে চিনি না, জানি না। কর্মশালায় দুজনই কাছাকাছি হতে ভয় পেতাম। শুটিংয়ের দিন রাজ চক্রবর্তী দুজনকে বললেন, ‘তোরা আজ থেকে নূর ও জাহান। তারপর তো দুজনই ছবির প্রেমিক-প্রেমিকা হয়ে গেলাম। বাস্তবজীবনেও এখন আমরা ভালো বন্ধু।’

বাংলাদেশ-কলকাতা মিলে টানা ৩২ দিন শুটিং হয়েছে এই ছবির। শুটিংয়ের দিনগুলোতে কত শত যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তার হিসাব নেই পূজার কাছে।

একটি অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘লোকেশন সোনারগাঁওয়ের পানামসিটি। একটি দৃশ্যে আমি স্কুটি চালাতে থাকব, হঠাৎ করেই নূর এসে সামনে দাঁড়াবে। দৃশ্যটির ধারণ শুরু হয়েছে। নূরের সামনে ব্রেক করতেই উল্টে আমার নিজের গায়ের ওপরই পড়ে স্কুটি। হাত কেটে যায়। ওহ্‌! সে এক ভয়াবহ ঘটনা!’

ছবিটিতে নায়িকা হতে প্রযোজক প্রতিষ্ঠানের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়নি তাঁর। ছোটবেলা থেকে জাজ মাল্টিমিডিয়ার বেশ কয়েকটি ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। সেই পথ ধরেই নায়িকা হওয়ার পথ সহজ হয়েছে পূজার।

তিনি বলেন, ‘গত বছরের এপ্রিল মাসে আজিজ ভাই নিজ থেকেই নূর জাহান ছবিতে কাজের প্রস্তাব দেন। সত্যি কথা কি, আজিজ ভাই আমার অভিভাবক। তাঁর কথামতোই কাজটি করেছি। চরিত্র, গল্প—কোনো কিছুই ভাবিনি।’

নূর জাহান ছবিটি পরিচালনা করেছেন বাংলাদেশের আবদুল আজিজ ও অভিমন্যু মুখার্জি। এতে আরও অভিনয় করেছেন নাদের চৌধুরী, ওমর আওয়াজ, সেতু, চিকন আলী, কমল পাটেগার, অপরাজিতা, কাঞ্চন মল্লিক, সুপ্রিয় দত্ত প্রমুখ।