যৌন হয়রানির জন্য ক্ষমা চেয়েছেন মরগ্যান ফ্রিম্যান

মরগ্যান ফ্রিম্যান
মরগ্যান ফ্রিম্যান

যৌন হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হলিউড তারকা মরগ্যান ফ্রিম্যান। তবে ৮০ বছর বয়সী মরগ্যান এক বিবৃতিতে তাঁর কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবারের এই প্রতিবেদন আমার ৮০ বছরের জীবনকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছে। তবে একটা বিষয় স্পষ্ট করে দিতে চাই, আমি কোথাও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করিনি, কোনো নারীকে যৌন হেনস্তা করিনি, এমনকি যৌনতার বিনিময়ে কারও কর্মসংস্থান করিনি। আমার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘আমার আচরণে কেউ অসম্মানিত হলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’

এর আগে আরেক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘যাঁরা আমার সঙ্গে অতীতে কাজ করেছেন, তাঁরা নিশ্চয়ই জানেন যে আমি জেনেশুনে কাউকে আঘাত কিংবা অস্বস্তিতে ফেলতে চাই না। এরপরও আমি যদি কাউকে অসম্মান করে থাকি বা অস্বস্তিতে ফেলে থাকি, তাহলে এর জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করছি। এমনটা আমি ইচ্ছা করে করিনি।’

সম্প্রতি সিএনএনের করা একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে হলিউডের এই প্রবীণ অভিনেতার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করা হয়। গত বৃহস্পতিবার সিএনএন একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, অন্তত আটজন নারীকে বিভিন্ন সময় মরগ্যান জনসমক্ষে হয়রানি করেছেন। তিনি নানা সময়ে কর্মক্ষেত্রের নারী কর্মীদের সঙ্গে যৌন উসকানিমূলক আলাপ করতেন। তাঁদের পোশাক ও দেহগড়ন নিয়ে মন্তব্য করতেন।

২০১২ সালে ‘নাউ ইউ সি মি’ ছবির শুটিং সেটের একজন জ্যেষ্ঠ প্রডাকশন কর্মী বলেন, ‘তিনি (মরগ্যান ফ্রিম্যান) আমাদের শরীর নিয়ে মন্তব্য করতেন।’ মরগ্যান যেদিন সেটে আসতেন, সেদিন খুব সতর্কতার সঙ্গে তাঁদের পোশাক বেছে নিতে হতো।

হলিউড প্রযোজক হার্ভি ওয়াইনস্টিনের পর মরগ্যানকে ঘিরে এ অভিযোগ হতে যাচ্ছে হলিউডের নতুন আলোচ্য বিষয়। সিএনএনের প্রতিবেদনে মরগ্যান ফ্রিম্যানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের এক কর্মীও বলেছেন, ‘#মি টু ক্যাম্পেইন শুরু হওয়ার পর থেকেই আমরা অপেক্ষায় ছিলাম, যেকোনো দিন মরগ্যানেরও সব গুমর ফাঁস হতে যাচ্ছে।’

অস্কারজয়ী এ অভিনেতার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ করেছেন এক তরুণ প্রযোজনা সহকারী। তিনি ২০১৬ সালের ‘গোয়িং ইন স্টাইল’ ছবিতে কাজ করেছেন। নাম গোপন করে সেই সহকারী বলেন, ‘প্রায় প্রতিদিনই মরগ্যান পোশাক নিয়ে মন্তব্য করতেন। আমার স্কার্ট ওপরের দিকে তুলে আমাকে স্পর্শ করতে চাইতেন। জানতে চাইতেন আমি অন্তর্বাস পরেছি কি না।’ এত দিন চাকরি হারানোর ভয়ে মুখ খোলেননি সেই সহকারী। তিনি অভিযোগ করেন, শুটিংয়ের কয়েক মাস তাঁকে প্রতিদিনই মরগ্যান নানাভাবে স্পর্শ করতেন। শটের পর বিশ্রামের সময় তাঁর সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি নারী সহকারীটির কোমরের নিচে হাত রাখতেন। চেষ্টা করতেন স্কার্টের ভেতর হাত দেওয়ার। সহকারীর ভাষ্যমতে, এর প্রতিবাদ করেছিলেন সহ-অভিনেতা অ্যালেন আরকিন। কিন্তু এতে রাগে ফুঁসে ওঠেন মরগ্যান এবং শুটিং সেটে অনেক চেঁচামেচি করেন।

সিএনএন মোট ১৬ জনের সঙ্গে কথা বলেছে। এর মধ্যে আটজন ফ্রিম্যান দ্বারা হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। বাকি আটজন সাক্ষী হিসেবে মন্তব্য দিয়েছেন। মরগ্যানের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান রেভেলেশনস এন্টারটেইনমেন্টের চার কর্মী জানিয়েছেন, কর্মস্থলে তাঁর আচরণগত সমস্যা ছিল। জনসমক্ষে তিনি নারীদের নিয়ে এমন কিছু বলতেন, যা খুব অসম্মানজনক।