পাপনের পাশে সেই শিশুর বাবা

>
পাপন মোহান্ত
পাপন মোহান্ত
• পাপন মোহান্তের পাশে দাঁড়িয়েছেন সেই শিশুর বাবা।
• তিনি বলেছেন, ‘পাপন আমার মেয়ের কাছে বাবার মতো।’
• আজ পাপনের পাশে দাঁড়িয়েছেন অ্যান্ড টিভি কর্তৃপক্ষ।

এবার পাপন মোহান্তের পাশে দাঁড়িয়েছেন সেই শিশুর বাবা। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘পাপন আমার মেয়ের কাছে বাবার মতো। সব সময় আমার মেয়ের পাশে দাঁড়ান। যা কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে, তাতে কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না। এটা ওই মুহূর্তের আবেগেই ঘটে গেছে। দয়া করে এটাকে নিয়ে অকারণ জল ঘোলা করবেন না। সংগীতশিল্পী পাপনের সঙ্গে আমার মেয়ের সম্পর্ক গুরু-শিষ্যের মতোই। পাপন বরাবরই আমার মেয়েকে তাঁর স্বপ্ন পূরণে উৎসাহ দিয়ে এসেছেন। শুধু আমার মেয়েই নয়, ওই শোয়ের সব প্রতিযোগীকেই সমান উৎসাহ দেন পাপন।’ ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এই খবর গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করেছে। তবে এই খবরে শিশুর নাম কিংবা তার বাবার নাম প্রকাশ করা হয়নি।

সেই শিশুর বাবার মতো আজ পাপনের পাশে দাঁড়িয়েছেন অ্যান্ড টিভি কর্তৃপক্ষ। তারাও ঘটনাটি নিয়ে সবাইকে কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করেছে। এক বিবৃতিতে এই টিভি চ্যানেল থেকে বলা হয়েছে, ‘সব প্রতিযোগীর নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা সতর্ক থাকি। এনসিপিসিআর নিয়মাবলি মেনে চলি। তাই বাকিদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই।’

পাপন মোহান্তর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাকি অ্যান্ড টিভির রিয়্যালিটি শো দ্য ভয়েস ইন্ডিয়া কিডসের হোলির অনুষ্ঠানের শুটিংয়ের ফাঁকে এক শিশুর গালে আবির লাগানোর পর তার গালে চুমু খান। দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় ভিডিওটি। পাপনের বিরুদ্ধে আদালতে শিশুর ওপর যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ আইনে (পকসো) অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনার তদন্ত দাবি করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রুনা ভূঁইয়া। গত মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক পেজ থেকে এই লাইভ করেন পাপন। এরপর এই ঘটনাকে ঘিরে চারদিকে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়।

এদিকে গতকাল শুক্রবার রাতে নিজের ফেসবুক পেজে পাপন লিখেছেন, ‘কয়েক দিন ধরে আমাকে নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে, সে বিষয়ে আমি মর্মাহত। এ ধরনের আলোচনার জন্য আমি বিব্রত হচ্ছি। দুঃখ প্রকাশ করছি। যাঁরা আমাকে চেনেন তাঁরা জানেন, আমি খুবই আবেগপ্রবণ। আমার আশপাশের মানুষদের জন্যও রয়েছে আমার সমান আবেগ। কাছের মানুষদের সঙ্গে আমি আনন্দ করতে পছন্দ করি। ১১ বছরের একটি শিশু, যাকে দীর্ঘদিন প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, তাকে এভাবে আদর করা আমার দৃষ্টিতে মোটেও খারাপ কিছু নয়।’

পাপন আশঙ্কা প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘সবার প্রতি বিনীত অনুরোধ, আপনারা একটু থামুন। একটিবার ভাবুন, এই আলোচনার ফলে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কতটা ক্ষতি হতে পারে। আমার স্ত্রী আছেন, যাঁর সঙ্গে আমি ১৪ বছর ধরে সংসার করছি। আমাদের ফুটফুটে দুটি সন্তান আছে। তা ছাড়া এই ঘটনায় ছোট একটি মেয়ে জড়িত, যার পরিচয় মোটেও গোপন নেই। সবাই যা করছে, তাতে আমাদের দুজনের পরিবারই সামাজিকভাবে ধ্বংস হয়ে যাবে।’

পাপন আরও লিখেছেন, ‘আমি বলছি না আমি কোনো ভুল করিনি। আমি খুব স্বাভাবিকভাবেই কাজটি করেছি। কিন্তু আমার চিন্তা যতই নিষ্পাপ হোক না কেন, বর্তমান যুগে একটি মেয়েশিশুকে স্পর্শ করাও যৌক্তিক না। এ জন্য আমি দুঃখিত। দয়া করে এই বোকামি ও নির্বুদ্ধিতার জন্য আমাকে ক্ষমা করুন। আর আমাকে ওসব জঘন্য নামে ডাকা বাদ দিন।’

এদিকে পাপনের আইনজীবী বলেন, ‘আমার মক্কেলের কোনো খারাপ উদ্দেশ্য থাকলে তিনি সেই ভিডিওটি নিজের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে নিশ্চয় শেয়ার করতেন না। আর সেই প্রতিযোগী মেয়েটির বাবাও বলেছেন, আমার মক্কেলের সঙ্গে তাঁর মেয়ের গুরু-শিষ্য সম্পর্ক।’

ভারতের জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের মুখপাত্র প্রিয়াঙ্কা কানুনগো বলেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। শিগগিরই রাজ্য সরকারের কাছে এ বিষয়ে নোটিশ পাঠাব। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, এখানে শিশুর যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ আইন ভঙ্গ করা হয়েছে।’