২০ এপ্রিল আসছে 'হাসনজানের রাজা'
সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, রামপাশা, লক্ষ্মণ শ্রী আর সিলেটের একাংশ নিয়ে পাঁচ লাখ বিঘার বিশাল অঞ্চলের জমিদার ছিলেন হাসন রাজা। তিনি ছিলেন মরমি গীতিকবি। এবার তাঁকে মঞ্চে নিয়ে আসছে প্রাঙ্গণেমোর। হাসন রাজাকে নিয়ে নাটকের এই দলটি নাটক তৈরি করছে। নাম ‘হাসনজানের রাজা’। লিখেছেন শাকুর মজিদ, নাটকের নির্দেশনা দিচ্ছেন অনন্ত হিরা। জানা গেছে, ২০ এপ্রিল সন্ধ্যা সাতটায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে নাটকটি উদ্বোধনী প্রদর্শনী হবে। পরদিন একই সময় নাটকটির দ্বিতীয় প্রদর্শনী হবে পরীক্ষণ থিয়েটার হলে।
‘হাসনজানের রাজা’ নাটকে অভিনয় করেছেন রামিজ রাজু, আউয়াল রেজা, মাইনুল তাওহীদ, সাগর রায়, শুভেচ্ছা রহমান, সবুক্তগীন শুভ, জুয়েল রানা, আশা, প্রকৃতি, প্রীতি, সুজয়, নীরু, সুমন, বাঁধন ও রুমা।
‘হাসনজানের রাজা’ নাটকটি প্রাঙ্গণেমোর দলের ১৩তম প্রযোজনা। এই নাটকের মঞ্চ পরিকল্পনা করেছেন ফয়েজ জহির। সংগীতের পরামর্শক হাসন রাজার গানের অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী সেলিম চৌধুরী। সংগীত পরিকল্পনা করেছেন রামিজ রাজু। আলোক পরামর্শক ঠান্ডু রায়হান, আলোক পরিকল্পনা করেছেন তৌফিক আজীম রবিন। পোশাক পরিকল্পনা করেছেন নূনা আফরোজ।
নাটকের ভাবনা প্রসঙ্গে জানানো হয়, হাসন রাজা (১৮৫৪-১৯২২) বর্তমান সুনামগঞ্জ জেলার একজন সামন্তপ্রভু ছিলেন। মা-বাবা উভয়ের কাছ থেকে পাওয়া বিশাল জমিদারির মালিকানা চলে আসে কিশোর বয়সে। অর্থ, বেহিসাবি সম্পদ আর ক্ষমতার দাপটে বেপরোয়া জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। জাগতিক লোভ-লালসা, ক্ষমতায়ন, জবরদখল করেও তিনি তার প্রতিপত্তি বাড়ানোর কাজে প্রবৃত্ত ছিলেন।
একসময় হাসন রাজার ভেতরের ভ্রান্তি ঘুচে যায়। মধ্য পঞ্চাশে এসে তিনি ভিন্ন এক মানুষে পরিণত হন। তাঁর বোধ হয়, এ জগৎ-সংসারের সব অনাচারের মূলে আছে অতিরিক্ত সম্পদ। কিছুদিনের জন্য অতিথি হয়ে আসা মানুষেরা আসলে মহাশক্তির কাছে একেবারে নশ্বর। তিনি তাঁর সম্পদ জনকল্যাণের জন্য উইল করে দিয়ে কয়েকজন সঙ্গিনীকে নিয়ে হাওরে হাওরে ভাসতে থাকেন। আর এর মধ্যে খুঁজতে থাকেন সেই মহা পরাক্রমশীল স্রষ্টাকে।
সৃষ্টিকর্তাকে খুঁজতে খুঁজতে একসময় আবিষ্কার করেন, নিজের মধ্যেই তাঁর বাস। তাঁর যে পিয়ারীকে সবাই হাসনজান বলে জানে, সে-ই আসলে হাসন রাজা। জগতের মানুষের কাছে যিনি রাজা বলে চিহ্নিত ছিলেন, হাসন রাজার কাছে সে কেউ নয়। বরং পিয়ারী হাসনজানের ভেতরেই প্রকৃত হাসন রাজা বিরাজমান ছিলেন।