সিনেমা দেখার বাধাধরা নিয়ম নেই

‘লু সিনেমা দু লা প্লাজ’–এ ব্ল্যাক প্যান্থার ছবি দেখার অপেক্ষায় দর্শকেরা
‘লু সিনেমা দু লা প্লাজ’–এ ব্ল্যাক প্যান্থার ছবি দেখার অপেক্ষায় দর্শকেরা

কান চলচ্চিত্র উৎসবের প্রাণ বলতে আমরা বুঝি প্রতিযোগিতা বিভাগের জন্য নির্বাচিত হাতে গোনা কয়েকটি ছবিকে। কিন্তু এর বাইরেও এই উৎসব যে কতভাবে একটা শহরকে প্রাণবন্ত করে, তা শুধু মূল ভবন পালে দো ফেস্তিভালের ভেতর থেকে আঁচ করা যাবে না। বেরোতে হবে রাস্তায়, হাঁটতে হবে কান শহরের অলিতে-গলিতে, সৈকতে।

সমুদ্রসৈকতের ধারে বুলভা দু লা কোয়াজেত রাস্তায় গত বুধবার এক ভিন্ন উৎসবের দেখা মেলে। ‘লু সিনেমা দু লা প্লাজ’ নামের এই আয়োজন শুধুই সিনেমাপ্রেমীদের জন্য। এখানে কোনো ব্যাজ, আমন্ত্রণপত্র কিংবা টিকিটের বালাই নেই। সবার জন্য উন্মুক্ত কানের এই আয়োজন।

কোলের ছোট্ট শিশু থেকে শুরু করে বড় বড় তারকাও এতে শামিল হতে পারেন লাইনে দাঁড়িয়ে। যাঁরা আগে দাঁড়াবেন, তাঁরা পাবেন আরামকেদারায় গা এলিয়ে সিনেমা দেখার সুযোগ। অন্যদের বসতে হবে সৈকতের ঠান্ডা বালুতে। তবে তাতেও আনন্দ এতটুকু কমে না। অনেকে বালুর ওপর চাদর-বালিশ বিছিয়ে দেন।

সিনেমা দেখার কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই এখানে। কেউ গায়ে কম্বল জড়িয়ে প্রিয়তমকে নিয়ে দেখছেন সিনেমা, কেউ আবার সিনেমার আবহসংগীত আর সমুদ্রের গর্জন মিলিয়ে বালুর ওপর খালি পায়ে নেচে যাচ্ছেন। মোট কথা, এই আয়োজনে ছবির চেয়ে এর দর্শক এক অদ্ভুত প্রভাব ফেলে যান মনে।

বুধবার রাতে কানের এই আয়োজনে দেখানো হয় ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ ছবিটি। প্রদর্শনীতে ছিলেন নির্মাতা রায়ান কুগলারও। এমন ভিন্নধর্মী আয়োজন দেখে দারুণ উচ্ছ্বসিত তিনি। প্রদর্শনী শুরুর আগে বললেন, ‘আমার ছবি দেখানোর জন্য এর চেয়ে ভালো পরিবেশ আর হতে পারে না।’

এই আয়োজনে প্রতি রাতেই কোনো না কোনো ছবির প্রদর্শনী হয়। বিশেষ করে কান ক্ল্যাসিকস বিভাগের ছবিগুলো সাগরপাড়ের বালুর ওপর গা এলিয়ে দেখা যায়। কান উৎসবটা যে সবার, এটা শুধু এখানে এলেই বোঝা সম্ভব, আর কোথাও না।