ম্যাডোনার যত প্রেম

ম্যাডোনার প্রেমের চিঠি প্রকাশ পেয়ে গেছে বলে চারদিকে হইচই পড়ে গেছে। অবশ্য সেটাকে প্রেমপত্র না বলে বিচ্ছেদপত্র বললে হয়তো বেশি মানায়। ১৯৯৫ সালে প্রয়াত গায়ক টুপ্যাক শাকুর প্রিয়তমা ম্যাডোনাকে লিখেছিলেন সেই চিঠি। একজন শ্বেতাঙ্গ নারীর সঙ্গে প্রেম করাটা কৃষ্ণাঙ্গ শাকুরের কাছে নীতিবিরোধী মনে হয়েছিল। মনে হয়েছিল, শাকুর তাঁর ভক্তদের ধোঁকা দিচ্ছেন। তাই বিচ্ছেদ চেয়ে প্রেমিকাকে সেই চিঠি দিয়েছিলেন, ‘তুমি হয়তো একজন কৃষ্ণাঙ্গ শিল্পীর সঙ্গে প্রেম করে অনেক সম্মান অর্জন করতে পারবে। কিন্তু আমি শ্বেতাঙ্গ কারও সঙ্গে প্রেম করলে এটা আমার ভক্তরা ভালোভাবে নেবেন না।’

ম্যাডোনার একসময়ের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ডারলেন লুৎজ ম্যাডোনার এই চিঠিসহ আরও কিছু ব্যক্তিগত জিনিস গত বছর নিলামে তুললে পপসম্রাজ্ঞী তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেন। অভিযোগ, ম্যাডোনার অজান্তে নিলামের আয়োজন করা হয়েছে। সম্প্রতি এই মামলায় হেরে যান শাকুরের সাবেক প্রেমিকা। সে যাহোক, কিন্তু টুপ্যাক শাকুরই শুধু ম্যাডোনার প্রেমিক ছিলেন না। ম্যাডোনার সঙ্গীর তালিকাটা বেশ বড়।

১৯৭৭ সালে ক্যারিয়ার শুরু করেন মার্কিন পপসম্রাজ্ঞী। দুই বছর পরেই শোনা যায় ড্যান গিলোরির সঙ্গে প্রেম চলছে তাঁর। গিলোরি থেকে এবার গুনতে থাকুন ম্যাডোনার প্রেমিকের সংখ্যা।

ড্যান গিলোরি
সত্তরের দশকে গঠিত পপ ব্যান্ড ‘দ্য ব্রেকফাস্ট ক্লাব’-এর সদস্য ছিলেন ম্যাডোনা ও ড্যান গিলোরি। গিলোরিও গান গাইতেন। দুজনের প্রেম টিকেছিল ১৯৭৯-৮১ সাল পর্যন্ত।

জিন-মিশেল বাসকুয়েট
মার্কিন গ্রাফিতি শিল্পী জিন-মিশেল বাসকুয়েটের প্রেমে পড়েছিলেন ম্যাডোনা। সময়টা ১৯৮২ সাল। খুব বেশি দিন টেকেনি তাঁদের প্রেম। সে বছর ম্যাডোনা তাঁর প্রথম একক গান প্রকাশ করে প্রথম একক অ্যালবাম প্রকাশের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। প্রেমকে সময় দেওয়ার সময় কোথায়! জিন অতিরিক্ত মাদকাসক্তির কারণে ১৯৮৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

জন এফ কেনেডি জুনিয়র
প্রয়াত মার্কিন রাষ্ট্রপতি জন এফ কেনেডির ছেলে জন এফ কেনেডি জুনিয়রের সঙ্গে ১৯৮৭ সালে কিছুদিন প্রেমে মজে ছিলেন ম্যাডোনা। কিন্তু কেনেডি জুনিয়রের মা এই সম্পর্কের বিরুদ্ধে ছিলেন। ১৯৯৯ সালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন কেনেডি জুনিয়র।

মাইকেল জ্যাকসন
একজন পপ সাম্রাজ্যের সম্রাট। আরেকজন সম্রাজ্ঞী। দুজনের এক হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু ছিল না। নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে একসঙ্গে কাজ করেছেন দুজনে। ‘আমি তাঁকে পাগলের মতো ভালবাসতাম’, নিজেই স্বীকার করেছিলেন ম্যাডোনা। কিন্তু প্রয়াত মাইকেল জ্যাকসন হয়তো শুধু বন্ধু হিসেবেই ভালোবেসেছিলেন তাঁকে।

