শর্টফিল্ম কর্নারে বাংলাদেশের চার চলচ্চিত্র

কান চলচ্চিত্র উৎসবে শর্টফিল্ম কর্নারের তিন নির্মাতা জসীম আহমেদ, ইকবাল হোসাইন চৌধুরী ও নোমান রবিন
কান চলচ্চিত্র উৎসবে শর্টফিল্ম কর্নারের তিন নির্মাতা জসীম আহমেদ, ইকবাল হোসাইন চৌধুরী ও নোমান রবিন

কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের আনুষ্ঠানিক কোনো বিভাগে নেই বাংলাদেশের ছবি। তবে মার্শে দ্যু ফিল্ম (ছবিবাজার) আর শর্টফিল্ম কর্নারে বাংলাদেশের নির্মাতা ও চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বদের উপস্থিতি নতুন কিছুর আশা জোগাচ্ছে। ১৪ মে থেকে কানের পালে দো ফেস্তিভালের নিচতলায় শুরু হয়েছে শর্টফিল্ম কর্নারের আয়োজন। সেখানে গিয়ে মিডিয়া লাইব্রেরিতে ঢুকে খুঁজলেই দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশি নির্মাতাদের সিনেমা।

১৪ মে বিকেলেই বাংলাদেশের স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবিগুলো দেখতে শর্টফিল্ম কর্নারের মিডিয়া লাইব্রেরিতে গিয়েছিলাম। লাইব্রেরির একটি বুথে ব্যাজ নম্বর দিয়ে শর্টফিল্ম কর্নারের সাইটে বাংলাদেশ লিখে খোঁজ করতেই চারটি ছবির নাম ভেসে ওঠে পর্দায়। এগুলো হলো-নোমান রবিনের ‘আ কোয়ার্টার মাইল কান্ট্রি’, জসীম আহমেদের ‘আ পেয়ার অব স্যান্ডেল’, ইকবাল হোসাইন চৌধুরীর ‘রোয়াই’ ও মনজুরুল আলমের ‘মেঘে ঢাকা: লাইফ উইদাউট সান’।

মনজুরুল আলমের ছবিটি বাদে বাকি তিনটির বিষয়বস্তুই চলমান রোহিঙ্গা সংকট। কেউ এই সংকটের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন পর্দায়, কেউ আবার কাল্পনিক চরিত্রের ওপর ভিত্তি করে রোহিঙ্গা সংকটের নানা দিকে আলো ফেলেছেন। এর আগেও এই তিন নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবি কানের শর্টফিল্ম কর্নারে স্থান করে নিয়েছিল।

শর্টফিল্ম কর্নারে থাকা স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবিগুলোর মধ্যে ইকবাল হোসাইন চৌধুরীর ‘রোয়াই’ ছবিটিরই আলাদা করে বড় পর্দায় প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। গত বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় পালে দো ফেস্তিভালের পালে জিতে হয় ছবির প্রদর্শনী। এ প্রদর্শনীতে উপস্থিত ছিলেন ছবির পরিচালক ইকবাল হোসাইন চৌধুরী, জসীম আহমেদ ও নোমান রবিন, মার্শে দ্যু ফিল্মে অংশ নেওয়া নির্মাতা সামিয়া জামান, অ্যাডাম দৌলা, বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মী ও বাংলাদেশের আরও বেশ কয়েকজন। এই প্রদর্শনীর বাহানায় কান উৎসবের বিভিন্ন অংশে অংশ নেওয়া বাংলাদেশিদের একটা ছোট মিলনমেলাও হয়ে যায়।

অন্যদিকে বাংলাদেশের আরও দুই নবীন নির্মাতা এ বছর তাঁদের কাজের জন্য নয়, বরং নিজেদের অভিজ্ঞতার ঝুলি আরেকটু ভারী করতে এসেছিলেন কানে। তরুণ এই দুই নির্মাতার নাম সুমন দেলোয়ার ও রেজওয়ান শাহরিয়ার। ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশের (আইএফআইবি) সহযোগিতায় এ দুই নির্মাতা তিন দিনের একটি কর্মশালায় অংশ নেন। গ্লোবাল ফিল্ম এক্সপ্রেশন প্রকল্পের আওতায় ইন্টারন্যাশনাল ইমার্জিং ফিল্ম ট্যালেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইইএফটিএ) বিশ্বের ৫টি দেশের ১০ জন নির্মাতাকে নিয়ে কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রডিউসারস ওয়ার্কশপের আয়োজন করে। বাংলাদেশের দুই তরুণ নির্মাতাকে আইইএফটিএর এই আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত করেছে আইএফআইবি তাদের ‘ঢাকা টু কান’ প্রকল্পের মাধ্যমে। এ ছাড়া মার্শে দ্যু ফিল্মে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রযোজক, পরিবেশকের সঙ্গে নিজেদের নির্মিতব্য ও নির্মাণাধীন চলচ্চিত্রগুলোও উপস্থাপন করেছেন সুমন ও রেজওয়ান।

মোটকথা, আনুষ্ঠানিক বিভাগে না হলেও বাংলাদেশিরা নানাভাবে জানান দেওয়ার চেষ্টা করছেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় চলচ্চিত্র আসরেও বাংলাদেশ চেষ্টা করছে একটু একটু করে এগিয়ে যেতে। আপাতত কানের ফিল্ম মার্কেট দিয়েই না হয় শুরুটা হোক।