অসুস্থ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের খোঁজ নিতে বাসায় সরকারি চিকিৎসক দল

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। ছবি: প্রথম আলো
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। ছবি: প্রথম আলো

অসুস্থ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে ঢাকায় তাঁর আফতাবনগরের বাসায় যান সরকারি একটি চিকিৎসক দল। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁরা সেখানে যান। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক চিকিৎসক জুলফিকার লেনিনের নেতৃত্বে এ সময় তিন সদস্যের একটি দল আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। প্রথম আলোকে আজ শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল।

এর আগে বুধবার রাতে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ প্রথম আলোকে জানান, মুক্তিযোদ্ধা, গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরকারের এই চিকিৎসকেরা সর্বশেষ খোঁজখবর নিতে তাঁর বাসায় যান।

আজ বিকেলে জুনাইদ আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ভাই যেখানে চিকিৎসাসেবা নিতে চান, সেখানেই করা হবে। সেভাবেই সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

শারীরিকভাবে অসুস্থতা অনুভব করলে ১০ মে ঢাকার ইব্রাহীম কার্ডিয়াক হাসপাতালে ভর্তি হন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। চার দিন করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাসেবা নেন। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা শেষে জানা যায়, তাঁর হার্টে আটটি ব্লক ধরা পড়েছে, এর মধ্যে দুটি মেজর। ইব্রাহীম কার্ডিয়াক হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও অধ্যাপক লিয়াকত আলী তাঁর চিকিৎসার তত্ত্বাবধানে ছিলেন।

বাবার শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে একমাত্র ছেলে সামির আহমেদ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে বাবার চিকিৎসাসেবা ও এর যাবতীয় নিজ দায়িত্বে নিয়েছেন। সন্তান হিসেবে এখন শুধু বাবার সুচিকিৎসা চাইছি। দেশবাসী সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন, তিনি যেন সুস্থ হয়ে আবার আগের মতো গানে ব্যস্ত হন।’

হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরে গত বুধবার ফেসবুকে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল লেখেন, ‘আমি এখন ২৪ ঘণ্টা পুলিশি পাহারায় গৃহবন্দী থাকি, একমাত্র সন্তানকে নিয়ে। এ এক অভূতপূর্ব করুণ অধ্যায়।’ গৃহবন্দী থাকার কারণ হিসেবে তিনি লিখেছেন, ‘বন্ধুরা, সরকারের নির্দেশে ২০১২ সালে আমাকে যুদ্ধাপরাধীর ট্রাইব্যুনালের কাঠগড়ায় সাক্ষী হিসেবে দাঁড়াতে হয়েছিল। সাহসিকতার সঙ্গে সাক্ষ্য-প্রমাণ দিতে হয়েছিল ১৯৭১ সালে ঘটে যাওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলখানার গণহত্যার সম্পূর্ণ ইতিহাস। ওই গণহত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া পাঁচজনের মধ্যে আমি একজন। হত্যা করা হয়েছিল একসঙ্গে ৪৯ জন মুক্তিযোদ্ধাকে। কিন্তু এই সাক্ষ্য দেওয়ার কারণে আমার নিরপরাধ ছোট ভাই মিরাজকে হত্যা করা হবে, তা কখনো বিশ্বাস করতে পারিনি। সরকারের কাছে বিচার চেয়েছি, বিচার পাইনি।’