ভ্যানিলা আইস
১৯৯২ সালে কিছুদিন অভিসারে মেতে ছিলেন ম্যাডোনা ও মার্কিন র‍্যাপার ভ্যানিলা আইস।

জন বেনিটেজ
মার্কিন ডিজে জন ‘জেলিবিন’ বেনিটেজের সঙ্গে ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত তুঙ্গে ছিল ম্যাডোনার প্রণয়। ম্যাডোনার প্রথম অ্যালবামে কাজও করেছেন জন।

শন পেন
ম্যাডোনার জীবনে এল এক প্রেমের তারকা, শন পেন। ১৯৮৫ সাল। তখন সবচেয়ে আলোচিত ছিলেন পপসম্রাজ্ঞী আর এই হলিউড তারকার প্রেম। বিয়েও করে ফেললেন হুট করে। কিন্তু বাঁধনটা ছিঁড়েই গেল। ১৯৮৯ সালে বিচ্ছেদ হয় তাঁদের। শন পেনের অভিযোগ ছিল, তাঁদের মধ্যে চার বছরের দাম্পত্য জীবনে কোনো কথা হয়নি, হয়েছে কেবল ঝগড়া। অপরদিকে ম্যাডোনার অভিযোগ ছিল, শন পেন তাঁকে মারধর করতেন।

ওয়ারেন বেটি
তখন হলিউড তারকা ওয়ারেন বেটি ছিলেন এককথায় নারীদের ‘হার্টথ্রব’। ম্যাডোনা তাঁর সঙ্গে অভিনয় করলেন ডিক ট্রেসি ছবিতে। ১৯৮৯-৯০ সাল পর্যন্ত ম্যাডোনাও বেটির প্রেমে মুগ্ধ ছিলেন।

টনি ওয়ার্ড 
১৯৯১ সালে স্বল্প সময়ের জন্য ম্যাডোনার প্রেমনিবাসের বাসিন্দা ছিলেন মডেল টনি ওয়ার্ড। ম্যাডোনার ‘জাস্টিফাই মি’ মিউজিক ভিডিওতে কাজ করেছিলেন টনি।

কারলোস লিওন 
১৯৯৪ সাল থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত ম্যাডোনার সঙ্গী ছিলেন অভিনেতা কারলোস লিওন। ১৯৯৫ সালে কারলোস লিওন ও ম্যাডোনার মেয়ে লৌর্ডস লিওনের জন্ম হয়।

অ্যান্ডি বার্ড 
ব্রিটিশ চলচ্চিত্র প্রযোজক অ্যান্ডি বার্ডের সঙ্গে ১৯৯৭-৯৮ সালে ম্যাডোনার প্রেমের কথা শোনা যায়।

গাই রিচি
সম্ভবত ম্যাডোনার জীবনে সবচেয়ে বেশি দিন রাজত্ব করেছেন চলচ্চিত্রনির্মাতা গাই রিচি। ১৯৯৮ সাল থেকে সম্পর্ক, বিয়ে হয় ২০০০ সালে। বিয়ে টিকেছিল ২০০৮ সাল পর্যন্ত।

জিসাস লুজ
২০০৯ সালে ম্যাডোনা দেখা পান ব্রাজিলিয়ান মডেল জিসাস লুজের। তখন ম্যাডোনা ৫০ আর লুজ ২২। প্রেম কি মানে বাধা? তবে ২০১০ সালে সেই প্রেমের সমাপ্তি ঘটে।

ব্রাহিম জাইবাত
ফরাসি নৃত্য পরিচালক ব্রাহিম জাইবাতের সঙ্গে ম্যাডোনার প্রেম শুরু হয় ২০১০ সালে। সেই প্রেমের গাড়ি চলে ২০১৩ সাল পর্যন্ত।

কেভিন স্যামপায়ো 
আন্তর্জাতিক মডেল কেভিন স্যামপায়ো। ক্যারিয়ারের শীর্ষে এখন তাঁর অবস্থান। গত বছর থেকেই শোনা যাচ্ছে, এই আকর্ষণীয় মডেলের জন্য আবুবকরের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেছেন ম্যাডোনা। কেভিনেই আপাতত আটকে আছেন ষাট ছুঁই ছুঁই ম্যাডোনা।

সৈয়দা সাদিয়া শাহরীন, ডেইলি মেইল, এমটিভি, র‍্যাংকার, গালফ নিউজ, ইউএস উইকলি ও দ্য সান অবলম্বনে