পরিচালকের জন্য কাঁদল দর্শক

লালগালিচায় নির্মাতা কিরিল সেরেব্রেন্নিকভের নামের প্ল্যাকার্ড হাতে ‘লেটো’ ছবির শিল্পী তেও ইয়ো, ইরিনা স্তারসেনবাওম, রোমা জের ও প্রযোজক শার্মে-ইভার চেকারফ। ছবি: এএফপি
লালগালিচায় নির্মাতা কিরিল সেরেব্রেন্নিকভের নামের প্ল্যাকার্ড হাতে ‘লেটো’ ছবির শিল্পী তেও ইয়ো, ইরিনা স্তারসেনবাওম, রোমা জের ও প্রযোজক শার্মে-ইভার চেকারফ। ছবি: এএফপি

কান চলচ্চিত্র উৎসব এক আবেগী রাতের সাক্ষী হলো গতকাল। ‘লেটো’ ছবির প্রদর্শনীর পর কাঁদল সবাই। তবে ছবির গল্প হৃদয়ছোঁয়া, শুধু সে কারণে নয়। দর্শক কাঁদলেন এর পরিচালক কিরিল সেরেব্রেন্নিকভের জন্য। গত ২২ আগস্ট থেকে নিজ দেশ রাশিয়ায় গৃহবন্দী তিনি। সবার চোখে ছিল অশ্রু আর বুকে কিরিলের ছবিওয়ালা ব্যাজ।

কিরিলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছে রুশ সরকার। তাঁদের ভাষ্যমতে, কিরিল সরকারি কোষাগারের প্রায় ৬৮ মিলিয়ন রুবল বেআইনিভাবে একটি অলাভজনক মঞ্চ প্রযোজনার পেছনে ব্যয় করেছেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে রাশিয়ার আদালত তাঁকে সাজা দেন। তাই কিরিল অংশ নিতে পারেননি ৭১তম কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে।

তবে কিরিলের অনুপস্থিতি তাঁকে আরও বেশি আলোচিত করে তুলেছে এ আসরে। গতকাল বুধবার কান চলচ্চিত্র উৎসবের দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যায় ‘লেটো’ (সামার) ছবির উদ্বোধনী প্রদর্শনীতে কিরিল সেরেব্রেন্নিকভ না থেকেও ছিলেন আয়োজনজুড়ে। লালগালিচায় তাঁর নাম লেখা বিশাল প্ল্যাকার্ড নিয়ে হাঁটেন ছবির শিল্পীরা। এমন উৎসব প্রধান থিয়েরি ফ্রেমোকেও দেখা যায় কিরিলের নাম লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে। লালগালিচায় দেখা যায় কিরিলের ছবি–সংবলিত ব্যাজ জায়গা করে নিয়েছে অনেকের পোশাকে। এমনকি লালগালিচার বাইরে শুধু তারকা দেখতে আসা সাধারণ দর্শকদের মধ্যেও অনেকের গায়ে দেখা যায় কিরিল সেরেব্রেন্নিকভের নাম লেখা টি-শার্ট।

ধারণা করা হয়ে থাকে, পুতিন সরকারবিরোধী হওয়ায় এবং মূলধারার বিপরীতে গিয়ে রাশিয়ার মঞ্চে সমকামিতার মতো সংবেদনশীল বিষয়কে নাটকের বিষয়বস্তু হিসেবে তুলে আনায় কিরিলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে তাঁকে গৃহবন্দী করা হয়েছে। আজ সকালে অনুষ্ঠিত ‘লেটো’ ছবির সংবাদ সম্মেলনেও এ ধারণা অস্পষ্টভাবে দিলেন ছবির শিল্পী, চিত্রগ্রাহক ও প্রযোজকেরা।

গতকাল রাতে যখন ‘লেটো’ ছবির উদ্বোধনী।শেষ হয়, তখন দর্শক দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানান ছবির শিল্পী ও কুশলীদের। অনেকে কিরিলের নাম নিয়ে উচ্চ স্বরে চিৎকার করতে থাকে। অন্যদিকে ছবির শিল্পীর ইরিনা স্ত্যাশনবমের মুখে আনন্দের হাসি এবং কিরিলের না থাকার কষ্টের অশ্রু মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। কাঁদেন ছবির অন্য শিল্পী, কুশলী, দর্শকদের অনেকে। প্রদর্শনীতে কিরিলের জন্য বরাদ্দ রাখা খালি আসনের পাশে দাঁড়িয়ে চোখে অশ্রু নিয়ে করতালিতে তাঁকে সম্মান জানান ছবি দেখতে আসা দর্শকেরা।